আপনার মুখ বন্ধ রাখুন, ট্রাম্পকে পুলিশ প্রধানের ধমক

বণিক বার্তা অনলাইন

যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশ হেফাজতে কৃষ্ণাঙ্গ মার্কিন জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর ঘটনায় বিক্ষোভের সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করেছেন হিউস্টনের পুলিশ প্রধান আর্ট আভেসিডো। সিএনএন টিভির লাইভে এসে সরাসরি ধমকের সুরেই বলেছেন, ‘গঠনমূলক কিছু বলার না থাকলে, আপনার মুখ বন্ধ রাখুন’।

সিএনএনে সোমবার রাতের ওই লাইভ অনুষ্ঠানে দেখা যায় উপস্থাপক ক্রিশ্চিয়ান আমানপোর হিউস্টনের পুলিশ প্রধান আর্ট আভেসিডোকে জানাচ্ছেন যে, ট্রাম্প রাজ্যের গভর্নরদের বিক্ষোভকারীদের উপর কর্তৃত্ব বিস্তার করতে এবং দুর্বলতার চিহ্ন প্রকাশ বন্ধ করতে বলেছেন। ট্রাম্পের এমন বক্তব্য বিষয়ে সরাসরি কিছু বলতে না চাইলেও পুলিশের অবস্থান সম্পর্কে জানতে চান তিনি। এসময়  ট্রাম্পের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আভেসিডো ট্রাম্পকে বলেন, আমি এই দেশের (রাজ্যের) পুলিশ প্রধানদের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে বলতে চাই, ‘যদি গঠনমূলক কিছু বলার না থাকে, তাহলে আপনার মুখ বন্ধ রাখুন।’

তিনি বলেন, ‘কারণ আপনি ২০ দশকের গোঁড়ার দিকের নারী ও পুরুষকে ঝুঁকিতে ফেলছেন। এখানে কর্তৃত্ব বিস্তারের প্রশ্ন নয়, বিষয়টি হৃদয় ও মন জয়ের। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমরা মানুষকে উদারতা ও দুর্বলতার মধ্যে দ্বিধান্বিত করতে চাই না। হাউস্টনে আমাদের যা আছে অবহেলায় তা হারাতে চাই না।’

তিনি আরও যোগ করেন, দেশব্যাপী আমার সব সহকর্মীদের পক্ষ থেকে বলছি, অনেক অফিসার আহত হচ্ছ্নে, কমিউনিটির সদস্যরা আহত হচ্ছেন। আপনার কিছু বলার না থাকলে চুপ করে থাকুন। সেটাই কিন্তু নেতৃত্বের মতবাদ। আর আমাদের এখন অন্য যে কোনো সময়ের থেকে নেতৃত্ব বেশি দরকার। আমরা ভোট দিই বা না দিই তিনি আমাদের প্রেসিডেন্ট। এখন প্রেসিডেন্টের মতোই আচরণ করতে হবে। শিক্ষানবিশের মতো আচরণ করবেন না।

তিনি বলেন, এটা হলিউড নয়, বাস্তব জীবন। আর বাস্তব জীবনই ঝুঁকিতে পড়েছে। আমি মার্কিন জনগণকে পুলিশর সঙ্গে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাবো। যা করা দরকার সেটা করি চলুন।

আমেরিকার মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যে সাবেক বাস্কেটবল খেলোয়ার জর্জ ফ্লয়েড (৪৬) নামের আফ্রিকান-আমেরিকান এক ব্যক্তিকে ২৫ মে গ্রেফতার করতে গিয়ে সড়কে ফেলে হাঁটু গেড়ে চেপে ধরেন শ্বেতাঙ্গ পুলিশ অফিসার ডেরেক চাওভিন। এতে ফ্লয়েডের মৃত্যু হয়।  

জর্জ ফ্লয়েডের পরিবারের আইনজীবী বেন ক্রাম্প গণমাধ্যমে বলেছেন, ঘাড়ের উপর ক্রমাগত হাঁটুর চাপ পড়ায় মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল ফ্লয়েডের। একই সঙ্গে তার ওপর পুলিশ কর্মকর্তা চেপে বসে থাকায় নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল তার। 

এক প্রত্যক্ষদর্শীর করা ভিডিওতে দেখা গেছে, ফ্লয়েড বারবার আকুতি জানিয়ে বলেছিলেন তিনি নিঃশ্বাস নিতে পারছেন। কিন্তু তারপরও ক্ষ্যান্ত হননি ওই পুলিশ কর্মকর্তা। 

পুলিশ কর্মকর্তা ডেরেক চাওভিনের হাঁটুর চাপে ফ্লয়েডের মৃত্যু হওয়ায় তার বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। বাকি তিন কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। জর্জের পরিবারের আইনজীবী জানিয়েছেন, বাকি তিন পুলিশ কর্মকর্তাকেও গ্রেফতার করার দাবি জানানো হয়েছে।

এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আমেরিকা জুড়ে ফুঁসে ওঠা বর্ণবাদ বিরোধী বিক্ষোভ জোড়ালো হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে আমেরিকার অন্তত ৪০টির বেশি নগরীতে কারফিউ জারি করতে হয়েছে। বিক্ষোভ দমনে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করা হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন