একমাস পর ৪ হাজার পয়েন্টে সূচক

বুধবার থেকে ৪ ঘণ্টা লেনদেন হবে পুঁজিবাজারে

নিজস্ব প্রতিবেদক

নভেল করোনাভাইরাসের কারণে সাধারণ ছুটির সময় ৬৫ দিন বন্ধ ছিল দেশের পুঁজিবাজার। গত ৩১ মে থেকে পুঁজিবাজারে আবারো লেনদেন চালু হয়। চালুর পর প্রথম দিন ৫২ পয়েন্ট বেড়েছিল সূচক। ফ্লোর প্রাইসের প্রভাবে এর পর থেকেই প্রাণহীন হয়ে পড়ে পুঁজিবাজার। সূচকে সামান্য উত্থান-পতন ও নামমাত্র লেনদেন হচ্ছে। গত ২৫ কার্যদিবসে ৩ হাজার ৯৫০ থেকে ৩ হাজার ৯৯৯ পয়েন্টের মধ্যেই আটকে ছিল পুঁজিবাজার। অবশেষে মঙ্গলবার (৭ জুলাই) ২৬ কার্যদিবস পর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪ হাজার পয়েন্ট স্পর্শ করেছে। 

বুধবার (৮ জুলাই) থেকে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে আগের মত সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত টানা ৪ ঘণ্টা লেনদেন চলবে। ব্যাংকিং কার্যক্রম স্বাভাবিক হওয়ার কারণে স্টক এক্সচেঞ্জও আগের মত লেনদেনে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। 

এর আগে করোনা ভাইরাসের কারণে এ বছরের ১৯ মার্চ থেকে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত পুঁজিবাজারে লেনদেনের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছিল। পরবর্তীতে ব্যাংকিং কার্যক্রমের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এ বছরের ১৮ জুন লেনদেনের সময়সূচি পুণনির্ধারণ করা হয় সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, আজ লেনদেনের শুরু সূচকে কিছুটা অস্থিরতা দেখা যায়। বেলা ১১ টার পর থেকে সূচক নিম্নমুখী হতে থাকে। তবে পরবর্তীতে সূচক গুরে দাঁড়ায় যা লেনদেন শেষ হওয়া পর্যন্ত অব্যাহত ছিল।

এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৭ পয়েন্ট বেড়ে ৪ হাজার ২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, যা এর আগের দিন ছিল ৩ হাজার ৯৯৫ পয়েন্টে। ডিএসইর শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস গতকাল প্রায় ২ পয়েন্ট বেড়ে দিন শেষে ৯২৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, যা এর আগের দিন ছিল ৯২২ পয়েন্টে। ব¬ু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ দিনের ব্যবধানে প্রায় ৪ পয়েন্ট বেড়ে গতকাল ১ হাজার ৩৪৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের দিন শেষে যা ছিল ১ হাজার ৩৪৩ পয়েন্টে। 

মঙ্গলবার এক্সচেঞ্জটিতে মোট ১৩৮ কোটি ৫৬ লাখ টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়েছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল ১৫০ কোটি টাকা। এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩১২টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড ও করপোরেট বন্ডের মধ্যে দিন শেষে দর বেড়েছে ৪৭টির, কমেছে ৩৬টির আর অপরিবর্তিত ছিল ২২৯টি সিকিউরিটিজের বাজারদর।

খাতভিত্তিক লেনদেন চিত্রে দেখা যায়, মঙ্গলবার ডিএসইর মোট লেনদেনের ৪৬ শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে ওষুধ খাত। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৯ শতাংশ দখলে নিয়েছে ব্যাংক খাত। ১০ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে সাধারণ বীমা খাত। আর ৮ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে চতুর্থ অবস্থানে ছিল জীবন বীমা খাত।

ডিএসইতে লেনদেনের ভিত্তিতে শীর্ষ সিকিউরিটিজ ছিল বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, এক্সিম ব্যাংক, অরিয়ন ফার্মাস্উিটিক্যালস, প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্সুরেন্স, ওয়াটা কেমিক্যাল, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল, রূপালী লাইফ ইন্সুরেন্স, ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস ও অরিয়ন ইনফিউশন্স।

দর বাড়ার শীর্ষ কোম্পানির তালিকায় ছিল প্যারামাউন্ট ইন্সুরেন্স, ইউনাইটেড ইন্সুরেন্স, রূপালী লাইফ ইন্সুরেন্স, অগ্রনী ইন্সুরেন্স, ইস্টার্ন ইন্সুরেন্স, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল, এসিআই লিমিটেড, জনতা ইন্সুরেন্স ও ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস।

অন্যদিকে মঙ্গলবার এক্সচেঞ্জটিতে দর পতনের শীর্ষে থাকা কোম্পানিগুলো হচ্ছে ঢাকা ইন্সুরেন্স সোনারবাংলা ইন্সুরেন্স, ফনিক্স ইন্সুরেন্স, ফাইন ফুডস, পূবালি ব্যাংক, সাভার রিফ্র্যাক্টরীজ, ঢাকা ডায়িং, ফার্মা এইড, গ্ল্যাক্সোস্মিথ ক্লাইন  ও অ্যাম্বি ফার্মাসিউটিক্যালস।

দেশের আরেক পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) ৭ জুলাই সিএসসিএক্স সূচক দিনের ব্যবধানে প্রায় ১৬ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৮৮২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আগের কার্যদিবসে সূচকটির অবস্থান ছিল ৬ হাজার ৮৬৬ পয়েন্টে। এদিন এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ১২০টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ২৭টির, কমেছে ১৪টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৭৯টির বাজারদর। গতকাল সিএসইতে মোট ৩ কোটি টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়েছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল ৮৯ কোটি টাকা। 

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন