বেইজিংয়ের সমালোচকরা হংকং নামলেই গ্রেফতার

বণিক বার্তা ডেস্ক

হংকংয়ে নতুন নিরাপত্তা আইন ইস্যুতে বিশ্বব্যাপী অনেকেই বেইজিংয়ের সমালোচনা করছেন। কিন্তু এই সমালোচকরা হংকংয়ে প্রবেশ করলেই, এমনকি ট্রানজিট হিসেবে হংকং এয়ারপোর্টে নামলেই গ্রেফতার হয়ে যাবেন!

চীনা-অস্ট্রেলিয়ান ভিন্নমতাবলম্বী রাজনৈতিক কার্টুনিস্ট বাদিউকাও নিজের চিত্রকর্মের প্রদর্শনীর জন্য হংকংয়ে একটি জায়গা খুঁজছিলেন। এসব চিত্রকর্মের বেশিরভাগই ছিল চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সমালোচনা করে। এখন হংকংয়ে প্রদর্শনী করা তো দূরে থাক, নতুন নিরাপত্তা আইনের কারণে হংকং এয়ারপোর্টে নামলেই গ্রেফতার হয়ে যাবেন তিনি। 

গত মঙ্গলবার থেকে কার্যকর হওয়া নতুন নিরাপত্তা আইনটি শুধুই যে হংকংবাসীর স্বাধীনতা খর্ব করছে তা-ই নয়, এটি বিদেশী সমালোচকদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেবে। বিশ্বের যে প্রান্তে বসেই সমালোচনা করুন না কেন, আপনি যদি হংকংয়ের মাটি স্পর্শ করেন, তবেই গ্রেফতার হবেন। 

নতুন এ আইন নিয়ে বাদিউকাও বলেন, ‘এটা খুবই উদ্বেগের ও ভয়ংকর; শুধুই হংকংবাসীর জন্য নয়, বরং হংকং ও চীনের সামগ্রিক মানবাধিকার নিয়ে যারা কথা বলেন ও ভাবেন তাদের জন্যও।’

ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন ও পরবর্তীতে চীনের কাছে হস্তান্তরের পরও বিশেষ সুরক্ষা আইন ছিল হংকংবাসীর জন্য। এ কারণে চীনের ভিন্ন মতাবলম্বী, পশ্চিমা শিক্ষাবিদ, বৈশ্বিক বেসরকারি সংস্থা বেইজিংয়ের সমালোচনা করার জন্য হংকংয়ে জড়ো হতেন, কেননা এটাকেই নিরাপদ জায়গা মনে করতেন তারা। তাতে কোনো বিপদও ছিল না। কিন্তু নতুন নিরাপত্তা আইন পাসের পর সেই স্বাধীনতা আর নাও আসতে পারে। 

কানেকটিকাটের ইয়েল ল’ পল সাই সেন্টারের সিনিয়র ফেলো জেরেমি দাউম বলেন, ‘আইনে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ নিয়ে বলা আছে, যা মূলত বক্তব্যকেন্দ্রিক। তাই আপনি যদি বাইরে থেকেও কোনো কিছু বলেন তবে সেখানে প্রবেশের ক্ষেত্রে ঝুঁকি রয়েছে। হংকং সব সময় একটি নিরাপদ জায়গাই ছিল। এটি এখন আর মোটেও নিরাপদ নয়।’

হংকংয়ের শীর্ষ কর্মকর্তা প্রধান নির্বাহী ক্যারি ল্যাম নতুন আইনকে সমর্থন করেছেন। তার মতে, শহরে গত কয়েক মাসের নৈরাজ্য ও সহিংসতা বন্ধে এই আইন প্রয়োজন ছিল। এটি মূলত স্থানীয়দের আন্দোলন, প্রতিবাদ করা থেকে রুখবে। তবে সেকশন ৩৮ বিদেশীদের জন। চীনের রাষ্ট্র-নিয়ন্ত্রত সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া বলছে, ‘বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল হংকংয়ের বাইরে থেকে যেসব বিদেশি নাগরিক এই আইনবিরোধী বক্তব্য রাখবেন ও আইন ভাঙবেন, তাদের বিরুদ্ধেই প্রযোজ্য হবে সেকশন ৩৮।’ অর্থ্যাৎ আপনি হংকংয়ের বাইরে থেকে সমালোচনা করলেও হংকংয়ের আইন ভাঙবেন ও শাস্তির মুখে পড়বেন।

যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান সিনেটর মার্কো রুবিও সচরাচর চীনের সমালোচনা করে থাকেন। তিনি বুধবার তার দেশবাসীকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, তারা যেন হংকং সফর থেকে বিরত থাকেন। তার টুইট, ‘ব্যবসায়িক কাজে কিংবা ঘুরতে হংকং যাওয়ার কথাটি ভুলে যান।’

সূত্র: সিএনএন

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন