মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীল বাংলাদেশের শ্রমবাজার। করোনা সংক্রমণকালে নতুন শ্রমিক নিচ্ছে না দেশগুলো। বরং এসব দেশে থাকা বাংলাদেশী শ্রমিকদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে। এ অবস্থায় ফেরত আসা শ্রমিকদের জন্য জাতিসংঘের কাছে সহযোগিতা চাইল বাংলাদেশ।
গতকাল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতিসংঘ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। জাতিসংঘের পক্ষ থেকে আবাসিক সমন্বয়কারী মিয়া সেপ্পোর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করে। এ সময় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। করোনা মোকাবেলার জন্য বাংলাদেশ ও জাতিসংঘের মধ্যে দৃঢ় অংশীদারিত্বের ওপর জোর দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
করোনা সংক্রমণের কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রধান অবলম্বন বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও তৈরি পোশাক খাতে নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে বৈঠকে উদ্বেগ প্রকাশ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। ফিরে আসতে থাকা প্রবাসী শ্রমিকদের নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি তাদের পুনর্দক্ষতা বৃদ্ধি, পুনঃকর্মসংস্থান এবং পুনঃসমন্বয়ের জন্য জাতিসংঘের সহযোগিতা চান। এছাড়া বাংলাদেশের বিশাল জনগোষ্ঠীর বিবেচনায় জাতিসংঘের প্রতিক্রিয়া ও পুনরুদ্ধার তহবিল থেকে যথেষ্ট বরাদ্দ পাওয়া উচিত বলেও আশা প্রকাশ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বৈঠকে রোহিঙ্গাদের বিষয়ে সহযোগিতার জন্য জাতিসংঘকে ধন্যবাদ জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় রোহিঙ্গারা সমুদ্রে ও স্থলপথে বিপত্সংকুল যাত্রা করছে, যার পরিণতি হচ্ছে ভয়াবহ।’ তিনি রাখাইনে প্রত্যাবাসন সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টির জন্য মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানান। এছাড়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশের ঝুঁকি ও উন্নত দেশগুলোর দায়িত্বের বিষয়টি বৈঠকে উল্লেখ করেন।
আবাসিক প্রতিনিধি মিয়া সেপ্পো বলেন, ‘কভিড-১৯-এর আর্থসামাজিক ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার জন্য জাতিসংঘ বাংলাদেশকে সার্বিক সহায়তা দেবে।’
রোহিঙ্গা বিষয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে আরো গঠনমূলক কাজ করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন মিয়া সেপ্পো। এছাড়া জলবায়ু অভিযোজনে বিশ্বের বাংলাদেশের কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।