কুয়েতে মানব পাচারের অভিযোগে লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য কাজী শহীদ ইসলাম পাপুলকে গ্রেফতারের ঘটনায় দেশটিতে জনশক্তি রফতানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। গতকাল সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, কুয়েতের তদন্তে সেখানকার সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, রাজনীতিবিদদের সম্পৃক্ততা বেরিয়ে এসেছে। তাদের সম্পৃক্ততা-সহযোগিতা ছাড়া এ কাজগুলো হতো না। সুতরাং তারাও সমভাবে দায়ী। এ ঘটনায় আমাদের শ্রমবাজারে অর্থাৎ কুয়েতে কর্মী রফতানির ক্ষেত্রে আমাদের ওপর কোনো প্রভাব পড়বে বলে আমি মনে করি না।
জাতীয় সংসদের সামনে বিএনপির সংসদ সদ্যদের বাজেটের কপি ছেঁড়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপি এমন একটি রাজনৈতিক দল, যারা পেট্রল বোমা নিক্ষেপ করে মানুষকে হত্যা করেছিল। পেট্রল বোমা নিক্ষেপের কর্মসূচি যে রাজনৈতিক দল দেয়, সংসদের সামনে গিয়ে তাদের বাজেটের কপি ছিঁড়ে ফেলা খুব স্বাভাবিক। যে উদ্ধত আচরণ তারা সবসময় করে আসছে, সেটিরই নতুন বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে সংসদের সামনে গিয়ে বাজেটের কপি ছিঁড়ে ফেলা।
তিনি বলেন, বিএনপি যে এবারই বাজেট প্রত্যাখ্যান করছে, তা তো নয়। গত ১১ বছর ধরে প্রতিবারই তারা বাজেট প্রত্যাখ্যান করছে এবং প্রতিবারই বলেছে বাজেট বাস্তবায়নযোগ্য না, জনগণের কল্যাণে আসবে না ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু ১১ বছর ধরে সব বাজেটই বাস্তবায়িত হয়েছে এবং বাস্তবায়নের হার ৯৭-৯৮ শতাংশ। সেই বাজেটগুলো বাস্তবায়নের পরিপ্রেক্ষিতে দেশের দারিদ্র্য কমে অর্ধেকে নেমেছে, মানুষের মাথাপিছু আয় সাড়ে তিন গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, জিডিপি প্রায় চার গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশ খাদ্যে উদ্বৃত্ত হয়েছে, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের পথে উন্নীত হয়েছে। এটিই হচ্ছে বাস্তবতা। কিন্তু তারা কোনোবারই বাজেট গ্রহণ করতে পারেনি।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি বলেছে, মাত্র একদিন বাজেট নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু আসলে তা নয়, পুরো বাজেট সেশনেই কিন্তু বাজেটের ওপর বক্তৃতা হয়েছে। তারা নিজেরা বাজেট অধিবেশনে অংশগ্রহণ করেনি, বাজেট অধিবেশনে যে আলোচনা হয়েছে সেটিও ঠিকমতো খেয়াল রাখেনি, সে কারণেই তারা এ ধরনের ভুল বক্তব্য দিয়েছে। এ পরিস্থিতিতে প্রতিদিন সংসদ চালানো সম্ভবপর নয়। পৃথিবীর কোনো দেশে সেটি হচ্ছে না। আমাদের দেশে এখন নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রায় তুঙ্গে, প্রতিদিন গড়ে চার হাজার মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে, গড়ে ৪০ জন বা তার বেশি মানুষ মৃত্যুবরণ করছে। এ সময় তো সংসদ প্রতিদিন চালানো সম্ভবপর নয়। এ বাস্তবতা তারা বুঝেও এ ধরনের অসত্য-অপ্রাসঙ্গিক কথাগুলো বলে।
এর আগে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ভিডিও কনফারেন্সে চট্টগ্রামের সল্টগোলায় ৫০ শয্যার বিজিএমইএ কভিড-১৯ ফিল্ড হাসপাতাল উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত হন। অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, বৈশ্বিক মহামারী মোকাবেলায় সমন্বিত প্রচেষ্টার বিকল্প নেই।