আরো ১৬৩৫টি গাড়ি চলাচলের অনুমতি

নিজস্ব প্রতিবেদক

নভেল করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে গত ২৬ মার্চ থেকে ৩০ মে পর্যন্ত সারা দেশে গণপরিবহন বন্ধ রেখেছিল সরকার। জুন সীমিত গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দিলেও বন্ধই ছিল সেলফোন অ্যাপভিত্তিক পরিবহন সেবা বা রাইডশেয়ার। রাইডশেয়ার কোম্পানিগুলোর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২১ জুন ২৫৫টি প্রাইভেটকার, জিপ, মাইক্রোবাস অ্যাম্বুলেন্স চলাচলের অনুমতি দেয় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) সম্প্রতি আরো হাজার ৬৩৫টি গাড়ি চালানোর অনুমতি দিয়েছে সংস্থাটি। ফলে বর্তমানে রাইডশেয়ারে চলাচলরত গাড়ির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে হাজার ৮৯০। তবে রাইডশেয়ার সেবায় এখনো মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা বহাল রয়েছে।

বিআরটিএর কাছ থেকে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক গাড়ি চালানোর অনুমতি পেয়েছে দেশের শীর্ষস্থানীয় রাইডশেয়ার কোম্পানি উবার। প্রতিষ্ঠানটি সব মিলিয়ে হাজার ৬৫৭টি গাড়ি চালানোর অনুমতি পেয়েছে। ইজিয়ার বাংলাদেশ লিমিটেড ৯৫, সিএনএস লিমিটেড ৬০ সেজেস্টা লিমিটেড পেয়েছে ৩৪টি গাড়ি চালানোর অনুমতি। বাকিদের মধ্যে পিকমি লিমিটেড ৩০, ওভাই সলিউশনস লিমিটেড সাত, পাঠাও লিমিটেড চার আকিজ অনলাইন লিমিটেড পেয়েছে তিনটি গাড়ি চালানোর অনুমতি। এসব গাড়ি ঢাকা মহানগর, গাজীপুর মহানগর, ঢাকা জেলা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, নরসিংদী গাজীপুর জেলায় চলাচল করতে পারবে।

বিষয়ে জানতে চাইলে বিআরটিএর পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ারিং) লোকমান হোসেন মোল্লা বণিক বার্তাকে বলেন, যেসব কোম্পানির রাইডশেয়ারিং এনলিস্টমেন্ট সনদ আছে এবং কোম্পানিগুলোর যেসব গাড়ির মোটরযান এনলিস্টমেন্ট সনদ আছে, শুধু সেগুলোকেই চলাচলের অনুমতি দেয়া হয়েছে।

সম্প্রতি রাইডশেয়ারের মোটরযান চলাচলের অনুমতিসংক্রান্ত বিআরটিএর এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, রাইডশেয়ারিং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের অ্যাপসের মাধ্যমে রাইডশেয়ারিং মোটরযান এনলিস্টমেন্ট সার্টিফিকেট ব্যতীত রাইডশেয়ার সার্ভিস পরিচালনার কোনো সুযোগ নেই। নভেল করোনাভাইরাসজনিত বর্তমান পরিস্থিতিতে রাইডশেয়ারিং অ্যাপসের মাধ্যমে সামাজিক দূরত্ব মেনে মোটরসাইকেলে যাত্রী পরিবহন সম্ভব নয় বিধায় রাইডশেয়ারিং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের অ্যাপসের মাধ্যমে মোটরসাইকেল চালানোর অনুমতি প্রদান সম্ভব হলো না। প্রজ্ঞাপনটি বাংলাদেশে নিবন্ধিত ১১টি রাইডশেয়ার কোম্পানির কর্মকর্তাদেরও পাঠিয়েছে বিআরটিএ।

প্রসঙ্গত, নভেল করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে গত ২৬ মার্চ থেকে সব ধরনের গণপরিবহন বন্ধ করে দেয় সরকার। জুন থেকে সীমিত পরিসরে গণপরিবহন চালু হলেও পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত রাইডশেয়ার বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে রাইডশেয়ার চালুর দাবিতে সেবাটি চালুর অনুরোধ জানিয়ে বিআরটিএতে চিঠি দেয় কোম্পানিগুলো। চিঠিতে তারা উল্লেখ করেন, রাইডশেয়ার বন্ধ রাখা হলেও রাইডশেয়ারে চলা মোটরযানগুলো রাস্তায় ঠিকই চলাচল করছে। পাশাপাশি তারা চুক্তিতে যাত্রী পরিবহনও করছে, যা চালক-যাত্রী উভয়ের নিরাপত্তার জন্যই হুমকিস্বরূপ। বরং করোনার সময় সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি আনুষঙ্গিক বিভিন্ন শর্ত সবচেয়ে ভালোভাবে পালন করা সম্ভব রাইডশেয়ারে চলা মোটরযানগুলোতে।

আরো উল্লেখ করা হয়, কোম্পানিগুলো করোনার সময় নিরাপদে মোটরযানে ভ্রমণের বিষয়ে যাত্রী চালকদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে। চালকদের হ্যান্ড স্যানিটাইজার, ফেস মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস, স্যাভলন ইত্যাদির সমন্বয়ে নিরাপত্তা কিট প্রদান করা হয়েছে। যেসব চালক স্বাস্থ্যবিধি মেনে গাড়ি চালাবেন, কেবল তারাই রাইডশেয়ারে যুক্ত থাকতে পারবেন। নিরাপত্তার জন্য হুমকি মনে করলে চালক যাত্রী তাত্ক্ষণিকভাবে ফিডব্যাক, এমনকি রাইড বাতিলও করতে পারবেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন