করোনাকালে পোশাক খাতের বাণিজ্য

যুক্তরাষ্ট্রে রফতানি কমলেও আমদানি বেড়েছে বাংলাদেশের

বদরুল আলম

নভেল করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরুর পর বৈশ্বিক বাণিজ্যে দেখা দেয়া স্থবিরতায় একের পর এক ক্রয়াদেশ হারাতে থাকে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত। এর মধ্য দিয়েও অব্যাহত ছিল যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশী পোশাক খাতের বাণিজ্য। পরিসংখ্যান বলছে, চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জানুয়ারি-মে) যুক্তরাষ্ট্রে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় কম পোশাক রফতানি করেছে বাংলাদেশ। যদিও একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে পোশাক পোশাক খাতসংশ্লিষ্ট আমদানি বেড়েছে বাংলাদেশের।

মার্কিন বাণিজ্য বিভাগের অধীন অফিস অব টেক্সটাইলস অ্যান্ড অ্যাপারেলসের (ওটিইএক্সএ) এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০২০ সালের প্রথম পাঁচ মাসে বাংলাদেশ

থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রফতানি হয়েছে ২২৪ কোটি ৩০ লাখ ৯৫ হাজার ডলারের। ২০১৯ সালের একই সময়ে রফতানির পরিমাণ ছিল ২৫৫ কোটি ১৯ লাখ ৪৪ হাজার ডলার। হিসেবে চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে বাংলাদেশের পোশাক রফতানি কমেছে ১২ দশমিক ১০ শতাংশ।

অথচ বছরের প্রথম চার মাসে (জানুয়ারি-এপ্রিল) বাংলাদেশ থেকে যু্ক্তরাষ্ট্রে পোশাক রফতানি ছিল ইতিবাচক ধারায়। সময় দেশটিতে বাংলাদেশের পোশাক রফতানি বেড়েছে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় দশমিক ১৩ শতাংশ। কিন্তু পঞ্চম মাসে অর্থাৎ মে মাসে রফতানিতে ব্যাপক ধস নামে, যার প্রভাবে পাঁচ মাসের সার্বিক রফতানিতে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় মারাত্মক পতন পরিলক্ষিত হয়।

তবে বছরের প্রথম পাঁচ মাসে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রফতানি কমলেও দেশটি থেকে সময় আমদানি বেড়েছে বাংলাদেশের। ওটিইএক্সএ প্রকাশিত রফতানি পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বছরের প্রথম পাঁচ মাসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে বস্ত্র পোশাক আমদানি বেড়েছে ৬৩ দশমিক ৪০ শতাংশ। এর মধ্যে পোশাক আমদানির পরিমাণ ছিল যৎসামান্য, ১৩ কোটি ৪০ লাখ ডলারের। সময় বাংলাদেশে মোট  ৬৩ কোটি ৪০ লাখ ডলারের সুতা রফতানি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশের সুতা আমদানি বেড়েছে ২২০ শতাংশ বা দ্বিগুণেরও বেশি। পাঁচ মাসে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি রফতানি করেছে দেশটিতে

তৈরি কাপড়। চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে ২২২ কোটি ৯০ লাখ ডলারের কাপড় রফতানি করেছে। গত বছরের তুলনায় কাপড় রফতানি বেড়েছে ৭৮ দশমিক ৩৯ শতাংশ।

সময় বাংলাদেশের পাশাপাশি চীন, ভারত ভিয়েতনাম থেকেও পোশাক আমদানি কমেছে বলে ওটিইএক্সএর পরিসংখ্যানে উঠে এসেছে। একই তথ্য দেখা যাচ্ছে পোশাক শিল্প মালিক সংগঠন বিজিএমইএর পরিসংখ্যানেও। এতে দেখা যায়, মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক আমদানি মারাত্মক হারে কমেছে।

সময় গত বছরের মে মাসের তুলনায় প্রায় ৬০ দশমিক শূন্য শতাংশ পোশাক কম আমদানি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। অন্যদিকে বছরের প্রথম পাঁচ মাসে দেশটির মোট পোশাক আমদানি কমেছে ২৭ দশমিক ৭৬ শতাংশ। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কমেছে চীন থেকে, ৪৯ দশমিক ২০ শতাংশ।

বিষয়ে বিজিএমইএ সভাপতি . রুবানা হক বণিক বার্তাকে বলেন, কভিড-১৯-এর প্রাদুর্ভাবের প্রাথমিক পর্যায়ে মার্চ-এপ্রিলেও যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রফতানিতে চীন ভিয়েতনামের চেয়েও তুলনামূলক ভালো করেছে বাংলাদেশ। দেশে এপ্রিলের শেষে শিল্প পুনরায় সচল হওয়ার পর আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও আমরা এখনো নিরাপদভাবে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য দেশ থেকে পোশাক আমদানিতে ধস অস্বাভাবিক না হলেও আশা করছি লকডাউন তুলে নেয়ার পর বিক্রি বাড়লে দেশটির পোশাক আমদানিও বাড়বে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন