করাচিতে পাকিস্তান স্টক এক্সচেঞ্জে সশস্ত্র জঙ্গি হামলায় দুই বেসামরিকসহ অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এ সময় নিরাপত্তারক্ষীদের গুলিতে চার হামলাকারীর সবাই নিহত হয়েছে। খবর দ্য ডন।
পুলিশের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, হামলাকারীরা গ্রেনেড ও স্বয়ংক্রিয় রাইফেল নিয়ে হামলা চালায় ও পাকিস্তান স্টক এক্সচেঞ্জ কম্পাউন্ডে প্রবেশের চেষ্টা করে। অত্যন্ত সুরক্ষিত কম্পাউন্ডটিতে বেশ কয়েকটি ব্যাংকের সদর দপ্তর রয়েছে। হামলার ঘটনায় পুলিশের একজন উপপরিদর্শক ও দুজন নিরাপত্তাকর্মী নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন সাতজন, যাদের মধ্যে তিনজন পুলিশ কর্মকর্তা রয়েছেন।
প্রাথমিক প্রতিবেদনগুলোয় বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় সকাল ১০টার কিছু আগে চার জঙ্গি গাড়ি থেকে নেমে গ্রেনেড বিস্ফোরণ ঘটায়। এরপর স্টক এক্সচেঞ্জ ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করে ও এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এতে অন্তত দুজন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত ও অনেকে আহত হয়েছেন।
একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানান, পাঁচটি মৃতদেহ ও আহত সাতজনকে করাচির একটি সিভিল হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। পাকিস্তানের এলিট নিরাপত্তা বাহিনী রেঞ্জার্স বলেছে, হামলা শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ ও রেঞ্জার্সের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান এবং চার হামলাকারীর সবাইকে হত্যা করেন। এখন ওই এলাকায় একটি ‘ক্লিয়ারেন্স অপারেশন’ চলছে বলে জানিয়েছেন তারা। ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র ও হ্যান্ড গ্রেনেড উদ্ধার করার কথাও জানিয়েছে রেঞ্জার্স।
পাকিস্তান স্টক এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফররুখ খান হামলার ঘটনাটিকে ‘গুরুতর ও দুর্ভাগ্যজনক’ বলে বর্ণনা করেছেন। নভেল করোনাভাইরাসজনিত পরিস্থিতির কারণে স্টক এক্সচেঞ্জ ভবনে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় মানুষ কম ছিল বলে তিনি জানান।
এদিকে সিন্ধু প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মুরাদ আলী শাহ্ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে একে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা ও অর্থনীতির ওপর হামলার অনুরূপ বলে মন্তব্য করেছেন। রাষ্ট্রবিরোধী পক্ষগুলো করোনা পরিস্থিতির সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করছে বলে এক বিবৃতিতে অভিযোগ করেছেন তিনি। হামলা শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার জন্য পুলিশ ও রেঞ্জার্সের প্রশংসা করেছেন তিনি। পাশাপাশি তিনি আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে সজাগ থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।
সিন্ধুর গভর্নর ইমরান ইসমাইলও হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, যেকোনো মূল্যে সিন্ধুকে রক্ষা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ তিনি।
গত ১৯ জুন সিন্ধু প্রদেশে বোমা ও গ্রেনেড হামলার দুটি পৃথক ঘটনায় নিরাপত্তা কর্মীসহ অন্তত চারজন নিহত হন। ঘটনা দুটির একটি ঘটে ঘোটকী শহরে, অন্যটি করাচিতে। এর মধ্যে ঘোটকীর একটি বাজারে রেঞ্জার্সের একটি গাড়ির কাছে বোমা বিস্ফোরিত হলে বাহিনীটির দুজন সদস্য প্রাণ হারান। অন্যদিকে করাচিতে গ্রেনেড হামলা চালানো হয় একটি সরকারি অফিসের সামনে।