টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে আবারো বাড়তে শুরু করেছে যমুনা নদীর পানি। টানা দুইদিন কমার পর গতকাল শুক্রবার আবার ৪ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৪৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সিরাজুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়ে বলেন, এছাড়াও জেলার ঝিনাই নদীতে বিপৎসীমার ৪৯ সে. মি আর ধলেশ্বরীতে ৮৮ সে.মি. উপরে রয়েছে। এর ফলে নদী তীর উপচে লোকালয়ে পানি প্রবেশ অব্যাহত থাকায় বন্যা পরিস্থিতি আরো অবনতি হয়েছে। একই সাথে বেড়েছে ধলেশ্বরীসহ অভ্যন্তরীণ নদ নদীর পানি। এতে প্লাবিত হচ্ছে নিম্নাঞ্চলের নতুন নতুন এলাকা।
জেলার এই তিন নদীসহ সব নদীর পানি বাড়ছে। যমুনার পানি বৃহস্পতিবার কমলেও সেদিন রাত থেকে আবারও বাড়ছে। এতে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
জানা গেছে, টাঙ্গাইল সদর, নাগরপুর, দেলদুয়ার, ভূঞাপুর, কালিহাতী আর গোপালপুর উপজেলার ২১টি ইউনিয়নের ৯৩টি গ্রামের ১ লাখ ২৪ হাজার ৫৭১ জন মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। দুর্গত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি ও খাবারসহ গো খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে বন্যায় তলিয়ে গেছে প্রায় ৫ হাজার হেক্টর ফসলি জমি। এছাড়া ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে ১ হাজার ১৮৯টি ঘরবাড়ি। পানি বৃদ্ধির ফলে যমুনা নদী রক্ষা বাঁধের পূর্বতীরের ভূঞাপুরের গারাবাড়ি এলাকায় লিকেজ দেখা দেওয়ায় ঝুঁকির মুখে পড়েছে বাঁধটি। অপরদিকে বন্যা কবলিত এলাকাগুলোতে ১৬৩ মেট্রিকটন জিআর চাল বরাদ্দ দেয়া হলেও এখন পর্যন্ত তা বিতরণ শুরু করেনি কর্তৃপক্ষ।
বন্যা কবলিতদের অভিযোগ, সপ্তাহখানেক যাবৎ পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করলেও এখন পর্যন্ত কোন ধরনের ত্রাণ সাহায্য সহযোগিতা পাননি তারা। বন্যায় রাস্তা ঘাট তলিয়ে যাওয়ায় যাতায়াত ব্যবস্থাও নাজুক হয়ে পড়েছে। এতে বেড়েছে আরো দুর্ভোগ। বন্যায় টিউবওয়েলও ডুবে যাওয়ায় বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত বন্যায় আক্রান্তদের জন্য কোন ধরনের ত্রাণ সহায়তা আসেনি। তবে ত্রাণ বরাদ্দ হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ প্রসঙ্গে ভূঞাপুর উপজেলার গাবসারা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনির বলেন, বন্যাদুর্গত এলাকার মানুষের জন্য দ্রুত সাহায্য প্রয়োজন। কারণ এখন চরম মানবেতর জীবনযাপন করছে মানুষ।