বাজেট ২০২০-২১

বিদেশী বিনিয়োগকারীদের মূলধনি মুনাফায় কর ছাড় চায় বিএসইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক

আসন্ন ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে দেশের পুঁজিবাজারের প্রাতিষ্ঠানিক বিদেশী বিনিয়োগকারীদের মূলধনি মুনাফার ওপর কর ছাড় চেয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এছাড়া সব ধরনের বন্ডে কর ছাড় সুবিধা প্রদান, তালিকাভুক্ত কোম্পানির নগদ লভ্যাংশের ক্ষেত্রে উেস কর্তিত করকে চূড়ান্ত কর হিসেবে বিবেচনা, করপোরেট বন্ডে কোম্পানির বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আয়কর ছাড় প্রদান করপোরেট বন্ডের সুদের ওপর কর্তিত উেস করকে চূড়ান্ত কর হিসেবে বিবেচনার প্রস্তাব দিয়েছে কমিশন। সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামালের কাছে -সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছে বিএসইসি।

বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম স্বাক্ষরিত চিঠিতে পুঁজিবাজারের কাঙ্ক্ষিত উন্নয়নের লক্ষ্যে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগে ব্যাংকনির্ভরতা কমানোর জন্য আসন্ন বাজেটে এসব প্রস্তাব বিবেচনার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। প্রস্তাবে জিরো কুপন বন্ডের জন্য প্রযোজ্য কর সুবিধা সব ধরনের বন্ডে এবং সব শ্রেণীর বিনিয়োগকারীদের (আর্থিক, -আর্থিক, ব্যক্তিগত প্রাতিষ্ঠানিক) ক্ষেত্রে প্রযোজ্য করার অনুরোধ করা হয়েছে। আয়কর অধ্যাদেশ অনুসারে ব্যাংক, বীমা বা অন্য কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান ছাড়া সব ধরনের করদাতাদের ক্ষেত্রে জিরো কুপন বন্ডের আয়ের ওপর কোনো কর দিতে হয় না। সব ধরনের বন্ড সব শ্রেণীর বিনিয়োগকারীর জন্য সুবিধা প্রযোজ্য হলে করপোরেট বন্ডে বিনিয়োগ উৎসাহিত হবে বলে মনে করছে বিএসইসি।

বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ সক্ষমতা অন্যান্য দেশের তুলনায় কম। এক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের সংখ্যা বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়ানোর লক্ষ্যে ব্যক্তি শ্রেণীর বিনিয়োগকারীদের মতো তাদের ক্ষেত্রে সেকেন্ডারি মার্কেটে বিনিয়োগে উদ্ভূত মূলধনি মুনাফাকে আগের মতো করমুক্ত করা কিংবা বিদ্যমান মূলধনি মুনাফা কর ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে শতাংশ নির্ধারণের অনুরোধ জানিয়েছে কমিশন। এতে পুঁজিবাজারের গভীরতা বাড়ার পাশাপাশি লেনদেনের পরিমাণ বাড়বে বলে মনে করছে সংস্থাটি।

পুঁজিবাজারে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের শেয়ার কেনার তুলনায় বিক্রি বেড়ে যাওয়ার কারণে শেয়ারের দরপতন হচ্ছে এবং বিদেশী বিনিয়োগের পরিমাণ কমছে। অবস্থায় বিদেশী পোর্টফোলিও বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যে অনিবাসীদের সেকেন্ডারি মার্কেটে মূলধনি মুনাফা থেকে অর্জিত আয়ের ওপর উেস কর কর্তনের বিদ্যমান হার ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে আগের মতো ১০ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছে বিএসইসি।

তালিকাভুক্ত কোম্পানির ঘোষিত নগদ লভ্যাংশের ওপর উেস কর্তিত করকে চূড়ান্ত কর হিসেবে বিবেচনার প্রস্তাব দিয়েছে কমিশন। এতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা তালিকাভুক্ত কোম্পানিতে বিনিয়োগে উৎসাহিত হবে।

ব্যাংক, বীমা অন্য কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান ছাড়া কোনো কোম্পানি তার মোট দীর্ঘমেয়াদি দায়ের কমপক্ষে ৫০ শতাংশ যদি করপোরেট বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে সংগ্রহ করে তাহলে সেসব কোম্পানির আয়করের পরিমাণ বিদ্যমান হারের চেয়ে শতাংশ কম নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে বিএসইসি। এর ফলে বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে তহবিল সংগ্রহে উৎসাহিত হবে এবং দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগে ব্যাংকনির্ভরতা কমবে।

করপোরেট বন্ড থেকে অর্জিত সুদের ওপর উেস কর্তিত করকে করপোরেট বন্ড থেকে সুদ হিসেবে প্রাপ্ত আয়ের চূড়ান্ত কর হিসেবে বিবেচনার অনুরোধ জানিয়েছে বিএসইসি। এতে প্রাতিষ্ঠানিক বিত্তবান ব্যক্তি বিনিয়োগকারীরা করপোরেট বন্ডে বিনিয়োগে উৎসাহিত হবে।

বিএসইসির এসব প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ লেনদেনের পরিমাণ অনেক বেড়ে যাবে। ফলে কর কমানো সত্ত্বেও খাতে সরকারের রাজস্ব আহরণের পরিমাণ কয়েক গুণ বেড়ে যাবে বলে মনে করছে বিএসইসি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন