হংকংয়ের জন্য চীনের
জাতীয় নিরাপত্তা
আইনের খসড়া
প্রকাশের পাঁচ
সপ্তাহের বেশি
পেরিয়ে গেলেও
ব্যবসায়িক দুনিয়ায়
এর সম্ভাব্য
প্রভাব সম্পর্কে
খুব একটা
উচ্চবাচ্য শোনা
যায়নি। কিন্তু চীনের
আইনসভা ন্যাশনাল
পিপল’স
কংগ্রেসে খসড়াটি
চূড়ান্তভাবে পাস
হয়ে যাওয়ার
পর সবাই
নড়েচড়ে বসেছেন। বিতর্কিত
এ আইন
এশিয়ার ফিন্যান্সিয়াল
হাব হিসেবে
হংকংয়ের ভবিষ্যৎ
নির্ধারণে কীরূপ
প্রভাব ফেলবে,
খাতসংশ্লিষ্টরা সে
বিষয়ে নিজেদের
মতামতও প্রকাশ
করছেন।
এ মুহূর্তে যে
প্রশ্নটি সবচেয়ে
বড় হয়ে
দাঁড়িয়েছে সেটি
হলো, নতুন
আইনটির মাধ্যমে
যে ক্ষমতা
চীনের ন্যাশনাল
কমিউনিস্ট পার্টি
পেল, তা
দিয়ে তারা
হংকংয়ের ওপর
কতটা খড়্গহস্ত
হয়। এখন পর্যন্ত
আইনটির যতটুকু
প্রকাশ করা
হয়েছে, তার
ওপর ভিত্তি
করে কিছু
গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে
আলোকপাত করেছেন
বিনিয়োগকারী, ব্যাংকার,
অর্থনীতিবিদ ও
ব্যবসায়িক নেতারা।
তারা বলছেন, নতুন
নিরাপত্তা আইনটির
কারণে হংকংয়ের
মূলধনি বাজারে
নাটকীয় কোনো
পরিবর্তন আসবে
না। তবে শেয়ারবাজারে
স্বল্পমেয়াদি প্রভাব
দেখা যেতে
পারে। এছাড়া এ
আইনের প্রতিক্রিয়ায়
যুক্তরাষ্ট্র কী
পদক্ষেপ নিচ্ছে,
তার ওপর
নির্ভর করে
চীনা ইউয়ান
ও হংকং
ডলারের মান
ওঠানামা করতে
পারে।
নতুন আইনটি জারির
পর হংকংয়ের
মূলধনি বাজারে
চীনা ক্রেতাদের
অংশগ্রহণ বেড়ে
যাওয়ার আশা
করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা
আরো বলছেন,
দীর্ঘমেয়াদে হিসাব
করলে হংকংয়ের
সম্পত্তির বাজারে
রিস্ক প্রিমিয়াম
বেড়ে যেতে
পারে। এতে সম্পত্তির
দামে মন্দা
ভাব দেখা
যেতে পারে
এবং এ
খাতে বিনিয়োগ
কমে যেতে
পারে। সেক্ষেত্রে মূলধন
হংকংয়ের বাইরে
চলে যাওয়ার
ঝুঁকি রয়েছে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, নভেল
করোনাভাইরাসের প্রভাবে
সারা বিশ্বের
মতো হংকংয়ের
অর্থনীতিও বেশ
ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ
অবস্থায় নতুন
আইনটির বাস্তবায়ন,
বিদ্রোহীদের প্রতিক্রিয়া
ও ট্রাম্প
প্রশাসনের সম্ভাব্য
প্রতিশোধমূলক প্রতিক্রিয়া
নিয়ে সৃষ্ট
অনিশ্চয়তা হংকংয়ের
অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার
প্রক্রিয়ায় বাধা
হয়ে দাঁড়াতে
পারে।
অনেকে মনে করছেন,
আন্তর্জাতিক যেসব
কোম্পানি হংকংকে
তাদের এশীয়
হাব হিসেবে
ব্যবহার করে,
তারা এখন
স্থানীয় রাজনীতির
বিষয়ে আগ্রহ
হারিয়ে ফেলবে। ফলে
শহরটির সঙ্গে
তাদের সম্পৃক্ততা
অনেক কমে
যাবে। এছাড়া যেসব
প্রতিষ্ঠান তাদের
তথ্যভাণ্ডার হংকংয়ে
স্থাপন করেছে,
তারাও এখন
বিকল্প গন্তব্য
খুঁজতে পারে।
লেজিস্লেটিভ কাউন্সিল অব
হংকংয়ের সদস্য
ও ফ্যাশন
রিটেইলার জি২০০০
অ্যাপারেল লিমিটেডের
প্রতিষ্ঠাতা মাইকেল
তিয়েন বলেছেন,
কেন্দ্রীয় সরকার
আমাদের ব্যবসায়ীদের
রাজনীতি নিয়ে
মাথা ঘামাতে
নিষেধ করেছে। বরং
কেবল অর্থনীতি
পুনর্গঠন ও
মানুষের জীবনযাত্রার
মানোন্নয়নে নজর
দিতে বলেছে। মানুষজন
বাক্স্বাধীনতা নিয়ে
কথা বলছে। আমি
মনে করি
না, তারা
এতটা কঠোর
হবে। আমার বিশ্বাস,
তারা কদাচিৎই
এ আইন
ব্যবহার করবে।’
ব্রিটিশ বহুজাতিক বিনিয়োগ
ব্যাংক বার্কলেসের
প্রধান নির্বাহী
কর্মকর্তা (সিইও)
জেস স্ট্যালি
বলেছেন, ‘আমি এসব
রাজনৈতিক বিষয়ে
নাক গলাতে
চাই না। আমরা
কেবল চীন
বা হংকং
নয়, আমরা
এ দুটি
দেশসহ এশিয়ার
সব গ্রাহকের
পক্ষে রয়েছি। তবে
বর্তমান রাজনৈতিক
পরিস্থিতি আসলেই
বেশ জটিল। কিন্তু
এ বিষয়ে
এখনো আমরা
কোনো বিবৃতি
দিইনি, ভবিষ্যতেও
দেব না। একটি
শীর্ষ ব্রিটিশ
ব্যাংক হিসেবে
আমরা যুক্তরাজ্যের
অভ্যন্তরীণ বিষয়
ও ব্রিটিশ
সরকারের অবস্থান
সম্পর্কেই মাথা
ঘামাব।’
সিডিনিতে ট্রিবেকা ইনভেস্টমেন্ট
পার্টনার্সের পোর্টফোলিও
ম্যানেজার হিসেবে
কর্মরত জুন
বেই লিউ
বলেছেন, ‘আমি মনে
করি, বর্তমান
পরিস্থিতিতে হংকংয়ে
ও হংকংয়ের
বাইরে কার্যক্রম
পরিচালনা করা
বেশ জটিল
হবে। একজন বিনিয়োগকারী
হিসেবে এ
ধরনের পরিস্থিতিতে
আপনি যা
করবেন তা
হলো, রিস্ক
প্রিমিয়াম বাড়িয়ে
দেয়া। দীর্ঘমেয়াদে আপনি
যেটা দেখবেন,
এশিয়ার সেন্ট্রাল
হাব হওয়া
সত্ত্বেও অনেক
আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান
হংকং ছাড়ছে।’
ব্লুমবার্গ।
চীনের নিরাপত্তা আইনের
কারণে হংকংয়ের
নাগরিকদের সার্বভৌমত্বের
অধিকার হরণ
হয় কিনা,
তা সময়ই
বলবে। তবে একথা
মোটামুটি নিশ্চিত
যে পরিবর্তিত
প্রেক্ষাপটে এশিয়ার
বিজনেস হাব
হিসেবে হংকংয়ের
অবস্থানে কিছুটা
হলেও পরিবর্তন
আসবে।