‘আজব কারখানা’ ছবিতে কাজের অভিজ্ঞতা দারুণ

করোনাকালে সংগীতশিল্পীদের অনেকেই এখনো ঘরবন্দি তবু থেমে নেই তাদের কার্যক্রম ঘরে থেকেই তৈরি করছেন নতুন সব গান শিল্পী লাবিক কামাল গৌরব তাই বর্তমানে আজব কারখানা নামে নতুন ছবির গানের কাজ নিয়ে বেশ ব্যস্ত সময় পার করছেন সম্প্রতি তিনি তার কাজ অন্যান্য বিষয় নিয়ে টকিজের সঙ্গে কথা বলেছেন সাক্ষাত্কার নিয়েছেন রাইসা জান্নাত

কেমন আছেন? করোনাকালের দিনযাপন নিয়ে জানতে চাই

আমি বাসায় আছি আমার একটা সুবিধা হলো বাসায় স্টুডিও আছে তাই গান করতে পারছি পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছি আগে তো ব্যস্ততার কারণে তাদের সঙ্গে এত সময় কাটানো হতো না

গান নিয়ে এখনকার ব্যস্ততা সম্পর্কে একটু বলবেন?

গত ঈদে অনেক আছে বাকি শিরোনামে একটা গান বের করেছি বাড়িতে বসেই করা ছাদে শুটিং করেছি এছাড়া করোনা নিয়ে শিল্পী মমতাজ আপার একটা গান করেছি আরো দু-একটি প্রজেক্টের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছি তবে মুহূর্তে বেশি ব্যস্ত আছি আজব কারখানা ছবির গানের কাজ নিয়ে

বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাই

আজব কারখানার নির্মাতা শবনম ফেরদৌসী সরকারি অনুদানের একটি ফিচার ফিল্ম এতে অভিনয় করেছেন ভারতীয় অভিনেতা পরমব্রত ছবির গল্পটা একজন রক স্টারকে নিয়ে গল্পটা এখনই বলতে চাই না দর্শকদের জন্য সারপ্রাইজ হিসেবে থাকুক তবে এটুকু বলব যে গল্পটা দারুণ এবং এটা একটা মিউজিক্যাল চলচ্চিত্র কারণে ছবিতে গানের অনেক প্রাধান্য রয়েছে আমি খুব আনন্দিত গত বছর দুই ধাপে ছবির শুটিং হয়েছে এখন সম্পাদনার কাজ চলছে বছর তো ছবি মুক্তির তেমন সুযোগ দেখছি না আশা করছি আগামী বছরের শুরুর দিকে হতে পারে একটা বিষয় বলতে চাই ছবিতে কাজ করে দারুণ অভিজ্ঞতা হয়েছে আমার আমি তো শুটিংয়ের মানুষ না কিন্তু মিউজিক ডিরেক্টর হিসেবে শুটিংয়ের সময় উপস্থিত ছিলাম আমার একটা গানে পরম লিপ সিং করেছে আমরা চেষ্টা করেছি বিস্তারিতভাবে কাজ করার পরম গিটার বাজায় এটা একটা উপরি পাওনা ছিল গানে কী কী কড বাজছে, কী হচ্ছে না হচ্ছেসবকিছু ভালোভাবে দেখার চেষ্টা করেছি সব মিলিয়ে খুব ভালো অভিজ্ঞতা সঞ্চয় হয়েছে

ছবিতে আপনার নিজের গান থাকছে কয়টি?

হেলাল হাফিজের কথায় দুটি গান থাকছে

একজন সংগীতশিল্পী হিসেবে করোনার প্রভাবে কী কী সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন?

আমার বাসায় স্টুডিও আছে কারণে আমি গান করতে পারছি কিন্তু মূল সমস্যাটা হলো লাইভ শো হচ্ছে না আমরা প্রচুর লাইভ শো করে অভ্যস্ত আমরা গারাজ আর্ট নামে একটা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত আছি গান বাজনা শুরু করেছিলাম বাপ্পাদা, অর্ণব, আদিত্য গান করেছিল বড় বড় আটিস্টদের নিয়ে রেগুলার শো করছিলাম কিন্তু কভিডের কারণে কার্যক্রম এখন আটকে আছে

আগামীতে মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা কেমন হতে পারে বলে মনে হচ্ছে?

ছয় মাসের মধ্যে যদি পরিস্থিতি মোটামুটি স্বাভাবিক হয়, তাহলে হয়তো আমরা কিছুটা বেঁচে যাব কিন্তু যদি এক-দুই বছর রকম চলতে থাকে, তাহলে দেশের প্রেক্ষাপটে শিল্পীদের অবস্থা খুব খারাপ হবে বিদেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে শিল্পীরা সমর্থন পান আমাদের এখানেও শিল্পকলার পক্ষ থেকে শিল্পীদের সহায়তা করা হয়েছে কিন্তু বাইরের দেশে রয়্যালটির জায়গাগুলো অনেক বছর ধরে গুছিয়ে নেয়া হয়েছে কারণে এসব দেশে শিল্পীরা টিকে থাকতে পারেন আমাদের এখানে অধিকাংশ শিল্পী লাইভ শো করে উপার্জন করেন সমাধান আমাদের কারো কাছেই নেই আগামীতে কী হবে সেটা স্পষ্টভাবে বলা সম্ভব হচ্ছে না এখন তবে একটা আশার জায়গা হলো ছয় মাসের মধ্যে অবস্থা মোটামুটি অনুকূলে এলে আমরা টিকে থাকতে পারব নয়তো খুব খারাপ অবস্থায় পড়তে হবে

কভিড-১৯ সংগীতক্ষেত্রে কোনো পরিবর্তন এনেছে কি?

ব্যস্ততার কারণে অনেক সময় অনেক কিছু করা হয়ে ওঠে না যেমন আমার নিজের ইউটিউব চ্যানেলটা গোছানো ছিল না সুযোগে আমি গুছিয়ে নিয়েছি আগের পুরনো ভিডিও খুঁজে বের করেছি বিভিন্ন অনুষ্ঠানের ফুটেজগুলো সিরিজ আকারে বের করব ভিডিও নিয়ে আমার তেমন ধারণা ছিল না কোয়ারেন্টিনে ইউটিউব দেখে দেখে ভিডিও সম্পাদনা শিখছি পাশাপাশি অন্যান্য দক্ষতা তৈরির চেষ্টা করছি আগে শুধু গানে নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম কিন্তু গানের সঙ্গে ভিডিও বা অন্যান্য অনেক কিছু যুক্ত করে অনলাইন প্লাটফরমে যে নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা যায়, সেগুলো নিয়ে তেমন ভাবনা কাজ করেনি কভিড ডিজিটালি দক্ষতা বৃদ্ধির সুযোগ তৈরি করেছে এটা করোনার একমাত্র ইতিবাচক দিক বলে মনে হচ্ছে আমার কাছে

গান নিয়ে আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা জানতে চাই

গান আমার কাছে প্রার্থনার মতো জীবনে গান থাকা জরুরি করোনাকালে নিজের মাথা স্থির রাখার ক্ষেত্রে গান একটা বড় অস্ত্র হিসেবে কাজ করছে আমার একটা বিষয়ে সবসময় মনোযোগ রয়েছে ইন্টারন্যাশনাল ফেস্টিভ্যাল করা বাইরের দেশে অবাংলাভাষী অডিয়েন্সের সামনে নিজের দেশকে আমরা খুব বেশি রিপ্রেজেন্ট করতে পারি না ওয়ার্ল্ড মিউজিক প্লাটফরমে নিজের দেশকে উপস্থাপন করার অনেক দিনের ইচ্ছা ২০১৫-তে সবচেয়ে বড় ফোক ফেস্ট ওম্যাডে আমরা অংশ নিয়েছিলাম দেশের প্রথম কোনো দল হিসেবে সেখানে পারফর্ম করেছিলাম এটা বড় একটা পাওয়া ছিল আমাদের পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে ওয়ার্ল্ড মিউজিকের রকম বড় বড় জায়গা রয়েছে যেখানে বাংলা গানকে পৌঁছে দেয়া সম্ভব বলে আমি মনে করি এটা অনেক দিনের স্বপ্ন আমার বলা যায় এটা একটা জার্নি

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন