তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) রফতানিতে শীর্ষে যাওয়ার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এলএনজিবাহী জাহাজের বহর বাড়াতে চাইছে কাতার। আর এ লক্ষ্যে জ্বালানিসমৃদ্ধ দেশটি দক্ষিণ কোরীয় তিন জাহাজ নির্মাতার সঙ্গে প্রায় ২ হাজার কোটি ডলারের চুক্তি সম্পাদন করেছে। খবর ব্লুমবার্গ।
সোমবার রাষ্ট্রায়ত্ত জ্বালানি প্রতিষ্ঠান কাতার পেট্রোলিয়াম এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়ার জাহাজ নির্মাতা দাইয়ু শিপবিল্ডিং অ্যান্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি, হুন্দাই হেভি ইন্ডাস্ট্রিজ কোম্পানি ও স্যামসাং হেভি ইন্ডাস্ট্রিজ কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করেছে কাতার। চুক্তি অনুসারে, ২০২৭ সাল পর্যন্ত কাতার পেট্রোলিয়ামের সিংহভাগ এলএনজিবাহী জাহাজ তৈরি করবে এ তিন কোম্পানি। কাতার পেট্রোলিয়াম আরো জানিয়েছে, প্রায় ৭ হাজার কোটি কাতারি রিয়ালের (১ হাজার ৯১০ কোটি ডলার) এ চুক্তির অধীনে কোম্পানি তিনটি কাতারের জন্য ১০০টির বেশি এলএনজি জাহাজ তৈরি করবে।
কাতারের সঙ্গে চুক্তির খবর প্রকাশের পর শেয়ারদরে বড় ধরনের উল্লম্ফন হয়েছে দাইয়ু ও স্যামসাংয়ের। সিউলে গতকাল কোম্পানি দুটির শেয়ারের দাম বেড়েছে ১৫ শতাংশের বেশি হারে।
কাতারের জ্বালানিমন্ত্রী ও কাতার পেট্রোলিয়ামের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সাদ আল-কাবি বলেছেন, ‘ইতিহাসের সবচেয়ে বড় এলএনজি জাহাজ নির্মাণ কর্মযজ্ঞের সব প্রক্রিয়া শুরু করেছি আমরা। ২০২৭ সাল পর্যন্ত বৈশ্বিক এলএনজি জাহাজ নির্মাণের ৬০ শতাংশ আমাদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে।’
নিজ দেশে ও যুক্তরাষ্ট্রে এলএনজি সরবরাহের নতুন প্রকল্প হাতে নিয়েছে কাতার। এজন্য দেশটির এলএনজিবাহী জাহাজের বড় একটি বহরের প্রয়োজন। আর এ চাহিদা মেটাতে দক্ষিণ কোরিয়ার আগে চীনের কোম্পানির সঙ্গেও চুক্তি করেছে দেশটি। গত এপ্রিলে হাংডং-ঝংহুয়া শিপবিল্ডিং গ্রুপ কোম্পানির সঙ্গে জাহাজ নির্মাণের চুক্তি করে কাতার। এটি বিশ্বের সর্ববৃহৎ শিপবিল্ডিং কনগ্লোমারেট চায়না স্টেট শিপবিল্ডিং করপোরেশনের একটি সাবসিডিয়ারি কোম্পানি।
আল-কাবি জানিয়েছেন, পারস্য উপসাগরে অবস্থিত বিশ্বের সর্ববৃহৎ প্রাকৃতিক গ্যাসের কনডেনসেট ফিল্ড নর্থ ফিল্ডে থাকা নিজেদের অংশে এলএনজি উত্তোলন বৃদ্ধি কর্মসূচি বাস্তবায়নে পূর্ণোদ্যমে এগিয়ে যাচ্ছে কাতার। এ কর্মসূচির মাধ্যমে দেশটির বার্ষিক এলএনজি রফতানি ৭ কোটি ৭০ লাখ টন থেকে ২০২৭ সাল নাগাদ ১২ কোটি ৬০ লাখ টনে উন্নীত হবে।
গত মাসে আল-কাবি বলেন, কাতার পেট্রোলিয়াম প্রায় ৩০ শতাংশ ব্যয়সংকোচনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে কোম্পানিটি উৎপাদন বৃদ্ধির পরিকল্পনায় কোনো ছাড় দেবে না। নভেল করোনাভাইরাসের কারণে এলএনজির চাহিদার পতন এবং মূল্য রেকর্ড সর্বনিম্নে নেমে যাওয়ার মধ্যেই এ ঘোষণা দেন তিনি।