যুক্তরাষ্ট্রে একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড

বণিক বার্তা ডেস্ক

নভেল করোনাভাইরাস পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের লক্ষণ দেখে যুক্তরাষ্ট্র যখন ধীরে ধীরে অর্থনৈতিক কার্যক্রমে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছে, ঠিক তখনই নতুন করে ভাইরাসটির গণসংক্রমণ শুরু হয়েছে। এমনকি দ্বিতীয় দফার সংক্রমণে মহামারীটির প্রকোপ আরো বেড়েছে। বৃহস্পতিবার দেশটিতে ৫৫ হাজারের বেশি কভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে, যা রয়টার্সের হিসাব অনুযায়ী সেখানে একদিনে সর্বোচ্চ সংক্রমণের রেকর্ড। খবর রয়টার্স।

গত এক সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে করোনার সংক্রমণ যে হারে বেড়েছে, তাতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সংকট মোকাবেলার সক্ষমতা অতশী কাচের নিচে রাখা হচ্ছে। গত এক সপ্তাহে প্রতিদিনই সংক্রমণ শনাক্তের সংখ্যা ৪০ হাজারের বেশি ছিল। যেখানে মাত্র দুই সপ্তাহ আগেও দৈনিক সংক্রমণ ছিল ২০ হাজারের আশপাশে।

নতুন করে সংক্রমণের জোয়ার শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্রে করোনা কতটা শক্তি নিয়ে আঘাত হেনেছে, তা একটি পরিসংখ্যানেই পরিষ্কার হবে। সর্বশেষ টানা তিনদিন যুক্তরাষ্ট্রে কভিড-১৯ রোগী শনাক্তের সংখ্যা আগের দিনের রেকর্ড ভেঙেছে। 

গত ১৯ জুন ব্রাজিলে একদিনে সর্বোচ্চ ৫৪ হাজার ৭৭১ জনের শরীরে করোনার উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছিল। বৃহস্পতিবার ৫৫ হাজার ২৭৪ জন করোনা পজিটিভ হওয়ার মাধ্যমে সেই রেকর্ড ভেঙে গেছে।

জুনের শুরুর দুই সপ্তাহের সঙ্গে তুলনা করলে যুক্তরাজ্যের ৫০টি অঙ্গরাজ্যের মধ্যে ৩৭টিতেই গত ১৪ দিনে করোনার সংক্রমণ বেড়েছে। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে ফ্লোরিডায়। সেখানে একদিনে ১০ হাজারের বেশি কভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে। কোটি ১০ লাখ অধিবাসীর ফ্লোরিডায় এখন যে পরিমাণ নতুন রোগী শনাক্ত হচ্ছে, তা সংক্রমণের চূড়ান্ত পর্যায়ে ইউরোপের যেকোনো দেশে একদিনে শনাক্তের সংখ্যার চেয়ে বেশি।

যুক্তরাষ্ট্রের অনেক অঙ্গরাজ্যই লকডাউনের বিধিনিষেধ শিথিলের মাধ্যমে স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফেরার পরিকল্পনা করছিল। কিন্তু নতুন জোয়ার শুরুর পর পরিস্থিতি বেগতিক দেখে বেশ কয়েকটি অঙ্গরাজ্যের গভর্নররা সে পরিকল্পনা থেকে পিছু হটার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্র নভেল করোনাভাইরাসের কাছে কতটা অসহায় হয়ে পড়েছে, তা দেশটির ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেসের প্রধান অ্যান্থনি ফাউসির কথাতেই ফুটে উঠেছে। গত সপ্তাহে ফাউসি বলেছিলেন, দেশজুড়ে এখনই কার্যকর প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নেয়া না হলে যুক্তরাষ্ট্রে দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা এক লাখে গিয়ে ঠেকতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রে করোনা শনাক্তের পরীক্ষা বাড়ানো হয়েছে, সেই সঙ্গে বেড়েছে করোনা পজিটিভ শনাক্তের হার। একই সঙ্গে কভিড-১৯ রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি করার হারও বেড়েছে।

গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে যে পরিমাণ করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে, তার শতাংশের ফল পজিটিভ এসেছে। আগের সপ্তাহে হার ছিল শতাংশ। গত সপ্তাহে অ্যারিজোনায় করোনা পজিটিভ শনাক্তের হার ছিল ২৪ শতাংশ। ফ্লোরিডায় ১৬ শতাংশ। আর নেভাডা, সাউথ ক্যারোলাইনা টেক্সাসে হার ছিল ১৫ শতাংশ।

যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত মোট ২৭ লাখ ৪০ হাজার কভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন লাখ ৩০ হাজার।

বিশ্বজুড়ে করোনা পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যাচ্ছে বলে সতর্ক করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মহাপরিচালক টেড্রোস অ্যাডহ্যানম গেব্রিয়েসুস। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, অতীতে করোনা সংক্রমণের প্রকোপ যতটা দেখা গেছে, সামনে তার চেয়েও ভয়াবহ সময় অপেক্ষা করছে। গত সপ্তাহে বিশ্বজুড়ে প্রতিদিন গড়ে লাখ ৬০ হাজারের বেশি কভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে বলে জানান তিনি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন