আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদনের কড়া প্রতিবাদ জানাল বিজিবি

বণিক বার্তা অনলাইন

কলকাতার ‘আনন্দবাজার পত্রিকা’য় প্রকাশিত ‘অরক্ষিত জমিতে পা পড়েছে বাংলাদেশির’ শিরোনামে প্রকাশিত খবরের কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

আজ শুক্রবার (১০ জুলাই) বিজিবি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ৭ জুলাই ‘আনন্দবাজার পত্রিকা’র ওই প্রতিবেদনটি ছিল ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো শরিফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তি বলা হয়েছে, ‘মূলত মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় বিএসএফের সঙ্গে জনগণের বৈরী সম্পর্ক, স্থানীয় গরু চোরাকারবারিদের এই মৌসুমে কোনো কাজ করতে না পারা, মাছ ধরার সময় বিএসএফের স্থানীয় জেলেদের থেকে চাঁদা আদায় এবং সর্বোপরি স্থানীয় বিএসএফ ব্যাটালিয়নের ব্যর্থতাকে ঢাকতে ভারতীয় গণমাধ্যমে এমন খবর ছাপা হয়েছে।’

বিজিবি বলছে, পত্রিকায় ঘটনাস্থল রানীনগর সীমান্তের কথা বলা হয়েছে। এলাকাটি রাজশাহী বিজিবির দায়িত্বপূর্ণ এলাকা । এটি চারঘাট বিওপি থেকে শুরু করে তালাইমারি বিওপি পর্যন্ত বিস্তৃত। এখানে পদ্মা নদী বরাবর শূন্য লাইন অতিক্রম করেছে। এর দুদিকে বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল।

গত ৭ জুলাই প্রকাশিত আনন্দবাজার পত্রিকার ওই প্রতিবেদনে স্থানীয় বাসিন্দাদের বরাত দিয়ে বলা হয়, সীমান্তে রানিনগর ১ এবং ২ ব্লক ও জলঙ্গি জুড়ে প্রায় ২২ হাজার একর জমি ওই অরক্ষিত জমি এখন বাংলাদেশিদের।

বিজিবি বলছে, বাস্তব চিত্র সম্পূর্ণ আলাদা। ভারতের অভ্যন্তরে গিয়ে চাষাবাদ করা তো দূরের কথা, বর্তমানে আন্তর্জাতিক সীমারেখা বরাবর চাষাবাদ করাই অসম্ভব একটি ব্যাপার। কারণ ওই এলাকায় শূন্যরেখা বরাবর বিজিবির সদস্যরা রাত দিন টহল দিয়ে সীমান্ত রক্ষা করছেন।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘দিন কয়েক আগে দু’জন বাংলাদেশি সীমান্ত পেরিয়ে ভারতীয় এলাকায় চলে আসায় তাদের আটক করেছিল বিএসএফ। ঘণ্টা কয়েকের মধ্যেই তাদের ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে মুক্তিপণ হিসেবে রানিনগর সীমান্তের গ্রাম থেকে দুই গ্রামবাসীকে তুলে নিয়ে যায় বাংলাদেশি দুষ্কৃতীরা।’

বিজিবি বলছে, 

আদতে ঘটনা সম্পূর্ণ উল্টো এবং প্রকাশিত সংবাদটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। গত ২ জুলাই জলঙ্গি সীমান্তে দুটি ঘটনা ঘটে, যা পত্রিকার মূল বক্তব্যের সম্পূর্ণ বিপরীত।

ঘটনার বর্ণনায় বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ২ জুলাই রাত সাড়ে ১১টার দিকে নয়ন শেখ ও শহিদুল শেখ নামের দুই ব্যক্তি জলঙ্গিনিবাসী ভারতীয় চোরাকারবারি অবৈধভাবে জলঙ্গি সীমান্ত দিয়ে আন্তর্জাতিক সীমারেখা অতিক্রম করে বাংলাদেশে ঢুকে যান। বাংলাদেশের ভেতরে ইউসুফপুর গ্রামে মাদক ব্যবসা এবং অর্থ লেনদেনকে কেন্দ্র করে তারা স্থানীয় লোকজনের ওপর চড়াও হন। স্থানীয় লোকজন ব্যাপারটি সহজভাবে না নিয়ে তাদের ঘেরাও করে ফেলেন। পরে ইউসুফপুর বিজিবি ক্যাম্প খবর পেয়ে নিরাপত্তার কথা ভেবে তাদের দুজনকে হেফাজতে নেয়।

বিজিবি বলছে, অন্যদিকে একই দিন ১২টায় বিএসএফ টহল দল অবৈধভাবে আন্তর্জাতিক সীমারেখা অতিক্রম করে ৩০০ মিটার বাংলাদেশের ভেতরে (পিলার ৭২/৪-এস বরাবর) ঢুকে ইউসুফপুর এলাকা থেকে তিনজন নিরীহ ও নিরপরাধ কৃষককে ধরে নিয়ে যায় । ওই কৃষকেরা চর এলাকায় শুধু চাষাবাদ করে বাড়ি ফিরছিলেন। দুটি ঘটনার জের ধরে একই দিনে বিজিবি-বিএসএফ পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।  ৩ জুলাই শান্তিপূর্ণভাবে দুই দেশের নাগরিক হস্তান্তর-গ্রহণের মাধ্যমে ব্যাপারটি সুষ্ঠুভাবে মীমাংসা হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন