করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে এবার অনলাইনে কোরবানির পশু কেনাবেচার উদ্যোগ নিয়েছেন গাজীপুর জেলা প্রশাসন। এ উদ্যোগ বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ইতোমধ্যে জেলার পাঁচটি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা ও উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ও ডেইরি মালিক সমিতির নেতাদের নির্দেশনা প্রদান করেছেন জেলা প্রশাসক এস এম তরিকুল ইসলাম। এ উদ্যোগের ফলে কোরবানির পশু কেনার জন্য বাজারমুখী প্রবণতা অনেকাংশে হ্রাস পাবে এবং পশু বিক্রয়কারীদেরও বিক্রয় মন্দার শঙ্কা দূর হবে বলে আশা করছে কর্তৃপক্ষ।
এদিকে করোনার কারণে কয়েকমাস বন্ধ থাকার পর ইদুল আযহাকে সামনে রেখে গাজীপুরের স্থায়ী গবাদি পশুর হাট জমতে শুরু করেছে। তবে এসব হাটে প্রশাসনের নির্দেশমতো ক্রেতা ও বিক্রেতাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কোন প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। ফলে করোনা সংক্রমণ ঝুঁকি থেকে যাচ্ছে এসব হাটে।
গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এস এম তরিকুল ইসলাম জানান, অনলাইনে বিক্রির জন্য প্লাটফরম রেডি আছে। বিক্রেতারাও তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইট, ফেসবুক পেজ বা সামাজিক যোগাযোগের অন্যান্য মাধ্যমে তাদের পশুর ছবি আপলোড করবে। আমরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদেরকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করবো। তাদেরকে প্রমোট করার জন্য বা প্রচারণার ব্যবস্থা করবো। পশুর ওজন অনুযায়ী আমরা একটা দামও নির্ধারণ করে দেব যাতে ক্রেতা ও বিক্রেতা কেউ প্রতারিত না হন।
গাজীপুর জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা দিপক রঞ্জন রায় জানান, জেলায় ৬ হাজার ৮৬৮জন খামারি ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে তাদের গবাদি পশু বিক্রির উপযোগী করে তুলছেন। এর মধ্যে গরু ৬১ হাজার ১৫০টি, মহিষ ৪০ হাজার ৬৩৫টি এবং ছাগল ও ভেড়া মিলিয়ে ২০ হাজার ৯১৫টি রয়েছে। অপর দিকে চাহিদা রয়েছে প্রায় ৫০ হাজার পশু। গাজীপুরে চাহিদার চেয়ে অতিরিক্ত পশু মজুদ রয়েছে মালিকদের কাছে।
এ দিকে গবাদি পশু ব্যবসায়ী ও ইজারাদারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গাজীপুরের গবাদি পশুর হাটগুলোতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পরিবহন যোগে পাইকাররা গবাদি পশু বিক্রির জন্য নিয়ে আসে। এজন্যই করোনা সংক্রমনের একটি ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে। অনলাইনে বিক্রির যে উদ্যোগ জেলা প্রশাসন নিয়েছেন এ বিষয়ে তারা জানান, অনলাইনে যে পশু বিক্রির উদ্যোগ তার সফলতা নিয়েও প্রশ্ন আছে তাদের।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সম্পত্তি কর্মকর্তা নুরুজ্জামান মৃধা জানান, করোনার কারনে এবার ভিন্ন পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে। সংক্রমন রোধে তাই ঈদুল আজহায় বাজারের সংখ্যাও কমিয়ে আনা হয়েছে। অস্থায়ী বাজারগুলো এখনও শুরু হয়নি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাতে বাজার পরিচালনা করা হয় সেজন্য ইজারাদারদের শর্ত দেয়া হবে। এছাড়াও সিটি করপোরেশন থেকে নজরদারিও করা হবে।