করোনায় মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘায়িত হয়েই চলেছে বাংলাদেশে। গতকালও সর্বশেষ বুলেটিনে ২৪ ঘণ্টায় দেশে অর্ধশতাধিক কভিড-১৯ আক্রান্তের মৃত্যুর কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। একই সঙ্গে দেশে এ সময় সংক্রমণ শনাক্তের সংখ্যাও ছিল তিন সহস্রাধিক।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ অনলাইন হেলথ বুলেটিনে জানানো হয়, দেশে গতকাল সকাল পর্যন্ত নভেল করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৫৫ জনের। এ নিয়ে দেশে কভিড-১৯-এ আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৫১-তে।
বুলেটিনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, গতকাল সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে ৩ হাজার ২৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত শনাক্তকৃত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৬৮ হাজার ৬৪৫।
অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, এখন পর্যন্ত করোনায় মৃত ২ হাজার ১৫১ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগের বাসিন্দাই সবচেয়ে বেশি, ৫১ দশমিক ৩৩ শতাংশ। মোট মৃত রোগীর ১ হাজার ১০৪ জনই ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন জেলার বাসিন্দা ছিলেন। এর পরের অবস্থানে রয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগ। দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতদের মধ্যে ২৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন জেলার বাসিন্দা।
বিভাগটিতে এখন পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৫৫৭ জনের। এছাড়া মোট মৃত করোনা রোগীর মধ্যে রাজশাহী বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন ৪ দশমিক ৯৭ শতাংশ, খুলনার ৪ দশমিক ৫১, বরিশালের ৩ দশমিক ৬৩, সিলেটের ৪ দশমিক ২৩, রংপুরের ৩ দশমিক শূন্য ২ ও ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন ২ দশমিক ৪২ শতাংশ।
শুরু থেকেই দেশে কভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের হটস্পট রাজধানী ঢাকা। পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরেও শুরুর দিকে সংক্রমণ শনাক্তের সংখ্যা ছিল অনেক বেশি। পরবর্তী সময়ে চট্টগ্রামেও ব্যাপক মাত্রায় করোনা সংক্রমণ শনাক্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়তে থাকে। সংক্রমণ শনাক্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ছে দেশের অন্যান্য বিভাগের জেলাগুলোয়ও।
বুলেটিনে আরো জানানো হয়, গতকাল সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৯৫৩ জন করোনা আক্রান্ত রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন। সব মিলিয়ে দেশে সুস্থ হওয়া করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৮ হাজার ১০২।
বুলেটিনে করোনার ঝুঁকি এড়াতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও স্বাস্থ্যবিধি মানতে সবাইকে অনুরোধ জানান অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা। এ সময় তিনি আরো বলেন, কারো মধ্যে উপসর্গ দেখা দিলে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে পরীক্ষা সম্পন্ন করতে হবে। দেশে বর্তমানে ৭৪টি ল্যাবে করোনা পরীক্ষা হচ্ছে।
এ সময় সবাইকে শিশুর নিয়মিত টিকা নিশ্চিত করতে কেন্দ্রে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।