প্রথম প্রান্তিক

কভিড-১৯-এর প্রভাব পড়েনি বিএটিবিসির ব্যবসায়

নিজস্ব প্রতিবেদক

কভিড-১৯-এর কারণে ওষুধ খাদ্যের মতো অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ছাড়া দেশের সব খাতের ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। তবে এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম তামাক খাত। ধূমপায়ীদের ক্ষেত্রে কভিড-১৯-এর ঝুঁকি তুলনামূলক বেশি থাকলেও দেশের সবচেয়ে বড় তামাক বিপণন কোম্পানি ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানি লিমিটেড (বিএটিবিসি) চলতি ২০২০ হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) রেকর্ড পরিমাণ ব্যবসা করেছে। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির ব্যবসা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৩৩ শতাংশ বেড়েছে। আর সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী মুনাফা বেড়েছে ৪৭ শতাংশ।

প্রথম প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, সময়ে বিএটিবিসির বিক্রি হয়েছে হাজার ৬৩২ কোটি টাকা। আগের বছরের একই সময়ে প্রতিষ্ঠানটির বিক্রির পরিমাণ ছিল হাজার ৪৯৫ কোটি টাকা। বিক্রি বাড়ার কারণে কোম্পানিটির কাছ থেকে সরকারের রাজস্ব আয়ও বেড়েছে। চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটি সম্পূরক শুল্ক মূসক বাবদ হাজার ৮২২ কোটি টাকা সরকারের কোষাগারে দিয়েছে। যেখানে এর আগের বছরের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল হাজার ২৬৩ কোটি টাকা। এছাড়া বিলম্বিত চলতি কর মিলিয়ে প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটি ৩২৪ কোটি টাকা ব্যয় করেছে। যেখানে এর আগের বছরের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ২১২ কোটি টাকা। চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী মুনাফা হয়েছে ৩০৪ কোটি টাকা। আগের বছরের একই সময়ে মুনাফা ছিল ২০৬ কোটি টাকা। প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১৬ টাকা ৮৭ পয়সা। এর আগের বছরের একই সময়ে ইপিএস ছিল ১১ টাকা ৪৪ পয়সা। বছরের ৩১ মার্চ শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ২১৫ টাকা ৭২ পয়সা।

সর্বশেষ ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০১৯ হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ৪০০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে বিএটিবিসির পরিচালনা পর্ষদ। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৫১ টাকা ৩৭ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৫৫ টাকা ৬২ পয়সা।

এর আগের ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ৭০০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছিল বিএটিবিসি। এর মধ্যে ২০০ শতাংশ স্টক ৫০০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ। আলোচ্য সময় কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ সভায় অনুমোদিত পরিশোধিত মূলধন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কোম্পানিটি অনুমোদিত মূলধন ৬০ কোটি টাকা থেকে আট গুণ বাড়িয়ে ৫৪০ কোটি টাকায় উন্নীত করে। ২০১৭ হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের ৬০০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয় বিএটিবিসি। সে বছর ইপিএস হয় ১৩০ টাকা ৫০ পয়সা। ২০১৬ হিসাব বছরেও ৬০০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ পেয়েছিলেন কোম্পানিটির শেয়ারহোল্ডাররা। 

১৯৭৭ সালে দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া বিএটিবিসির অনুমোদিত মূলধন ৫৪০ কোটি টাকা। বর্তমানে পরিশোধিত মূলধন ১৮০ কোটি টাকা। রিজার্ভে রয়েছে হাজার ৩৯৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা। কোম্পানির মোট ১৮ কোটি শেয়ারের মধ্য ৭২ দশমিক ৯১ শতাংশ রয়েছে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের কাছে। এছাড়া সরকারের কাছে দশমিক ৬৪ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ১০ দশমিক ১৫, বিদেশী বিনিয়োগকারীদের কাছে ১৩ দশমিক ৭৪ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে বাকি দশমিক ৫৬ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল বিএটিবিসির শেয়ারের সর্বশেষ দর ছিল ৯০৭ টাকা ৬০ পয়সা। গত এক বছরে শেয়ারটির সর্বনিম্ন সর্বোচ্চ দর ছিল যথাক্রমে ৮২১ টাকা ৬০ পয়সা হাজার ৩৭৪ টাকা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন