প্রান্তিক পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে সরকার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
গতকাল দুপুরে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা অডিটরিয়ামে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জন্য চিকিৎসা সরঞ্জামাদি প্রদান ও বুনোহাতির আক্রমণে নিহতের পরিবারকে সরকারের আর্থিক অনুদানের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, এখন আমরা উপজেলা পর্যায়েও চিকিৎসা দেয়ার ব্যবস্থা করছি।
চট্টগ্রামে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেয়ার ক্ষেত্রে যেসব অসুবিধা ছিল, তার মধ্যে অনেকগুলো এরই মধ্যে দূর করা হয়েছে।
কিছুদিনের মধ্যে ব্যবস্থা আরো ভালো হবে।
আগের সংকট ও হা-হুতাশ অনেকটা কেটে গেছে।
নতুনভাবে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে।
সেগুলোয় যাতে করোনা-পরবর্তী স্বাভাবিক সময়েও ভালোমতো চিকিৎসা দেয়া যায়, সেই লক্ষ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে দেশের উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত সব স্বাস্থ্যসেবাকে ঢেলে সাজানোর কর্মসূচি সরকার হাতে নিয়েছে।
ক্রমে দেশে নভেল করোনাভাইরাস মোকাবেলার সামর্থ্য এবং সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তিন মাসের বেশি দুর্যোগে বাংলাদেশে আল্লাহর রহমতে খাদ্যের অভাব হয়নি।
খাদ্যের অভাবে কোনো মানুষ মারা যায়নি।
খাদ্যের জন্য কোনো জায়গায় হাহাকার নেই।
হাছান মাহমুদ বলেন, করোনাভাইরাসের মহামারী শুরুর পর থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের মানুষকে করোনা থেকে রক্ষায় প্রাণান্তকর চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
মানুষকে সুরক্ষা দেয়ার জন্য, যাতে খাদ্যের সংকট না হয়, গরিব মানুষের অসুবিধা না হয়, সেজন্য নানাভাবে তিনি দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, বিএনপির অনেক নেতা ঘরের মধ্যে আইসোলেশনে থেকে শুধু প্রেস ব্রিফিং করে আর সরকারের দোষ ধরে।
জনগণের সহায়তায় তারা এগিয়ে আসেনি।
সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী এবং কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীরাই মানুষের পাশে আছে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, যারা ঘরে বসে বসে শুধু সমালোচনা করছেন, তারা কিন্তু ঘর থেকে বের হচ্ছেন না।
পক্ষান্তরে আওয়ামী লীগ ও সরকারের কেউ কিন্তু বসে নেই।
আক্রান্ত হলে কী হতে পারে সেটিও আমি জানি, তাই আমি নিজেও বসে নেই।
সব প্রস্তুতি নিয়েই কিন্তু মাঠে কাজ করছি।
এ সময়ে দেশের মানুষ যখন আক্রান্ত, তখন হাত গুটিয়ে বসে থাকার কোনো কারণ নেই।
দলীয় নেতাকর্মীকে জনগণের পাশে থাকার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীকে জনগণের পাশে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।
আমরা নির্দেশনা মেনে জনগণের পাশে আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকব।
সেই কারণে আমাদের দলের বহু নেতা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
অনেক নেতা মারা গেছেন।
মৃত্যু যেকোনো সময় হতে পারে, তাই বলে জনগণের এ দুর্দশার সময় বসে থাকব, সেটা হতে পারে না।
সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, রাঙ্গুনিয়াতেও অনেক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে।
মনে রাখতে হবে, আমার সুরক্ষা আমার হাতে।
আমি যদি সচেতন না হই, সরকার কিংবা ডাক্তারসহ অন্য কেউ আমাকে সুরক্ষিত করতে পারবে না।
সেজন্য আমার সুরক্ষা আমার হাতে—এটি মাথায় রেখেই আমাদেরকে করোনাভাইরাসের সময় জীবন এবং কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে হবে।
অসচেতন থাকলে যে কেউ যেকোনো সময় আক্রান্ত হতে পারেন।
রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাসুদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. শফিকুল ইসলাম, সহকারী পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবু নাছের মোহাম্মদ ইয়াছিন নেওয়াজ, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা রেহানুল ইসলাম প্রমুখ।