যাত্রী সংকট

প্রথম দিনেই অভ্যন্তরীণ রুটের একাধিক ফ্লাইট বাতিল

নিজস্ব প্রতিবেদক

দুই মাসের বেশি সময় পর চালু হলো দেশের ভেতরে তিনটি রুটের ফ্লাইট। করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে যাত্রী এয়ারলাইনসগুলোকে মানতে হচ্ছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের স্বাস্থ্যবিধি। তবে দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকার পর আবার চালু হলেও প্রথম দিন গতকাল যাত্রী সংকটে বাতিল হয়েছে একাধিক ফ্লাইট।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা থেকে তিনটি অভ্যন্তরীণ রুটে প্রতিদিন ২৪টি ফ্লাইট ছেড়ে যাওয়া ফিরে আসার কথা থাকলেও যাত্রীর অভাবে গতকাল ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের দুটি ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। এছাড়া ঢাকা থেকে সিলেটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের দুটি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।

জানা গেছে, গতকাল সব এয়ারলাইনসেই ছিল যাত্রী সংকট। বিমানবন্দরও যাত্রীদের দূরত্ব বজায় রাখতে ছিল কড়াকড়ি। বিমানবন্দরে প্রবেশমুখেই যাত্রীদের শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করেছে এয়ারলাইনসগুলো। পাশাপাশি মাস্ক গ্লাভস দিয়েছে। একই সঙ্গে যাত্রীদের ব্যাগে ছিটানো হয়েছে জীবাণুনাশক।

বিমানবন্দরের ভেতরেও প্রবেশ করার মুখে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের তাপমাত্রা পরীক্ষা করে ভেতরে প্রবেশ করতে দিয়েছে। একই সঙ্গে যাত্রীদের দেয়া হয়েছে ফর্ম, যেখানে স্বাস্থ্যগত তথ্য দিতে হবে সব যাত্রীকে।  গতকাল কমপক্ষে দুজন যাত্রীকে শরীরের তাপমাত্রা বেশি থাকায় বিমানবন্দর থেকে ফেরত যেতে হয়েছে।

এদিকে বিমানবন্দরের কর্মীদের মধ্যেও ব্যক্তিগত সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সরঞ্জাম ব্যবহার করতে দেখা গেছে। বিমানবন্দরের ভেতরে কিছু সময় পরপর ছিটানো হচ্ছে জীবাণুনাশক। যাত্রীদের চলাচলের জায়গা, ট্রে, চেয়ার, দেয়াল, রেলিং, ব্যাগেজ বেল্ট পরিষ্কার করে জীবাণুনাশক ছিটানো হচ্ছে। এয়ারলাইনসগুলোর কাউন্টারেও নেয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। যাত্রীদের বসার জায়গাগুলোতে দূরত্ব বজায় রাখতে রাখা হচ্ছে ফাঁকা। কাউন্টারে যাত্রীদের শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে ফ্লোরে করা হয়েছে মার্কিং।

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক এএইচএম তৌহিদ উল আহসান বলেন, যাত্রীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করতে আমরা ব্যবস্থা করেছি। এয়ারলাইনসগুলোকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বিমানবন্দরেও জীবাণুমুক্ত করতে পরিচ্ছন্নতা জীবাণুনাশক ছিটানো হচ্ছে। ফ্লাইট পরিচালনার ক্ষেত্রে সবাইকে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখাতে হবে।

জানা গেছে, গতকাল ইউএস-বাংলার ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম রুটের ফ্লাইটে যাত্রী ছিল ২৮ জন, আর চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় এসেছে ৩৫ জন। ঢাকা থেকে সৈয়দপুর গেছে ৫১ জন আর ঢাকায় এসেছে ৫৮ জন। নভোএয়ার সৈয়দপুর রুটে তিনটি, চট্টগ্রাম রুটে তিনটি সিলেটে একটি ফ্লাইট পরিচালনা করছে।

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযাগ) মো. কামরুল ইসলাম জানান, গতকাল সকাল ৭টায় ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের প্রথম ফ্লাইট হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। সকাল ৭টা ৫৫ মিনিটে চট্টগ্রামের হযরত শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। বর্তমানে ঢাকা-চট্টগ্রাম-ঢাকা রুটে প্রতিদিন ছয়টি ফ্লাইট পরিচালনা করবে।

সকালে বিমানবন্দর পরির্দশন করেন বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান। তিনি বিমানবন্দরের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন। এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান বলেন, স্বাস্থ্যবিধি সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। প্রতিটি ফ্লাইটের পর প্রতিটি উড়োজাহাজ জীবাণুমুক্ত করতে বলা হয়েছে, যা মনিটরিং করা হচ্ছে।

প্রথম দিনে যাত্রী কম হলেও ধীরে ধীরে যাত্রী বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেছেন এভিয়েশন অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এওএবি) মহাসচিব নভোএয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মফিজুর রহমান।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন