নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর চীনে মন্দ ঋণের পাহাড় জমছে।
যত দিন যাচ্ছে, দেশটির আর্থিক খাত নিয়ে উদ্বেগ আরো বাড়ছে।
এ অবস্থায় ব্যাংকগুলোয় বড় অংকের লেনদেন পর্যবেক্ষণে রাখার উদ্যোগ নিয়েছে পিপল’স ব্যাংক অব চায়না (পিবিওসি)। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, এখন থেকে বড় অংকের অর্থ ব্যাংকের জমা অথবা উত্তোলনের সময় ব্যক্তি পর্যায়ের গ্রাহক ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে আগে থেকেই রিপোর্ট করতে হবে।
খবর ব্লুমবার্গ।
আপাতত চলতি মাস থেকে হেবেই প্রদেশে পাইলট প্রকল্প হিসেবে এ নিয়ম চালু করা হবে।
দুই বছর মেয়াদি কর্মসূচিটি আগামী অক্টোবরে ঝেজিয়াং ও শেনঝেনে সম্প্রসারণ করা হবে।
করোনা মহামারীর কারণে সৃষ্ট অচলাবস্থায় চার দশকের মধ্যে সবচেয়ে ধীরগতির প্রবৃদ্ধি দেখতে চলেছে চীন।
এ অবস্থায় দেশটির ব্যাংকগুলোকে ক্রমবর্ধমান মন্দ ঋণ মোকাবেলা করতে হচ্ছে।
অবস্থা এমন হয়েছে যে কর্তৃপক্ষ গত মাসে হেবেই ও শানজির দুটি ব্যাংকের কার্যক্রম স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছে।
অবশ্য করোনার আগে থেকেই চীনের ব্যাংকিং খাতে শনির দশা চলছে।
গত বছর দেশটির সরকারকে সংকটের মধ্যে থাকা বেশ কয়েকটি ব্যাংককে উদ্ধারে বেইলআউট ও অধিগ্রহণের মতো পদক্ষেপ নিতে হয়েছে।
এক বিবৃতিতে পিবিওসি বলেছে, অপ্রয়োজনে যেন বড় অংকের নগদ অর্থের চাহিদা দেখানো না হয়, সেই লক্ষ্যেই এ পাইলট কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে।
এর মাধ্যমে সিস্টেমেটিক রিস্কগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে।
তবে গ্রাহক যদি জরুরি প্রয়োজনে বড় অংকের নগদ অর্থ তুলতে চান, তাতে কোনো বাধা দেয়া হবে না।
পিবিওসির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এ কর্মসূচির অধীনে কোনো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান
৫ লাখ ইউয়ানের (৭১ হাজার ডলার) বেশি উত্তোলন করতে গেলে আগে থেকে তথ্য দিতে হবে।
ব্যক্তি পর্যায়ের গ্রাহকদের ক্ষেত্রে এ সীমা অঞ্চলভেদে ১ লাখ থেকে ৩ লাখ ইউয়ান হবে।
এ সীমার বেশি হলে কোনো লেনদেন নাকচ করে দেয়া হবে কিনা, তা বিবৃতিতে স্পষ্ট করে বলা হয়নি।
তবে এতে জানানো হয়েছে, ব্যাংকগুলোকে প্রতিবেদন জমা করতে হবে, ঝুঁকি পর্যবেক্ষণ করতে হবে এবং গ্রাহক উচ্চ ঝুঁকিসম্পন্ন কোনো খাত থেকে এসেছেন কিনা বা তার অতীতের রেকর্ড কেমন, তা খতিয়ে দেখতে হবে।
চীনের ৪১ লাখ কোটি ডলারের ব্যাংকিং খাতে চলতি বছর মন্দ ঋণের আকার ৮ ট্রিলিয়ন ইউয়ান বাড়তে পারে।
এদিকে দেশটির কয়েকটি ক্ষুদ্র ব্যাংক প্রায় ৩৪ হাজার ৯০০ কোটি ডলারের মূলধন-স্বল্পতায় ভুগছে বলে ইউবিএস গ্রুপ জানিয়েছে।