২০১৯-২০ অর্থবছর

ভোমরা বন্দরে রাজস্ব ঘাটতি ৬০২ কোটি টাকা

বণিক বার্তা প্রতিনিধি সাতক্ষীরা

ভোমরা বন্দরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রাজস্ব ঘাটতি হয়েছে ২০১৯-২০ অর্থবছরে। সময়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বেঁধে দেয়া লক্ষ্যমাত্রার ৫০ শতাংশ আদায় করা সম্ভব হয়নি। সদ্য বিদায়ী অর্থবছরের জুলাই-জুন পর্যন্ত বন্দরটি রাজস্ব আদায় করেছে ৫৮৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকেরও কম। সব মিলিয়ে ভোমরা বন্দরে গত অর্থবছরে ৬০২ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব ঘাটতি হয়েছে।

বন্দরসংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিদায়ী অর্থবছরের প্রথমার্ধ পর্যন্ত আমদানি-রফতানি কিছুটা মন্দা ছিল। এরপর আসে করোনার ধাক্কা। সংকটের কারণে আড়াই মাস বন্দরের সব কার্যক্রম বন্ধ ছিল। ফলে সময়ে কোনো রাজস্বের দেখা মেলেনি। সব মিলিয়ে গেল অর্থবছর বিপুল অংকের রাজস্ব ঘাটতি পড়েছে।

ভোমরা স্থলবন্দরের রাজস্ব বিভাগ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরের জন্য ভোমরা বন্দরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় হাজার ১৮৬ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয়েছে ৫৮৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা।

এর মধ্যে জুলাইয়ে ৪৮ কোটি লাখ, আগস্টে ৫৪ কোটি ৫৮ লাখ, সেপ্টেম্বরে ৬৮ কোটি লাখ, অক্টোবরে ৫৭ কোটি ৪১ লাখ, নভেম্বরে ৮৫ কোটি ৯৮ লাখ, ডিসেম্বরে ৭২ কোটি ৪২ লাখ, জানুয়ারিতে ৬৯ কোটি ৯৮ লাখ, ফেব্রুয়ারিতে ৭১ কোটি লাখ এবং মার্চে আদায় হয়েছে ৫২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। এরপর করোনার জন্য ২৫ মার্চ থেকে একটানা ১৯ জুন পর্যন্ত ভোমরা বন্দর বন্ধ থাকে। ফলে ওই আড়াই মাসে কোনো রকম রাজস্ব আসেনি। এরপর গত ২০ জুন থেকে ভোমরা বন্দরের কার্যক্রম পুনরায় শুরু হয়। এতে ২০ জুন থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত রাজস্ব আদায় হয় কোটি ১২ লাখ টাকা।

ভোমরা স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ব্যবসায়ী অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান নাসিম জানান, গত দুই-তিন বছরের ব্যবধানে গেল অর্থবছর ভোমরা বন্দরে ব্যবসা-বাণিজ্যে মন্দা ভাব ছিল। তারপর অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধে এসে নভেল করোনাভাইরাসের কারণে একটানা প্রায় তিন মাস বন্দরের আমদানি-রফতানি কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকে। ফলে সরকারের রাজস্ব ঘাটতি হওয়াটা স্বাভাবিক।

ভোমরা শুল্ক স্টেশনের দায়িত্বরত কাস্টমসের বিভাগীয় সহকারী কমিশনার মো. রেজাউল করিম রাজস্ব ঘাটতির বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, গত অর্থবছরে ভোমরা বন্দরে পণ্য আমদানি-রফতানি কমে যাওয়ার পাশাপাশি করোনা সংকটের জন্য রাজস্বে এত বেশি ঘাটতি হয়েছে। তাছাড়া বন্দরে রাজস্ব কম-বেশি হয়ে থাকে মূলত পণ্য আমদানি-রফতানির ওপর নির্ভর করে।

উল্লেখ্য, গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে জুলাই-জুন পর্যন্ত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছে হাজার ১৮৬ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে মাসভিত্তিক লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় জুলাইয়ে ৭২ কোটি লাখ, আগস্টে ৯২ কোটি ৮৮ লাখ, সেপ্টেম্বরে ৬৭ কোটি ৭১ লাখ, অক্টোবরে ৯১ কোটি ৯৫ লাখ, নভেম্বরে ১২০ কোটি ৪৩ লাখ, ডিসেম্বরে ১১৪ কোটি ৫৮ লাখ, জানুয়ারিতে ১৩৩ কোটি ৮০ লাখ, ফেব্রুয়ারিতে ১৫১ কোটি ৮৬ লাখ, মার্চে ১৪২ কোটি ৭৩ লাখ, এপ্রিলে ৯৯ কোটি ৬৩ লাখ, মে মাসে ৫৬ কোটি ৪৯ লাখ এবং জুনে ৪২ কোটি ২৮ লাখ টাকা।  

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন