রাজস্ব বাড়লেও ডিমান্ড চার্জের প্রভাবে মুনাফা কমেছে তিতাস গ্যাসের

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) গত বছর তিতাস গ্যাসের ন্যূনতম চার্জ আদায় হায়ার হিটিং ভ্যালু সমন্বয় পদ্ধতিতে আংশিক পরিবর্তন আনে। ফলে চলতি ২০১৯-২০ হিসাব বছরের প্রথম নয় মাসে (জুলাই-মার্চ) আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় রাজস্ব আয় ২৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ বাড়লেও রাষ্ট্রায়ত্ত গ্যাস সঞ্চালন কোম্পানিটির ৭৫ কোটি টাকা করপরবর্তী মুনাফা কমে গেছে।

চলতি হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, ২০১৯ সালের জুলাই থেকে বছরের মার্চ পর্যন্ত তিতাস গ্যাসের রাজস্ব আয় হয়েছে ১৩ হাজার ৫৪৮ কোটি টাকা। যেখানে এর আগের বছরের একই সময়ে রাজস্ব আয় হয়েছিল ১০ হাজার ৬২০ কোটি টাকা। কিন্তু ন্যূনতম চার্জ আদায় হায়ার হিটিং ভ্যালু সমন্বয় পদ্ধতিতে পরিবর্তনের কারণে চলতি হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে তিতাস গ্যাসে গ্রস মুনাফা দাঁড়িয়েছে ৩৬৫ কোটি টাকা। যেখানে এর আগের বছরের একই সময়ে গ্রস মুনাফা ছিল ৫৬৪ কোটি টাকা। বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে কোম্পানিটির করপরবর্তী মুনাফা হয়েছে ২০৮ কোটি টাকা। যেখানে এর আগের বছরের একই সময়ে কোম্পানিটির মুনাফা হয়েছিল ২৮৪ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির মুনাফা কমেছে ২৬ দশমিক ৫৬ শতাংশ। চলতি হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে টাকা ১১ পয়সা, যা এর আগের বছরের একই সময়ে ছিল টাকা ৮৭ পয়সা।

বিইআরসির নতুন নির্দেশনার কারণে মুনাফা কমেছে বলে জানিয়েছেন তিতাস গ্যাসের কর্মকর্তারা। তাদের মতে, তিতাস গ্যাসের ন্যূনতম চার্জ আদায় হায়ার হিটিং ভ্যালু সমন্বয়সংক্রান্ত বিদ্যমান পদ্ধতিতে পরিবর্তনের কারণে গ্রাহকের অনুমোদিত মাসিক ন্যূনতম লোড এবং প্রকৃত গ্যাস ব্যবহারের মধ্যে পার্থক্যজনিত রাজস্ব তিতাস গ্যাসকে ন্যূনতম চার্জ হিসেবে পরিচালন আয়ে অন্তর্ভুক্ত করতে হচ্ছে। পরিচালন আয় হিসেবে দেখাতে হচ্ছে হায়ার হিটিং চার্জকেও। যদিও দীর্ঘদিন ধরে গ্রাহকের প্রকৃত গ্যাস ব্যবহারের পরিমাণ কম হলেও ন্যূনতম চার্জের মাধ্যমে বেশি বিল আদায় এবং হায়ার হিটিং ভ্যালু (এইচএইচভি) বা গ্যাসের তাপন মূল্য সমন্বয় থেকে প্রাপ্ত আয়কে গ্যাস বিক্রির রাজস্বে অন্তর্ভুক্ত করে আসছিল তিতাস গ্যাস। পরিশোধনের মাধ্যমে গ্যাসের বিশুদ্ধতার হার বাড়ানোর প্রক্রিয়াকে হায়ার হিটিং ভ্যালু বলা হয়।

দেশে মোট বিতরণকৃত গ্যাসের ৫৬ দশমিক ১৭ শতাংশই হয় তিতাসের মাধ্যমে। তিতাসের গ্যাস বিক্রির পরিমাণ পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১৮-১৯ হিসাব বছরে হাজার ৭৫৭ কোটি ২৮ লাখ ঘনমিটার গ্যাস ক্রয়ের বিপরীতে হাজার ৬৫৬ কোটি ৭৬ লাখ ঘনমিটার বিক্রি করেছে কোম্পানিটি। এর আগে ২০১৭-১৮ হিসাব বছরে কোম্পানিটি হাজার ৭১৫ কোটি ৪৫ লাখ ঘনমিটার গ্যাস কিনে হাজার ৬৯৬ কোটি ১৭ লাখ ঘনমিটার বিক্রি করেছিল। হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে তিতাসের গ্যাস বিক্রি কমেছে ৩৯ কোটি ৪১ লাখ ঘনমিটার।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন