আরো দরপতনে পুঁজিবাজার

ক্রেতা নেই অধিকাংশ শেয়ারের

নিজস্ব প্রতিবেদক

টানা তৃতীয় দিন দরপতন হয়েছে দেশের পুঁজিবাজারে। গতকাল দেশের দুই পুঁজিবাজারেই সূচক লেনদেন কমেছে। এদিন তালিকাভুক্ত অধিকাংশ শেয়ারের কোনো ক্রেতা ছিল না। অনেক কোম্পানির শেয়ার ফ্লোর প্রাইস স্পর্শ করার কারণে এগুলো কেনার ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীদের তেমন আগ্রহ ছিল না।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, কভিড-১৯-এর কারণে দুই মাস ধরে সামষ্টিক অর্থনীতি বেসরকারি খাতের ব্যবসায় নিম্নমুখী প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যেও উদ্বেগ রয়েছে। তাছাড়া টানা তিনদিনের দরপতনের কারণে অনেক কোম্পানির শেয়ারদর ফ্লোর প্রাইস স্পর্শ করেছে। বাকিগুলোর দরও ফ্লোর প্রাইসের কাছাকাছি রয়েছে। এর ফলে বিনিয়োগকারীদের পছন্দসই দামে শেয়ার কেনাবেচা করার সুযোগ সীমিত হয়ে পড়েছে। আর কারণে পুঁজিবাজারে লেনদেনের পরিমাণ কমে গেছে। 

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল লেনদেন শুরুর পর প্রথম সেশনে সূচক কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী ছিল। কিন্তু এর পর থেকেই সূচক নিম্নমুখী হতে থাকে, যা লেনদেন শেষ হওয়া পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। গতকাল দিন শেষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স পয়েন্ট কমে হাজার ৯৬৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, যা এর আগের কার্যদিবসে ছিল হাজার ৯৭০ পয়েন্টে। গতকাল ডিএসইতে সূচক পতনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা মার্কেন্টাইল ব্যাংক বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের। এর মধ্যে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের দশমিক বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের দশমিক শতাংশ শেয়ারদর কমেছে। 

গতকাল ডিএসইর শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস পয়েন্ট কমে দিন শেষে ৯১৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের দিন যা ছিল ৯২০ পয়েন্টে। ডিএসইর ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ দিনের ব্যবধানে পয়েন্ট কমে গতকাল হাজার ৩২৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের দিন শেষে যা ছিল হাজার ৩৩১ পয়েন্টে। বড় মূলধনি কোম্পানির সূচক সিডিএসইটি প্রায় পয়েন্ট কমে ৭৮৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, যা এর আগের কার্যদিবসে ছিল ৭৮৬ পয়েন্টে।

গতকাল এক্সচেঞ্জটিতে মোট ১৫২ কোটি ৬০ লাখ টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়েছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল ১৫৫ কোটি ২০ লাখ টাকা। এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩১২টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড করপোরেট বন্ডের মধ্যে দিন শেষে দর বেড়েছে ১৬টির, কমেছে ৪৩টির আর অপরিবর্তিত ছিল ২৫৩টি সিকিউরিটিজের বাজারদর।

খাতভিত্তিক লেনদেনচিত্রে দেখা যায়, গতকাল ডিএসইর মোট লেনদেনের ৩৭ শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে ওষুধ খাত। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৭ শতাংশ করে দখল নিয়েছে টেলিযোগাযোগ খাত। ১৪ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ব্যাংক খাত। আর শতাংশ দখলে নিয়ে চতুর্থ স্থানে ছিল জ্বালানি বিদ্যুৎ খাত।

গতকাল ডিএসইতে লেনদেনের ভিত্তিতে শীর্ষ সিকিউরিটিজ ছিল গ্রামীণফোন, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, বেক্সিমকো লিমিটেড, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস, ওরিয়ন ফার্মাসিউটিক্যালস, ইসলামী ব্যাংক মুন্নু সিরামিকস।

দর বাড়ার শীর্ষ কোম্পানির তালিকায় ছিল এক্সিম ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স, এনসিসি ব্যাংক, এপেক্স ফুটওয়ার, পিপলস ইন্স্যুরেন্স, সিলকো ফার্মাসিউটিক্যালস, লিন্ডে বাংলাদেশ, মতিন স্পিনিং মিলস, সামিট পাওয়ার রেনাটা লিমিটেড।

অন্যদিকে দরপতনের শীর্ষে থাকা কোম্পানিগুলো হচ্ছে দুলামিয়া কটন, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, বিডি ওয়েল্ডিং, এক্সিম ব্যাংক, এসিআই লিমিটেড, সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস, আইসিবি, সোনালী ব্যাংক, ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, মেঘনা পেট ইন্ডাস্ট্রিজ, প্রাইম ইন্স্যুরেন্স মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্স।

দেশের আরেক পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গতকাল সিএসসিএক্স সূচক দিনের ব্যবধানে ১৯ পয়েন্ট কমে হাজার ৮০৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আগের কার্যদিবসে সূচকটির অবস্থান ছিল হাজার ৮২৩ পয়েন্টে। এদিন এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ১২৭টি কোম্পানি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৪টির, কমেছে ৩২টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৮১টির বাজারদর। গতকাল সিএসইতে কোটি ৬০ লাখ টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়েছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল ৫৬ কোটি ৭০ লাখ টাকা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন