নারীর ক্ষমতায়নে ভূমিকা রাখছে স্মার্টফোন

বণিক বার্তা ডেস্ক

 স্মার্টফোন প্রযুক্তিনির্ভর বিশ্বকে উল্লেখযোগ্য মানুষের হাতের মুঠোয় এনে দিয়েছে তৈরি হয়েছে সমতাভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা, সৃষ্টি হয়েছে নারীর ক্ষমতায়ন গবেষণাও বলছে, নারীদের হাতে স্মার্টফোন আসায় তারা এখন আগের চেয়ে বেশি এগিয়ে রয়েছেন শক্তিশালী একটি মাধ্যম হিসেবে এটি নারীর ক্ষমতায়নে সহযোগী হিসেবে কাজ করছে ফলে টেকসই উন্নয়নের ক্ষেত্রে এটি অন্যতম হাতিয়ার হতে পারে কানাডার এমসি গিল ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব অক্সফোর্ড ইতালির বক্কোনি ইউনিভার্সিটির করা এক যৌথ গবেষণায় তথ্য উঠে এসেছে খবর এএনআই

বিশ্বের ২০৯টি দেশের ১৯৯৩ থেকে ২০১৭ সালের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণের মাধ্যমে গবেষণা করা হয়েছে যেটি প্রসিডিংস অব ন্যাশনাল একাডেমি অব দ্য সায়েন্সেসে প্রকাশিত হয়েছে গবেষণায় দেখা গেছে, স্মার্টফোনের ব্যবহার সুস্বাস্থ্য, জেন্ডার সমতা নিশ্চিত করা এবং দরিদ্রতা দূরীকরণসহ অনেক উন্নয়ন সূচকের সঙ্গে জড়িত

স্মার্টফোন কীভাবে নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করছে, এটি বোঝার জন্য গবেষকরা অ্যাঙ্গোলা, বুরুন্ডি, ইথিওপিয়া, মালাবি, তানজানিয়া, উগান্ডা জিম্বাবুয়ের প্রায় এক লাখ নারীর ওপর এককভাবে গবেষণা করেছেন ২০১৫ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে এসব বিশ্লেষণ করা হয় সাব-সাহারা অঞ্চলের এসব দেশে দেখা গেছে, নারীর উৎপাদনশীলতা কমেছে অন্যদিকে শিশু মাতৃমৃত্যুর হার এখনো অনেক বেশি তবে সময়ে মোবাইল ফোনের ব্যবহার দ্রুত বেড়েছে

গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব নারী মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন, তারা গর্ভনিরোধের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে অন্যদের তুলনায় শতাংশ এগিয়ে থাকেন আর আধুনিক গর্ভনিরোধ পদ্ধতি গ্রহণের ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকেন শতাংশ অন্যদিকে কোথায় নারীদের সম্মানের সঙ্গে এইচআইভি পরীক্ষা করানো হয়, সেটা যাদের মোবাইল নেই তাদের চেয়ে শতাংশ বেশি জানেন এসব নারী

যদিও তুলনাটা খুব একটা বড় কিছু নয় তবে শহরের চেয়ে গ্রামের হিসাবে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন গবেষকরা এছাড়া ঘরের অন্যান্য সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রেও মোবাইল ব্যবহার করা নারীরা অন্যদের তুলনায় এগিয়ে থাকেন বলে গবেষণায় দেখা গেছে

গবেষকরা বলছেন, মোবাইল ফোন ব্যবহারের মাধ্যমে নারীরা যেভাবে তাদের জানাশোনার পরিধি বাড়াচ্ছেন এবং সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হচ্ছেন সেটি পক্ষান্তরে ম্যাক্রো লেভেলের একটি ফলাফল এটি দরিদ্র প্রত্যন্ত জনগোষ্ঠীর নারীদের ওপর একটা বড় ধরনের ইতিবাচক ফল তৈরি করছে

তবে মোবাইল ফোন নারীদের ক্ষমতায়নে সহযোগিতা করলেও জেন্ডার এবং আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে সেটিতেও মোটামুটি একটি বৈষম্য রয়েছে যেমনখুব কমসংখ্যক নারীর নিজস্ব মোবাইল ফোন রয়েছে আবার যাদের রয়েছে, তারা পুরুষের তুলনায় খুব কম সময়ে ব্যবহার করতে পারেন এছাড়া পুরুষের তুলনার নারীদের তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পর্কে কম দক্ষতা থাকার কারণেও এক ধরনের বৈষম্য সৃষ্টি হয়

এমসি ইউনিভার্সিটির সোসিওলজি সেন্টার অন পপুলেশন বিভাগের অধ্যাপক লুকা মারিয়া পেসান্দো মনে করেন, নারীদের ক্ষেত্রে মোবাইল ফোন ব্যবহারে আমাদের পরামর্শ হলো প্রযুক্তিসহ এটি ব্যবহার করা হলে শিক্ষার প্রসার, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মতো বিষয়গুলোর পরিপূরক হিসেবে কাজ করবে আর এজন্যই নারীদের মোবাইল ব্যবহারের সঙ্গে দ্বিতীয় ধাপে প্রযুক্তিগত অভিজ্ঞতা দক্ষতার ওপরও জোর দেয়া হয়েছে গবেষণায়

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন