গম : ২০১৯ সালের শীর্ষ রফতানিকারক

মানবদেহের বিকাশে কার্বোহাইড্রেটের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য উৎস গম। বিশ্বের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি প্রতিদিন গম গম থেকে তৈরি বিভিন্ন খাবার খায়। বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি উৎপাদিত কৃষিপণ্যের তালিকায় গম রয়েছে দ্বিতীয় অবস্থানে। কৃষিপণ্যটির উৎপাদন রফতানিতে এগিয়ে রয়েছে এশিয়া, ইউরোপ, উত্তর দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলো। অন্যদিকে সবচেয়ে বেশি গম আমদানি করে আফ্রিকা এশিয়ার দেশগুলো। গত বছর বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে গমের শীর্ষ উৎপাদনকারী, রফতানি আমদানিকারক দেশ অঞ্চল নিয়ে এবারের ধারাবাহিক আয়োজন

ইইউ: উৎপাদনে দ্বিতীয় হলেও গম রফতানিকারকদের শীর্ষ তালিকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলোর সম্মিলিত অবস্থান বিশ্বে প্রথম। গত বছর ইইউভুক্ত দেশগুলো সব মিলিয়ে কোটি ৬৫ লাখ টন গম রফতানি করেছে, যা আগের বছরের তুলনায় রেকর্ড ৫৬ দশমিক ৫৯ শতাংশ বেশি। এর মধ্য দিয়ে গত বছর ইইউর ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি গম রফতানির রেকর্ড হয়েছে। ২০১৮ সালে জোটভুক্ত দেশগুলো সম্মিলিতভাবে কোটি ৩৩ লাখ ১০ হাজার টন গম রফতানি করেছিল, যা আগের বছরের তুলনায় দশমিক ৩১ শতাংশ কম। ইইউভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ফ্রান্স জার্মানি সবচেয়ে বেশি গম রফতানি করে। এছাড়াও স্পেন, সুইডেন, পোল্যান্ড, হাঙ্গেরি, রোমানিয়া, বুলগেরিয়াসহ কয়েকটি দেশ থেকে কৃষিপণ্যটি রফতানি হয়।

রাশিয়া: উৎপাদনে কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও বিশ্বের বুকে সবচেয়ে বেশি গম রফতানি করা দেশগুলোর তালিকায় দ্বিতীয় শীর্ষ অবস্থান ধরে রেখেছে রাশিয়া। যদিও দুই বছর ধরে দেশটি থেকে কৃষিপণ্যটির রফতানি কমতির দিকে রয়েছে। ধারাবাহিকতায় গত বছর রুশ রফতানিকারকরা আন্তর্জাতিক বাজারে সব মিলিয়ে কোটি ৩৫ লাখ টন গম রফতানি করেছেন, যা আগের বছরের তুলনায় দশমিক ৫২ শতাংশ কম। এর আগের বছর দেশটি থেকে কৃষিপণ্যটির রফতানি ১৩ দশমিক ৫০ শতাংশ কমে কোটি ৫৮ লাখ ৩৮ হাজার টনে নেমে এসেছিল। ২০১৭ সালে রাশিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি গম রফতানি হয়েছিল। ওই বছর দেশটি থেকে কৃষিপণ্যটির রফতানির পরিমাণ দাঁড়ায় কোটি ১৪ লাখ ৩১ হাজার টন। কৃষ্ণসাগরীয় অঞ্চলের আবহাওয়ায় বেড়ে ওঠা রুশ গমের পুষ্টিমান বেশ ভালো। কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে রাশিয়া থেকে রফতানি হওয়া গমের চাহিদাও তুলনামূলক বেশি।

যুক্তরাষ্ট্র: সব মিলিয়ে কোটি ৬২ লাখ ৬৩ হাজার টন গম রফতানির মধ্য দিয়ে গত বছর কৃষিপণ্যটির বৈশ্বিক রফতানিকারকদের তালিকায় তৃতীয় শীর্ষ অবস্থানে জায়গা করে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্য দিয়ে এক বছরের ব্যবধানে দেশটি থেকে কৃষিপণ্যটি রফতানি দশমিক শূন্য শতাংশ বেড়েছে। এর আগের বছর যুক্তরাষ্ট্র থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে সব মিলিয়ে কোটি ৫৪ লাখ ৭৭ হাজার টন গম রফতানি হয়েছিল, যা আগের বছরের তুলনায় দশমিক ৩৩ শতাংশ বেশি। টানা দুই বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রের গম রফতানিতে চাঙ্গা ভাব বজায় রয়েছে। এর আগে ২০১০ সালে দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি গম রফতানির রেকর্ড হয়েছিল। ওই বছর মার্কিন রফতানিকারকরা সব মিলিয়ে কোটি ৫১ লাখ ৪৭ হাজার টন গম রফতানি করেছিলেন।

ইউক্রেন: কৃষ্ণসাগরীয় অঞ্চলের দেশ ইউক্রেন গম উৎপাদনে যেমন প্রসিদ্ধ, তেমনি দেশটি থেকে প্রতি বছর আন্তর্জাতিক বাজারে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ গম রফতানিও হয়। গত বছর সব মিলিয়ে কোটি ৫০ লাখ টন গম রফতানির মধ্য দিয়ে দেশটি কৃষিপণ্যটির রফতানিকারকদের বৈশ্বিক শীর্ষ তালিকায় চতুর্থ অবস্থানে জায়গা করে নিয়েছে। এক বছরের ব্যবধানে দেশটি থেকে গম রফতানি রেকর্ড ২৭ দশমিক ৯৭ শতাংশ বেড়েছে। ইউক্রেনের ইতিহাসে এটাই সবচেয়ে বেশি গম রফতানির রেকর্ড। ২০১৮ সালে দেশটি থেকে মোট কোটি ৬০ লাখ ১৯ হাজার টন গম রফতানি হয়েছিল, যা আগের বছরের তুলনায় দশমিক ৮৮ শতাংশ কম। (চলবে)

 

সূত্র: ইউএসডিএ এগ্রিমানি

 

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন