বন্যা ও খরার সংকট মোকাবেলায় বাঁধ নির্মাণ করবে কেনিয়া

বণিক বার্তা ডেস্ক

আবহাওয়ার ধরন পরিবর্তনের কারণে কেনিয়াকে উভয় সংকটে পড়তে হচ্ছে। কোনোবার বন্যা, কোনোবার খরা দুই প্রাকৃতিক প্রতিকূলতার সঙ্গে প্রতিনিয়ত লড়াই করতে হচ্ছে দেশটিকে। অবস্থায় পানি ব্যবস্থাপনা উন্নত করতে বেশ কয়েকটি নতুন বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা করছে কেনিয়ার সরকার। খবর ব্লুমবার্গ।

আশা করা হচ্ছে, শিগগিরই আফ্রিকার পূর্বাঞ্চলীয় দেশটির পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত ৮৬ কোটি ৮০ লাখ ডলারের মাগওয়াগোয়া মাল্টিপারপাস ড্যামের উন্নয়ন প্রকল্পের অনুমোদন দেবে ন্যাশনাল ট্রেজারি। লেক বেসিন ডেভেলপমেন্ট অথরিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেমন্ড অমোলো কথা জানিয়েছেন।

ড্যামটির উচ্চতা ৯৫ মিটার। দৈর্ঘ্য ৪৫০ মিটার। লেক ভিক্টোরিয়ায় যেসব উৎস থেকে পানি প্রবাহিত হয়, সেগুলোর পানি দিয়ে বাঁধের রিজার্ভার পূর্ণ করা হবে। এছাড়া ড্যামটিতে একটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প থাকবে, যা দিয়ে ১২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে।

কেনিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় কাউন্টি কিসুমু কেরিচোতে পানি সরবরাহের জন্য কোরু-সোইন ড্যামের নির্মাণকাজ শিগগিরই শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। ড্যামটি নির্মাণে আনুমানিক হাজার কোটি শিলিং (৩৭ কোটি ৫০ লাখ ডলার) ব্যয় হবে।

স্থানীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, আগামী মাস থেকে কেনিয়া সরকার অন্যান্য বাঁধ নির্মাণ কর্মসূচি বাস্তবায়নে জোর দেবে। এসব বাঁধের মাধ্যমে দেশটির উত্তরাঞ্চলে ওয়াটার হারভেস্টিংয়ের পরিমাণ বাড়ানো হবে।

এছাড়া বন্যা নিয়ন্ত্রণে বেশ কয়েকটি নদীর তীর রক্ষাকারী বাঁধ নির্মাণের প্রস্তাবনা সরকার পর্যালোচনা করে দেখছে বলে জানা গেছে।

চলতি বছর ভারি বর্ষণের কারণে কেনিয়ায় ব্যাপক বন্যা হয়েছে। এতে দুই শতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। ঘরছাড়া হয়েছেন অন্তত এক লাখ মানুষ। দেশটির প্রেসিডেন্ট উহুরু কেনিয়াত্তা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক সেতু সংস্কারে তার সরকার অন্তত ৫০০ কোটি শিলিং ব্যয় করবে। এছাড়া ভবিষ্যতে বন্যার প্রকোপ কমানোর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ারও প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন তিনি।

চলতি বছর যেমন বন্যা আঘাত হেনেছে, গত বছর প্রকৃতির ভিন্ন রূপ দেখেছে কেনিয়া। ২০১৯ সালের কয়েক মাস অস্বাভাবিক শুষ্ক ছিল। খরায় গত বছর কেনিয়ায় ১৫ লাখের বেশি মানুষ খাদ্যের অভাবে ভুগেছে।

গত ২১ মে আফ্রিকার সবচেয়ে বড় লেক ভিক্টোরিয়ায় পানির উচ্চতা ৫০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চে উঠে যায়। এছাড়া লেক কিয়োগায় জমা হওয়া পানির পরিমাণও রেকর্ড পরিমাণে পৌঁছেছে।

লেক ভিক্টোরিয়া লেক কিয়োগা আফ্রিকার বৃহত্তম দুটি লেক। ছয়টি দেশজুড়ে লেক দুটির অবস্থান। গত এপ্রিলে লেক ভিক্টোরিয়ায় বেশ খানিকটা অঞ্চল নিয়ে কচুরিপানা জমা হয়ে যায়। এর আকার ছিল ছোটখাটো একটি দ্বীপের সমান। এটি জলবিদ্যুৎ উৎপাদনে বেশ সমস্যা করেছে। কচুরিপানার জমা পরিষ্কার করতে কর্তৃপক্ষকে রীতিমতো গলদঘর্ম হতে হয়েছে।

আফ্রিকার পশ্চিমাঞ্চলকে জলবায়ুগত প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে। ধরনের চরমাবস্থা অন্যান্য বাস্তুসংস্থানগত সংকটেরও কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এসব সংকটের মধ্যে রয়েছে পঙ্গপাল অন্যান্য কীট-পতঙ্গের হানা, মহামারী ইত্যাদি। অঞ্চলের সরকারগুলোকে আরো বেশি বন্যা, খরা পতঙ্গের আক্রমণের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন