কভিড-১৯-এর প্রভাবে ব্যবসায় মন্দা

বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দেয়নি বাটা শু

নিজস্ব প্রতিবেদক

কভিড-১৯-এর প্রভাবে দেশব্যাপী ব্যবসায় মন্দা হওয়ার কারণে সর্বশেষ সমাপ্ত হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য চূড়ান্ত লভ্যাংশ ঘোষণা করেনি বাটা শু কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড। সম্প্রতি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানটির পর্ষদ সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এর ফলে কোম্পানিটির বিনিয়োগকারীদের অন্তর্বর্তীকালীন লভ্যাংশ নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে।

বিনিয়োগকারীদের জন্য চূড়ান্ত লভ্যাংশ ঘোষণা না করার কারণ হিসেবে কোম্পানিটির কর্মকর্তারা বলছেন, দেশব্যাপী লকডাউনের কারণে প্রায় দুই মাস আউটলেট বন্ধ রাখতে হয়েছে। লকডাউন উঠিয়ে নেয়ার পর সীমিত পরিসরে বিকাল ৪টা পর্যন্ত আউটলেট খোলা রাখতে হয়েছে। কোম্পানির নগদ প্রবাহ বিনিয়োগকারীদের নগদ লভ্যাংশ দেয়ার জন্য অনুকূল নয়।

সর্বশেষ সমাপ্ত ২০১৯ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য কোনো চূড়ান্ত লভ্যাংশ না দিলেও আলোচ্য হিসাব বছরে ১২৫ শতাংশ অন্তর্বর্তীকালীন নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। ২০১৯ হিসাব বছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৩৬ টাকা ১১ পয়সা, এর আগের বছরে যা ছিল ৭২ টাকা ৭০ পয়সা। ওই বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৩৬৪ টাকা ৬৫ পয়সায়। আগামী ১০ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টায় বাটা শু কোম্পানির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। এজিএম ডিজিটাল মাধ্যমে নাকি সরাসরি অনুষ্ঠিত হবে, সেটি পরবর্তী সময়ে জানানো হবে। রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ২৯ জুলাই।

এর আগে ২০১৮ হিসাব বছরে কোম্পানিটির শেয়ারহোল্ডাররা ৩৪৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ পেয়েছিলেন। এছাড়া ২০১৪, ২০১৫, ২০১৬ ২০১৭ হিসাব বছরে কোম্পানিটি যথাক্রমে ২৮০, ৩২০, ৩৩০ ৩৩৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল।

এদিকে চলতি ২০২০ হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকের (জানুয়ারি-মার্চ) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, বাটা শু কোম্পানির বিক্রি হয়েছে ১৬৩ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। এর আগের বছরের একই সময়ে বিক্রি হয়েছিল ১৭৭ কোটি ১৭ লাখ টাকা। আর আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির করপরবর্তী মুনাফা হয়েছে কোটি ৮৩ লাখ টাকা। আগের বছরের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল কোটি ৪৭ লাখ টাকা। চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে টাকা পয়সা, এর আগের বছরের একই সময়ে যা ছিল টাকা ২৬ পয়সা। ৩১ মার্চ ২০২০ শেষে পরিচালন কার্যক্রম থেকে কোম্পানির নগদ অর্থপ্রবাহ ছিল ঋণাত্মক কোটি টাকা। অর্থাৎ সময়ে কোম্পানির আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি হয়েছে। চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট পরিচালন নগদ প্রবাহ (এনওসিএফএস) দাঁড়িয়েছে ঋণাত্মক  টাকা ৮৮ পয়সায়, আগের বছরের একই সময়ে যা ছিল টাকা পয়সা।

১৯৮৫ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বাটা শুর বর্তমানে অনুমোদিত মূলধন ২০ কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধন ১৩ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ৪৬১ কোটি টাকা। মোট শেয়ার সংখ্যা কোটি ৩৬ লাখ ৮০ হাজার। এর ৭০ শতাংশ উদ্যোক্তা-পরিচালক, ১৮ দশমিক ৯৭ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী, দশমিক ৯৪ শতাংশ বিদেশী বিনিয়োগকারী দশমিক শূন্য শতাংশ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল বাটা শুর শেয়ার সর্বশেষ ৬৯৩ টাকা ২০ পয়সায় লেনদেন হয়। গত এক বছরে শেয়ারটির সর্বনিম্ন সর্বোচ্চ দর ছিল যথাক্রমে ৬১৮ টাকা হাজার ৪৭ টাকা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন