সংবাদ সম্মেলনে দাবি

করোনার ভ্যাকসিন আবিষ্কারে সফলতার পথে গ্লোব বায়োটেক

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশের অন্যতম ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড নভেল করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কারে অগ্রগতির খবর দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা বলেছেন, তাদের ভ্যাকসিনটি প্রাথমিক অ্যানিমেল ট্রায়ালে অ্যান্টিবডি তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। তবে এটি মানবদেহে ট্রায়ালের আগে অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন আছে। গতকাল রাজধানীর তেজগাঁওয়ে গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তথ্য জানান প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা।

ভ্যাকসিনটির বর্তমান অবস্থাকে বিরাট অগ্রগতি হিসেবে দাবি করে প্রতিষ্ঠানটি জানায়, এখন ভ্যাকসিনটি দ্বিতীয় ধাপে অ্যানিমেল মডেলে ট্রায়াল করা হবে। এজন্য ছয় থেকে আট সপ্তাহ সময় লাগবে। এর পরই এটি মানবদেহে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে যাওয়া যাবে। তবে মানবদেহে ট্রায়ালে যেতে বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদের (বিএমআরসি) অনুমতি লাগবে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ছয় থেকে আট সপ্তাহ পর ভ্যাকসিনটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে যাওয়ার জন্য সরকারি কর্তৃপক্ষের কাছে অনুমতি চাইবে গ্লোব। অনুমতি পেলে তারা ট্রায়ালে যাবে। অনুমতির ওপর নির্ভর করবে ভ্যাকসিনটি কত দ্রুত বাজারে নিয়ে আসা সম্ভব।

গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ডিপার্টমেন্টের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কাজ শুরু করার পর প্রাথমিকভাবে অ্যানিমেল মডেলে এটা সফল হয়েছে। এখন মানবদেহেও এটা সফলভাবে কাজ করবে বলে তারা আশাবাদী। বিষয়টি নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি এখন সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর কাছে যাবে। এরপর সরকারি কর্তৃপক্ষের দেয়া গাইডলাইন অনুযায়ী পরবর্তী ধাপগুলো সম্পন্ন করবে। 

এদিকে গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের এনসিবিআই ভাইরাস ডাটাবেজ অনুযায়ী ৩০ জুন পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী হাজার ৭৪৩টি সম্পূর্ণ জিনোম সিকোয়েন্স জমা হয়েছে। যার মধ্যে বাংলাদেশ থেকে জমা হয়েছে ৭৬টি। এসব সিকোয়েন্স বায়োইনফরম্যাটিক্স টুলের মাধ্যমে পরীক্ষা করে গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড তাদের ভ্যাকসিন টার্গেট নিশ্চিত করে, যা যৌক্তিকভাবে ভৌগোলিক অঞ্চলে অধিকতর কার্যকরী হবে বলে আশা করছে গ্লোব বায়োটেক।

প্রতিষ্ঠানটির দাবি, ভ্যাকসিন টার্গেটের সম্পূর্ণ কোডিং সিকোয়েন্স এনসিবিআই ভাইরাস ডাটাবেজে জমা দেয়া হয়েছে, যা এরই মধ্যে এনসিবিআই কর্তৃক স্বীকৃত প্রকাশিত হয়েছে।

বিষয়ে গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. হারুনুর রশিদ বলেন, ভ্যাকসিনটি সুরক্ষা কার্যকারিতা নিরীক্ষার লক্ষ্যে আমরা ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। সুরক্ষা কার্যকারিতা পরীক্ষায় সরকারের সর্বাত্মক সহযোগিতা একান্তভাবে প্রয়োজন।

তিনি আরো বলেন, আমরা এটা নিয়ে খুব আশান্বিত। যেহেতু অ্যানিমেল টেস্টে অ্যান্টিবডি পেয়েছি, সেহেতু বিষয়টি ডিক্লেয়ার দিয়ে দিয়েছি। এছাড়া কভিড-১৯-এর ভ্যাকসিন আবিষ্কারের পথে আছি, বিষয়টি মানুষের জানা দরকার আছে বলেও মনে করেন তিনি। তবে আরো বহু ধাপ রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা সেগুলো স্টেপ বাই স্টেপ করে ফেলব। এছাড়া বিএমআরসি যখন আমাদের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অনুমতি দেবে, তখন বিষয়টি ঔষধ প্রশাসনকেও জানানো হবে। আর যদি এটা সফল হয়, তাহলে তো বাংলাদেশের নাম বিশ্বের মানচিত্রে উঠে গেল।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন