ফ্লোর প্রাইস স্পর্শ করেছে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার

একদিনেই লেনদেন কমেছে ৭২ শতাংশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

কভিড-১৯-এর কারণে দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ থাকার পর গত রোববার থেকে দেশের পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু হয়। প্রথম দিনে সূচক বাড়লেও এর পর থেকেই টানা পতনের মধ্যে রয়েছে পুঁজিবাজার। চার কার্যদিবসের দরপতনে অধিকাংশ শেয়ার ফান্ডের দর ফ্লোর প্রাইস স্পর্শ করেছে। বাকিগুলোও ফ্লোর প্রাইস ছুঁই ছুঁই। এর ফলে গতকাল একদিনেই দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) লেনদেন কমেছে ৭২ শতাংশ, যা ১৩ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেন।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, টানা দরপতনের কারণে অনেক কোম্পানির শেয়ার দর ফ্লোর প্রাইস স্পর্শ করেছে। বাকিগুলোর দরও ফ্লোর প্রাইসের কাছাকাছি রয়েছে। ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ করা না থাকলে শেয়ারের দর আরো কমত। এর ফলে অনেকে শেয়ার বিক্রি করতে চাইলে ফ্লোর প্রাইসে কেউ সেই শেয়ার কিনতে আগ্রহী হচ্ছে না। মূলত কারণেই গতকাল পুঁজিবাজারের লেনদেনে ভাটা দেখা গেছে। সামনের দিনগুলোতে লেনদেন আরো কমার আশঙ্কা করছেন তারা।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল লেনদেন শুরুর পর প্রথম সেশনে সূচক নিম্নমুখী ছিল। তবে এর পর থেকে লেনদেন শেষ হওয়া অবধি সূচক এক প্রকার স্থির অবস্থানে ছিল। গতকাল দিন শেষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১০ পয়েন্ট কমে হাজার ৯৫৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, যা এর আগের কার্যদিবসে ছিল হাজার ৯৬৩ পয়েন্টে। গতকাল ডিএসইতে সূচক পতনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা ছিল বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের। এদিন কোম্পানিটির শেয়ার দর দশমিক শতাংশ কমেছে।

গতকাল ডিএসইর শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস পয়েন্ট কমে দিন শেষে ৯১৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের দিন যা ছিল ৯১৯ পয়েন্টে। ডিএসইর ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ দিনের ব্যবধানে পয়েন্ট কমে গতকাল হাজার ৩২২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের দিন শেষে যা ছিল হাজার ৩২৯ পয়েন্টে। বড় মূলধনি কোম্পানির সূচক সিডিএসইটি পয়েন্ট কমে ৭৮৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, যা এর আগের কার্যদিবসে ছিল ৭৮৫ পয়েন্ট।

গতকাল এক্সচেঞ্জটিতে মোট ৪২ কোটি ৯৭ লাখ টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়েছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল ১৫২ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩০৯টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড করপোরেট বন্ডের মধ্যে দিন শেষে দর বেড়েছে ১১টির, কমেছে ৩৬টির আর অপরিবর্তিত ছিল ২৬২টি সিকিউরিটিজের বাজারদর।

খাতভিত্তিক লেনদেনচিত্রে দেখা যায়, গতকাল ডিএসইর মোট লেনদেনের ৪৮ শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে ওষুধ খাত। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৬ শতাংশ করে দখল নিয়েছে টেলিযোগাযোগ খাত। ১২ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ব্যাংক খাত। আর ১১ শতাংশ দখলে নিয়ে চতুর্থ স্থানে ছিল জ্বালানি বিদ্যুৎ খাত।

গতকাল ডিএসইতে লেনদেনের ভিত্তিতে শীর্ষ সিকিউরিটিজ ছিল বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, গ্রামীণফোন, সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস, লিন্ডে বাংলাদেশ, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস, বেক্সিমকো লিমিটেড, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি লিমিটেড, একমি ল্যাবরেটরিজ রেকিট বেনকিজার।

দর বাড়ার শীর্ষ কোম্পানির তালিকায় ছিল লিন্ডে বাংলাদেশ, রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স, এক্সিম ব্যাংক, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি লিমিটেড, ন্যাশনাল টি, ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্স, বাংলাদেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, পাইওনিয়র ইন্স্যুরেন্স গ্রামীণফোন।

অন্যদিকে দরপতনের শীর্ষে থাকা কোম্পানিগুলো হচ্ছে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, শ্যামপুর সুগার মিল, মেঘনা পিইটি ইন্ডাস্ট্রিজ, উত্তরা ব্যাংক, সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক, শাইনপুকুর সিরামিকস, ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস, দেশ গার্মেন্টস জিলবাংলা সুগার মিল।

দেশের আরেক পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গতকাল সিএসসিএক্স সূচক দিনের ব্যবধানে পয়েন্ট বেড়ে হাজার ৮০৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আগের কার্যদিবসে সূচকটির অবস্থান ছিল হাজার ৮০৪ পয়েন্টে। এদিন এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ১০৩টি কোম্পানি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৯টির, কমেছে ১৯টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৭৫টির বাজারদর। গতকাল সিএসইতে মোট কোটি ৫৯ লাখ টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়েছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল কোটি ৬০ লাখ টাকা।

 

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন