বাজেটে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে আরো গুরুত্ব দেয়া দরকার ছিল —অ্যামচেম

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাজেটে ব্যাংক থেকে যে পরিমাণ ঋণ নেয়ার উদ্যোগ রয়েছে, তাতে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ কমতে পারে। পরিবহন খাতে বরাদ্দ বাড়ানো ভালো উদ্যোগ, কিন্তু স্বাস্থ্য শিক্ষা খাতে আরো গুরুত্ব দেয়া দরকার ছিল। গতকালবাজেট ফর উইনিং ব্যাক দি ইকোনমিশীর্ষক এক আলোচনা সভায় কথা বলেন আমেরিকান চেম্বার অব কমার্সের (অ্যামচেম) সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদ।

অ্যামচেম আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। ডিজিটাল মাধ্যমে অনুষ্ঠিত সভাটি পরিচালনা করেন সংগঠনটির সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদ। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি শামস মাহমুদ, বিকেএমইএর সাবেক সভাপতি জগলুল হক, ইউএসএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ড্রিক ব্রাউন বক্তব্য রাখেন।

অ্যামচেম সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদ সভার শুরুতে বলেন, বাজেটে ব্যাংক থেকে যে পরিমাণ ঋণ নেয়ার উদ্যোগ রয়েছে, তাতে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ কমতে পারে। অন্যদিকে অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার সুযোগ দিয়ে অনৈতিক সুবিধা দেয়া হয়েছে। তবে পরিবহন খাতে বরাদ্দ বাড়ানো ভালো উদ্যোগ। কিন্তু স্বাস্থ্য শিক্ষা খাতে আরো গুরুত্ব দেয়া দরকার ছিল।

পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, দেশের মানুষের উন্নয়নের জন্য বাজেট গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু বাজেটই শেষ কথা নয়। মানুষের প্রয়োজনে যেকোনো সময় যেকোনো উদ্যোগ নেয়া হবে। এক্ষেত্রে টাকারও অভাব হবে না। সরকারের এখন একটাই লক্ষ্য নভেল করোনাভাইরাসের কারণে যারা নতুন করে দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে গেছেন, যারা সমস্যায় পড়েছেন তাদের আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনা। আর এজন্য সামগ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ঠিক রাখা জরুরি। সরকার সেই কাজই করছে। নভেল করোনাভাইরাসের প্রভাবে দেশে দারিদ্র্যের হার বেড়ে ৩৫ শতাংশে উঠেছে বলে বলা হচ্ছে। কিন্তু অংকটা এখন আর যথার্থ নয়। মানুষ কাজে ফিরেছে। সরকারও তাদের সহায়তা করছে। স্বাস্থ্য খাতে সরকার সবচেয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে। বিশ্বব্যাংক এডিবির কাছে সহায়তা চাওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যেকোনো কাজ করবে, তার জন্য টাকার কোনো অভাব নেই। 

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য অর্জন অসম্ভব। রাজস্ব আয় কমবে। ঘাটতি বাড়বে। ব্যাংকঋণের কতটা বাণিজ্যিক ব্যাংক কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে নেয়া হবে তা বলা হয়নি। বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে বেশি নেয়ার সুযোগ নেই। এফডিআই আনতে হলে দেশের বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক আফতাব উল ইসলাম বলেন, এসএমই খাত নভেল করোনাভাইরাসের কারণে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খাতকে এগিয়ে নিতে এখন প্রযুক্তি, আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশের সুযোগ উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর সুযোগ করে দিতে হবে। কিন্তু বাজেটে তা নেই।

পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, সহজ কম খরচে পরিবহনের জন্য রেল নৌপথে গুরুত্ব দেয়া জরুরি। সরকার সড়কপথে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।

এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভুইয়া বলেন, বন্দর কাস্টমসের অটোমেশন এগোচ্ছে। এদিকে ভ্যাটও স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থার আওতায় আনা হচ্ছে। তবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থায় মনোযোগ খুবই জরুরি। তা না হলে এর সুফল পাওয়া কঠিন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন