কয়েকদিন আগে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেড়ে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরে পেঁয়াজের দাম কমে গিয়েছিল। সম্প্রতি ঠিক উল্টো চিত্র দেখা গেছে বাজারটিতে। তিনদিনের ব্যবধানে হিলিতে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম পাইকারি বাজারে কেজিপ্রতি ৫ টাকা বেড়েছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, চাহিদার তুলনায় পণ্যটির সরবরাহ কম থাকায় ও দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজের দাম আগের তুলনায় বেড়ে যাওয়ায় ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজের দামও বাড়তির দিকে রয়েছে।
গতকাল হিলি পাইকারি আড়তগুলো ঘুরে দেখা গেছে, আমদানি করা প্রতি কেজি পেঁয়াজ মানভেদে ২০-২১ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। তিনদিন আগেও আমদানি করা প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১৫-১৬ টাকায় বিক্রি হয়েছিল।
হিলি বাজারে পেঁয়াজ সরবরাহকারী আইয়ুব হোসেন বণিক বার্তাকে বলেন, গত সপ্তাহে হিলিতে ভালো মানের প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১৫-১৬ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। এ সময় তুুলনামূলক নিম্নমানের পেঁয়াজের দাম আরো কমে কেজিপ্রতি ১১-১২ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। এর মূল কারণ এক সপ্তাহ আগেও পণ্যটির চাহিদা কম ছিল। তবে সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে লকডাউন কিছুটা শিথিল করা হয়েছে। ফলে ব্যবসা-বাণিজ্য অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে উঠছে। এর জের ধরে পেঁয়াজের চাহিদা বাড়তে শুরু করেছে।
তিনি আরো বলেন, হিলি ব্যতীত দেশের অন্য স্থলবন্দরগুলো দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি-রফতানি এখনো বন্ধ রয়েছে। ফলে হিলি স্থলবন্দরে পেঁয়াজের চাহিদায় বাড়তি চাপ তৈরি হয়েছে। অন্যদিকে চাহিদার তুলনায় পণ্যটির সরবরাহ কমতির দিকে রয়েছে। এদিকে দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজের দামেও চাঙ্গা ভাব বজায় রয়েছে। সব মিলিয়ে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম ঊর্ধ্বমুখী হতে শুরু করেছে।
স্থানীয় পেঁয়াজ আমদানিকারক নাজমুল হোসেন বণিক বার্তাকে বলেন, নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে লকডাউন, সরকারি ছুটি ও বিধিনিষেধের আওতায় গত ২৬ মার্চ থেকে দীর্ঘ ৭৫ দিন ভারত থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ ছিল। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ৮ জুন স্থলবন্দর দিয়ে পণ্যটির আমদানি শুরু হয়েছে। তবে প্রতিকূল আবহাওয়াসহ নানা ধরনের ঝক্কি-ঝামেলাতে পর্যাপ্ত আমদানি এখনো সম্ভব হচ্ছে না। এদিকে বৃষ্টিপাতে আগের সপ্তাহে বেশকিছু পেঁয়াজ পচে গিয়েছে, যা পণ্যটির সরবরাহের সংকট আরো বাড়িয়ে তুলেছে।
অন্যদিকে স্থানীয় বাজারে দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজের সরবরাহও কিছুটা কমতির দিকে রয়েছে। একই সঙ্গে পণ্যটির দাম বাড়তির দিকে রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে আমদানি করা পেঁয়াজের বাজার বেশ চাপে রয়েছে। এদিকে লকডাউন শিথিল হয়ে আসায় মসলা পণ্যটির চাহিদা বাড়তে শুরু করেছে। সবকিছু মিলিয়ে আমদানি করা পেঁয়াজের দামে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা পড়তে শুরু করেছে বলে জানান হিলির ব্যবসায়ীরা। এছাড়া প্রতি কেজি পেঁয়াজের ওপর সরকারের বাড়তি কর আরোপ করাও পণ্যটির মূল্যবৃদ্ধিতে প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে।