সংক্রমণ ঝুঁকি: চলছে না সিসিকের ‘নগর এক্সপ্রেস’, ভোগান্তিতে কর্মজীবীরা

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, সিলেট

দুই মাসের অধিক সময় বন্ধ থাকার পর সোমবার থেকে চালু হয়েছে গণপরিবহন। সারাদেশের মতো সিলেটেও দুরপাল্লার ও আন্তঃজেলা বাস চলাচল শুরু হয়েছে। তবে বন্ধ রয়েছে সিলেট নগরীর একমাত্র গণপরিবহন ‘নগর এক্সপ্রেস’। করোনাভাইরাস পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত নগরীর এই বাস সার্ভিস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

সিলেট নগরীতে গত বছরের ডিসেম্বরে ৪১ টি মিনিবাস নিয়ে চালু হয় ‘নগর এক্সপ্রেস’। সিলেট সিটি করপোরেশনের ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত এই পরিবহন সেবা করোনাভাইরাস সংক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

সরকার গণপবিহন চালুর অনুমতি দেয়া সত্ত্বেও নগরীর চালু না করার বিষয়ে জানতে চাইলে নগর এক্সপ্রেস মালিক সমিতির সভাপতি ও সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর মোখলেসুর রহমান কামরান বলেন, করোনা পরিস্থিতির দিনদিন অবনতি হচ্ছে। রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলছে। এ অবস্থায় আমরা বাস সার্ভিসটি চালু না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

তিনি বলেন, আমাদের বাসগুলো ছোট। যাত্রীদেরও চাপ থাকে। ফলে এখানে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা কঠিন। যাত্রীরাও অনেক সময় এগুলো মানতে চান না। ফলে বাস সার্ভিস চালু হলে সংক্রমণের ঝুঁকি আরো বেড়ে যাবে। তাই আমরা আরো ১০/১২ দিন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি না হলে আপাতত বাস চালুর পরিকল্পনা নেই।

সারাদেশের মতো সিলেটেও বেড়ে চলছে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায়  (সোমবার দুপুর পর্যন্ত) সিলেট বিভাগে আরও ৯৩ জন রোগী শনাক্ত হয়েছেন। ফলে পুরো বিভাগে শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৪০ জন।

এদিকে, অফিস আদাতালসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুললেও নগরীর গণপরিবহন সেবা চালু না হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন নগরীতে কাজ করেন কিন্তু থাকেন বাইরে সেসব কর্মজীবী মানুষেরা। বাধ্য হয়ে বাড়তি ভাড়া দিয়ে অটোরিকশায় গাদাগাদি করে নগরীতে আসতে হচ্ছে। 

‘নগর এক্সপ্রেস’ নগরীর উপকণ্ঠের টুকেরাবাজার, বটেশ্বর, হেতিমগঞ্জ, বিমানবন্দর ও মোগলাবাজার পর্যন্ত যাত্রী পরিবহন করে থাকে। এসব  এলাকার যাত্রীরা সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন।

মোগলাবাজার থেকে সিলেট নগরীতে আসা একটি পোষাকের দোকানের কর্মচারী সাইদুল ইসলাম বলেন, আগে নগর এক্সপ্রেসে করে কম ভাড়ায় যাওয়া আসা করতে পারতাম। এখন বাড়তি ভাড়া দিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে যাওয়া আসা করতে হয়। তাও বসতে হয় গাদাগাদি করে।

নগর এক্সপ্রেস বন্ধ থাকলেও সিলেটে অন্য বাস সার্ভিসগুলো সোমবার থেকে চালু হয়েছে।  দূরপাল্লার পাশাপাশি আন্তঃজেলা বাস চলাচলও শুরু হয়েছে সকাল থেকে। তবে আজ সিলেটে যাত্রী সংখ্যা ছিল অপেক্ষাকৃত কম।

বাসে সামাজিক দূরত্ব ও স্থাস্থ্যবিধি না মানার অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা। ৬০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধিতেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা।

সিলেটের জেলা প্রশাসক এম. কাজী এমদাদুল ইসলাম জানিয়েছেন, বাসের ভাড়া ও স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনের বিষয় দেখভাল করতে আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা মাঠে থাকবেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন