আলোকপাত

অনলাইনে উচ্চশিক্ষাবিষয়ক কিছু প্রস্তাব

ড. তোফাজ্জল ইসলাম

গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরের মানুষের মধ্যে অতিসংক্রামক এক ভাইরাস রোগ ছড়িয়ে পড়ে। জীবাণুটির জিন নকশা বিশ্লেষণ এবং অন্যান্য গবেষণার মাধ্যমে এর নামকরণ করা হয় নভেল করোনাভাইরাস। প্রোটিন অণু দ্বারা আবৃত মানুষের মুকুটাকৃতির নতুন ভাইরাস জীবাণুটি এক সূত্রাকার রাইবোনিউক্লিয়িক অ্যাসিড দ্বারা গঠিত ন্যানোমিটার আকারের একটি অতি আণুবীক্ষণিক কণিকা। বিজ্ঞানীরা রোগটির নাম দেন কভিড-১৯। যদিও এটির উৎস নিয়ে বিতর্ক রয়েছে, তবে বিজ্ঞানীরা একমত যে এটি মনুষ্যসৃষ্ট কোনো কৃত্রিম ভাইরাস ন্যানোকণিকা নয়। অল্প কয়েক মাসের মধ্যেই মহাসংক্রামক রোগটি বিশ্বের ২১৩টি দেশ অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। এরই মধ্যে সারা পৃথিবীর ৫৯ লাখের অধিক লোক রোগে সংক্রমিত হয়েছে এবং কমপক্ষে দশমিক লাখ লোক মৃত্যুবরণ করেছে। বাংলাদেশে রোগটি দ্বারা ৪০ হাজারেরও অধিক লোক আক্রান্ত হয়েছে এবং ছয় শতাধিক লোক মৃত্যুবরণ করেছে। নানা রকম প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও বাংলাদেশে রোগটি দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়েছে এবং মৃত্যুর সংখ্যাও ক্রমে বেড়ে চলেছে। কভিড-১৯ আক্রান্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান দশম। আক্রমণের ধারা কখন নিম্নমুখী হবে, তা বলা যাচ্ছে না। নিয়ে জনমনে প্রচণ্ড উদ্বেগ রয়েছে।

গত মার্চ থেকে দেশের সরকারি বেসরকারি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সম্পদ সম্ভাবনা হচ্ছে তরুণ প্রজন্ম। এরা মোট জনগোষ্ঠীর এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি। এরাই দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির ভবিষ্যৎ চালিকাশক্তি। বর্তমানে সারা দেশে ৪৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় সাড়ে আট লাখ শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। যদিও বেসরকারি কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে, তবে প্রায় সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কর্মহীন অলস গৃহবন্দি জীবন কাটাচ্ছেন। তরুণদের জন্য কর্মহীন অলস জীবন তাদের মানসিক শারীরিক দিক বিবেচনায় খুবই ক্ষতিকর। সে বিবেচনায় বিশ্বের প্রায় সব দেশেই অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে তাদের শিক্ষাজীবনকে গতিশীল রাখা হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক বাস্তবতা হচ্ছে, ডিজিটাল বাংলাদেশে বিচার কার্যক্রম পরিচালনা, গুরুত্বপূর্ণ সভা, টকশো এমনকি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশ পরিচালনায় অনলাইন ব্যবস্থা চালু এবং গতিশীল থাকলেও দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তরুণ প্রজন্মের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনায় অনলাইন কার্যক্রম চলছে না। ব্যাপারে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা, যেমন শিক্ষা মন্ত্রণালয় ইউজিসি একটু দ্বিধাগ্রস্ত বলেই মনে হচ্ছে। বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টা, দিকনির্দেশনা উচ্চশিক্ষা সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সম্মিলিত প্রয়াসে গত ১০-১২ বছরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্য সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সেশনজট প্রায় শূন্যের কোটায় নেমে এসেছে। কিন্তু চলমান অচলাবস্থার কারণে আবারো কয়েক লাখ শিক্ষার্থীর জীবনে সেশনজটের মতো অভিশাপ হাতছানি দিচ্ছে।

অনলাইন ব্যবস্থা চালু করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বলছে যে শিক্ষার্থীদের যারা গ্রামে বসবাস করছেন, তাদের ইন্টারনেটের সুবিধা নেই। এটা একটি বাস্তবতা। কিন্তু সীমাবদ্ধতা দূরীকরণে কি কিছুই করার নেই? কভিড-১৯ যদি দীর্ঘকাল পর্যন্ত চলতে থাকে, তাহলে আমরা কি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বন্ধ রেখেই চলব? দেশের তরুণ জনগোষ্ঠী, যাদের নেতৃত্বে আমাদের দেশ ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল দেশে এবং ২০৪১ সালে উন্নত রাষ্ট্রে উন্নীত হবে, তাদের শিক্ষাজীবনের মূল্যবান সময়ের অপচয় রোধে কি আমাদের কিছুই করার নেই? অথচ এটি সর্বজনস্বীকৃত যে নতুন তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি গ্রহণ এবং এসব প্রয়োগে তরুণ প্রজন্ম সর্বদাই অগ্রগামী।

আমরা করোনা মহামারীকালে সমাজের সব গোষ্ঠীর জন্য নানা রকম প্রণোদনার ব্যবস্থা করেছি। পর্যন্ত প্রায় লাখো কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ চালু করা হয়েছে। ব্যবসায়ীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সীমিত আকারে দোকানপাট খোলার অনুমতি দেয়া হয়েছে। ঈদে শহর থেকে গ্রামে যাওয়ার ক্ষেত্রে জনআকাঙ্ক্ষাকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জনগোষ্ঠী কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শিক্ষার অধিকার নিয়ে কোনো পক্ষ থেকেই কোনো সাড়া নেই। এমনকি বিস্ময়ের ব্যাপার হলো, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরাও বিষয়ে নীরব।

দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম শিক্ষার্থীদের সেশনজটের অভিশাপ থেকে রক্ষাকল্পে আশু পদক্ষেপের দাবি জানাচ্ছি। করোনা মহামারীকালীনের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর মাধ্যমে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। শিক্ষার্থীদের অনলাইনের মাধ্যমে ভার্চুয়াল শ্রেণীকক্ষে পাঠদান করে তাদের শিক্ষা কার্যক্রমে ফিরিয়ে আনার জন্য নিম্নরূপ প্রস্তাবনা উপস্থাপন করছি. প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অনলাইনে ভার্চুয়াল শ্রেণীকক্ষের মাধ্যমে শিক্ষাদানের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত হয়ে বাস্তুবতাভিত্তিক উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। . শিক্ষার্থীদের বিডিরেনের জুম অ্যাপের মাধ্যমে ভিডিও লেকচারে অংশগ্রহণের জন্য পর্যাপ্ত ইন্টারনেট সুবিধা ক্রয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সরকারিভাবে বিশেষ সহায়তা প্রদান প্রয়োজন। মোবাইল কোম্পানিগুলোর সঙ্গে আলোচনাসাপেক্ষে শিক্ষার জন্য বিশেষ শিক্ষা প্যাকেজ ইন্টারনেট চালু করা যেতে পারে। সরকার এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় প্রণোদনা প্যাকেজ অনুমোদন বাস্তবায়ন করতে পারে। . ছাত্রছাত্রীদেরও তাদের শিক্ষার স্বার্থে অন্যান্য দেশের ন্যায় অনলাইন প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের মাধ্যমে যথাসময়ে ডিগ্রি অর্জনে সচেষ্ট হতে হবে। . দেশের অনেক শিক্ষার্থী টিউশনি এবং নানা রকম অস্থায়ী চাকরির মাধ্যমে তাদের পড়াশোনা জীবনযাত্রার খরচ নির্বাহ করতেন। এসব শিক্ষার্থী আজ ভীষণ অর্থকষ্টে নিপতিত। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে এসব অসচ্ছল শিক্ষার্থীর জন্য বিশেষ বৃত্তির ব্যবস্থা করে তাদের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে সহায়তা করতে হবে। তাদের টিউশন ফি মওকুফ করে দিতে হবে। সরকারি শিক্ষা প্রণোদনার আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সুপারিশে অনলাইনে তাদের কাছ থেকে আবেদনপত্র নেয়া যেতে পারে। অসচ্ছল বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজের মাধ্যমে শিক্ষাসহায়তা নিশ্চিতভাবে জাতীয় এক বড় বিনিয়োগ হবে। . বিশ্ববিদ্যালয়গুলো স্ব-স্ব উদ্যোগে অথবা ইউজিসির সমন্বয়ে শিক্ষকদের অনলাইন কোর্স পরিচালনা, পরীক্ষা গ্রহণ এবং ফলাফল তৈরির বিষয়ে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। বিলম্ব হলেও এখনই শুরু করলে শিক্ষার্থীদের সেশনজটের অভিশাপ থেকে মুক্তি দেয়া সম্ভব বলে আমি মনে করি। কখন কভিড-১৯ মুক্ত পরিবেশে প্রচলিত মুখোমুখি শ্রেণীকক্ষে শিক্ষাদান শুরু হবে, তার জন্য অপেক্ষা করতে থাকা সমীচীন হবে না। ডিজিটাল বাংলাদেশের পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইন ব্যবস্থায় শিক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মূল্যবান সময়ের সদ্ব্যবহারে শিক্ষকরা নিবেদিত না হলে তারা জাতির কাছে দায়ী থাকবেন। প্রয়োজনে যেসব শিক্ষকের পর্যাপ্ত ইন্টারনেট সুবিধা নেই, তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে সে সুবিধা দিতে হবে। . অসচ্ছল যেসব শিক্ষার্থীর অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণের জন্য ল্যাপটপ অথবা অন্যান্য প্রয়োজনীয় ইলেকট্রনিক ডিভাইস নেই, তাদেরকে এসব শিক্ষা উপকরণ ক্রয়ের লক্ষ্যে সরকারের পক্ষ থেকে শিক্ষাঋণ প্রদানের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।

অনেকে মনে করেন, অনলাইনে কারিগরি বিষয়ে ব্যবহারিক শিক্ষা সঠিকভাবে দেয়া সম্ভব নয়। এটি পুরোপুরি সঠিক নয়। সারা পৃথিবীতে কভিড-১৯ রোগ শনাক্তকরণে ব্যবহূত রিয়েল টাইম পিসিআর পদ্ধতি চীনা বিজ্ঞানীরা উদ্ভাবনের পর পরই সারা পৃথিবী অনলাইনে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আয়ত্ত করেছে এবং রোগ শনাক্তকরণে সফলভাবে প্রয়োগ করেছে। আমাদের মনে রাখতে হবে যে অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থা কোনো নতুন শিক্ষা ব্যবস্থা নয়। অক্সফোর্ড, হার্ভার্ড, ক্যামব্রিজসহ পৃথিবীর প্রথম ১০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের সবগুলোতেই প্রচলিত শ্রেণীকক্ষের মুখোমুখি শিক্ষা ব্যবস্থার পাশাপাশি অনলাইনে সব স্তরের শিক্ষা প্রোগ্রাম চালু রয়েছে। পৃথিবীর সব বিজ্ঞান সাময়িকী, দৈনিক পত্রিকা গণমাধ্যম আজ অনলাইনে চলে গেছে। শক্তিশালী ডিজিটাল প্রযুক্তির প্রচলনের ফলে অনলাইন শিক্ষা আজ শ্রেণীকক্ষের শিক্ষাদানের চেয়েও অধিক শক্তিশালী এবং ব্যবহারবান্ধব। আমাদের দেশে শিক্ষার সব স্তরে অনলাইন ব্যবস্থা চালু করার জন্য জাতীয়ভাবে প্রকল্প প্রণয়ন প্রয়োজন। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে শ্রেণীকক্ষে পাঠদানের পাশাপাশি অনলাইন ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া এবং তাদেরকে প্রকৃত সময়ে শিখনে সম্পৃক্ত করা হয়। ফলে করোনাকালীন সহজেই তারা অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে পেরেছেন। অজানা কারণে দেশে অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থাকে অপূর্ণাঙ্গ বা দুর্বল ব্যবস্থা মনে করা হয়। অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য শিক্ষকদের মনোসংযোগ খুবই প্রয়োজন। শুধু শ্রেণীকক্ষের শিক্ষাই নয়, আজ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অনলাইনে গবেষক দলের নিয়মিত সভার মাধ্যমে প্রকৃত সময় মিথস্ক্রিয়া করা হচ্ছে। অনলাইনে সেমিনার কনফারেন্স হচ্ছে। অনলাইনে গ্র্যাজুয়েশন সেরিমনি অর্থাৎ সমাবর্তনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সময়মতো ডিগ্রি দেয়া হচ্ছে। অনলাইনে এমএসএমফিল পিএইচডি থিসিস ডিফেন্স দেয়া হচ্ছে। মূল লক্ষ্য হলো, শিক্ষার্থীদের যথাসময়ে ডিগ্রি প্রদানের মাধ্যমে তাদের জাতির জন্য অবদানের পথ উন্মুক্ত করা। করোনার জন্য কারো বয়স থেমে থাকবে না। আমাদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ প্রক্রিয়াও যথাসম্ভব অনলাইনে চালু রাখা প্রয়োজন।

আমাদের দেশে অনলাইনে টেন্ডার, ব্যবসা, দাপ্তরিক নথি, চিকিৎসা, টকশো, বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করা এবং গুরুত্বপূর্ণ নীতিনির্ধারণী সভা ইত্যাদির প্রচলন সর্বজনগ্রাহ্য হলেও অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থা চালুকরণে ব্যাপক উদ্যোগ লক্ষ করা যায়নি। ২০২১ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণ করতে হলে অনলাইন শিক্ষা প্রশিক্ষণে আমাদের দক্ষ হতে হবে। সীমিত দক্ষ জনশক্তি ভৌত সুবিধার দেশে অনলাইন শিক্ষা অতীব সম্ভাবনাময়। বিশ্বের নামিদামি শিক্ষদের অতিসহজে আমাদের তরুণ প্রজন্মকে শিক্ষাদানে সম্পৃক্ত করার দ্বার উন্মোচিত করার এখনই সময়। অনলাইন শিক্ষাসামগ্রী যতবার খুশি, যেখান থেকে খুশি, যখন খুশি ব্যবহার করা যায়; যা প্রচলিত শ্রেণীকক্ষ ব্যবস্থায় কল্পনাও করা যায় না। অনলাইন পাঠসামগ্রী যেহেতু উন্মুক্ত, সেজন্য এর মান সম্পর্কে সহজেই মূল্যায়ন করা যায়। একবার পাঠসামগ্রী তৈরি করলে তা সহজে নিয়মিত হালনাগাদ রাখা যায় এবং ভুল থাকলে পরিমার্জন করা যায়। অসংখ্য শিক্ষার্থী তা ব্যবহার করলেও কখনো তা শেষ হবে না। সুতরাং সীমিত সম্পদের বাংলাদেশে অনলাইন শিক্ষাসামগ্রী তৈরি করে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ই তা নিজস্ব ওয়েবসাইটে উন্মুক্ত করতে পারে। পৃথিবীর অনেক নামিদামি বিশ্ববিদ্যালয় যেমন এমআইটি ওপেন কোর্সওয়্যার নামে শত শত বিষয়ের কোর্সসামগ্রী ছাত্রছাত্রীদের জন্য, এমনকি অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্যও উন্মুক্ত করে রেখেছে। আমাদের দেশে খুব দক্ষ নামি শিক্ষকদের নিয়ে ওপেন কোর্সওয়্যার প্রকল্প চালু হতে পারে। এতে নবীন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শিক্ষকরা উপকৃত হবেন। সর্বোপরি উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়ন হবে।

অনলাইন শিক্ষাসামগ্রী কেবল ভিডিও লেকচার বা টেক্সট নয়। পেডাগজিক্যালি নানা রকম তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ওইসব শিক্ষাসামগ্রী এমনভাবে তৈরি করা হয় যেন তা স্বশিখন উপযোগী হয়। পরস্পর  মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে শিখন স্থায়ী কার্যকরী হয়। শিক্ষার্থীর প্রশ্ন করার, অন্যান্য শিক্ষার্থীর এবং শিক্ষকের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া করার  সুযোগ থাকে। অধুনা ইন্টারনেটে জুম, গুগলসহ নানা রকম ফ্রি লেকচার দেয়ার ব্যবস্থা চালু আছে। তবে পশ্চিমা বিশ্বে মুডুল, ব্ল্যাকবোর্ডসহ নানা রকম কাস্টমাইজড -লার্নিং প্রযুক্তি ব্যবহার হয়। কেউ কেউ ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমেও ছাত্রছাত্রীদের মিথস্ক্রিয়া শিখনে সম্পৃক্ত করে তথ্য বিনিময়ে এবং শিক্ষাসামগ্রী যথা প্রেজেন্টেশন, -লেকচার, ভিডিও লিংক, নতুন প্রকাশনা বা -কনটেন্টের লিংক শেয়ার করার জন্য ব্যবহার করেন। বাংলাদেশে যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর -লার্নিং অবকাঠামো খুব দুর্বল, জুম অ্যাপের মাধ্যমে সরাসরি লেকচার প্রদান, মিথস্ক্রিয়া, লেকচারগুলো রেকর্ডিং করে তা ইউটিউবে আপলোড করলে যেসব শিক্ষার্থী সরাসরি লেকচারে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না, তারাও বারবার ভিডিওগুলো দেখতে শুনতে পারবেন। পাশাপাশি প্রতিটি কোর্সের শুধু শিক্ষার্থীদের জন্য একটি ফেসবুক গ্রুপ পরিচালনা করে সব লেকচার, নির্দেশনা, ইউটিউব অন্যান্য ভিডিও লিংক প্রদান করে শিক্ষার্থীদের -শিখনে সম্পৃক্ত করা যেতে পারে। ফেসবুক শিক্ষার্থীদের নিজেদের মধ্যে এবং শিক্ষকের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়ার একটি উত্তম প্লাটফর্ম। সুতরাং বাংলাদেশের বর্তমান বাস্তবতায় বিডিরেনের জুম অ্যাপ, ইউটিউব ফেসবুকের সমন্বয়ে সহজেই অনলাইন শিক্ষা পরিচালনা করা যেতে পারে। তবে শিক্ষার্থী শিক্ষকদের পর্যাপ্ত ইন্টারনেট সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে আশু প্রণোদনা প্যাকেজ প্রণয়ন এবং চালু করা প্রয়োজন। অনলাইন ব্যবস্থায় নানা রকম সীমাবদ্ধতা থাকলেও আমাদের মেধাবী শিক্ষকরা এবং ছাত্রছাত্রীদের যৌথ প্রচেষ্টায় তা সফলভাবে বাস্তবায়ন সম্ভব। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, একবার অনলাইন ব্যবস্থা চালু করলে তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির নানা সুবিধার উদ্ভাবনী প্রয়োগে দেশে শিক্ষাদান গ্রহণে এক নতুন বিপ্লব সাধিত হবে। করোনা মহামারীকালীন শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন সচল রাখতে অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থা চালুর এখনই সময়।

বাংলাদেশে অনলাইন শিক্ষার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, শিক্ষার্থীদের ইন্টারনেট প্রযুক্তিতে প্রবেশাধিকারের ভিন্নতা। অনলাইন ভিডিও লেকচারে অংশগ্রহণে চাই উচ্চগতিসম্পন্ন ইন্টারনেট সুবিধা। শহরাঞ্চলে বসবাসকারী শিক্ষার্থীরা সুবিধা পেলেও দুর্গম গ্রামাঞ্চলে যেসব শিক্ষার্থী বর্তমানে অবস্থান করছেন, তাদের দুর্বল নেটওয়ার্কের জন্য ভিডিও লেকচারে অংশগ্রহণ প্রায় অসম্ভব। যদিও বিষয়ে সুনির্দিষ্ট পরিসংখ্যান আমার জানা নেই, তবে আমাদের দেশে অধিকাংশ শিক্ষার্থীর অনলাইন শিক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় ইন্টারনেট সুবিধা নেই। অনলাইন শিক্ষায় অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের ইন্টারনেট প্রবেশের সুযোগের ভিন্নতা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এমনকি উন্নত দেশেও রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ নরওয়ে, সুইজারল্যান্ড অস্ট্রিয়ার ৯৫ শতাংশ শিক্ষার্থীর প্রয়োজনীয় ইন্টারনেট প্রবেশের এবং ব্যবহারের সুবিধা পর্যাপ্ত রয়েছে। ফলে বাধাহীনভাবে তারা অনলাইন শিক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে সুবিধাবঞ্চিত শ্রেণীর প্রায় ২৫ শতাংশ শিক্ষার্থী অনলাইন শিক্ষায় অংশগ্রহণে বঞ্চিত হয়। কোনো কোনো দেশে শিক্ষার্থীদের মডেম, ইন্টারনেট সুবিধা সহায়তা সরকারিভাবে বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে দেয়া হয়। অস্ট্রেলিয়ার সাউথওয়েলসে ধরনের ব্যবস্থার প্রচলন রয়েছে। করোনাকালীন গৃহবন্দি শিক্ষার্থীদের মূল্যবান সময়ের অপচয় রোধকল্পে পৃথিবীর প্রায় সব উন্নত এবং বেশকিছু উন্নয়নশীল দেশে অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো সেমিস্টার চালিয়ে যাচ্ছে। চীনে প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়ে মহামারীকালীন অনলাইনে পাঠদান করে শিক্ষা কার্যক্রম চলমান রেখেছে। তবে আমাদের দেশে কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ব্যতীত অধিকাংশ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এখনো অনলাইন ব্যবস্থা চালুকরণে উদ্যোগী হয়নি। ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন বিডিরেনের জুম অ্যাপ ব্যবহার করে সব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে অনলাইনে শিক্ষা চালুকরণে নির্দেশনা দিলেও সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অধিকাংশই সাড়া দেয়নি। গত সপ্তাহে ইউজিসি ব্যাপারে শিক্ষক ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে অনলাইনে একটি জরিপ পরিচালনা করেছে। জরিপের মাধ্যমে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের অনলাইন শিক্ষার অভিজ্ঞতা এবং তাদের মানসিক প্রস্তুতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে।

আমাদের দেশে অনেকেই অনলাইন শিক্ষার কার্যকারিতা সম্পর্কে কিছুটা সন্দিহান বা দ্বিধাগ্রস্ত। তবে যথাযথ প্রযুক্তি প্রাপ্তি ব্যবহারে দক্ষতা থাকলে অনলাইন শিক্ষা শ্রেণীকক্ষের মুখোমুখি শিক্ষার চেয়েও বেশি কার্যকরী হতে পারে। ব্যাপারে বিশ্বব্যাপী প্রচুর গবেষণা হয়েছে। গবেষণায় দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা অনলাইন শিক্ষা উপকরণগুলো শ্রেণীকক্ষে সরবরাহকৃত উপকরণের চেয়ে বেশি সংরক্ষণ করে। অন্য এক গবেষণায় দেখা যায় যে -লার্নিংয়ের জন্য শিক্ষার্থীদের ৪০-৬০% কম সময় লাগে। শিক্ষার্থীরা অনলাইন ভিডিও অন্যান্য উপকরণ পুনঃ পুনঃ দেখতে পারে এবং এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা ব্যক্তিগত স্বাধীনতা, অধ্যয়ন সময়ের ব্যবহার ইত্যাদি ক্ষেত্রে অনেক সুবিধা পায়। এছাড়া একুশ শতাব্দীর যুবক-যুবতীদের ইন্টারনেট ব্যবহারের দক্ষতা অনেক বেশি, যা অনলাইন শিক্ষা প্রসারে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

অনলাইন কোর্স পরিচালনা একটি দূরশিক্ষণ ব্যবস্থা, যা শতবর্ষ পুরনো এবং প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা ব্যবস্থা। এক্ষেত্রে প্রথমেই আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে কোর্সটির কোন কোন অংশ সরাসরি ভিডিও লেকচার (যেমন জুম অ্যাপ) এবং কোন কোন অংশ টেক্সট আকারে ছাত্রছাত্রীদের সরবরাহ করবেন। কোন বিষয়ে ছাত্রছাত্রীদের দলগত কার্যাবলি অ্যাসাইনমেন্ট হিসেবে প্রদান করবেন। তবে যে কয়েকটি বিষয় আপনাকে বিশেষভাবে বিবেচনায় রাখতে হবে তা হলো, সময়সূচি যথাযথভাবে অনুসরণ, অনলাইন আলোচনা ফোরাম ব্যবহার, অডিও-ভিডিও ব্যবহার, যে টেক্সট বইগুলো অনুসরণ করা হবে এগুলোর তালিকা প্রদান এবং সর্বোপরি প্রদত্ত সব মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের প্রবেশের সুযোগ। সর্বদাই লাইভ লেকচারের সঙ্গে টেক্সট সামগ্রী বা লেকচার নোট দেয়া উত্তম। কোনো একটি বিষয়ের ওপর দলগত আলোচনার জন্য ফেসবুক ব্যবহার করা যেতে পারে। যদি লাইভ লেকচার প্রদানে আপনি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ না করেন, তবে পূর্ব রেকর্ডকৃত লেকচার ইউটিউবে আপলোড করে শিক্ষার্থীদের লিংক প্রদান করতে পারেন। তবে লাইভ অথবা রেকর্ডকৃত উভয় ক্ষেত্রেই প্রশ্ন-উত্তর প্রদানের মাধ্যমে ইন্টারেক্টিভ/মিথস্ক্রিয়ার সংযোজন করলে শিক্ষার্থীদের শিখন সহজ হয়। এছাড়া দলগত কাজের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শিখনে সম্পৃক্ত করলে তা খুবই কার্যকরী হয়। তবে এক্ষেত্রে দলগত কাজে সব শিক্ষার্থীর প্রযুক্তিতে অংশগ্রহণের সুযোগ থাকতে হবে। আপনাকে দলগত কাজের একটি সুস্পষ্ট গাইডলাইন এবং তা মূল্যায়নের বিষয়ে নীতিমালা আগেই জানিয়ে দিতে হবে। দলগত কর্মকাণ্ডগুলো সহজ এবং শিক্ষার্থীদের সাধ্যের মধ্যে রাখতে হবে যেন তারা এটা উপভোগ করে। শিখনসামগ্রী প্রদানের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে খেয়াল রাখা প্রয়োজন যে শিক্ষকের অনুপস্থিতিতে তা কতটুকু বোধগম্য হবে। এক্ষেত্রে অধ্যয়নের জন্য প্রদত্ত টেক্সট পাওয়ার পয়েন্ট লেকচারকে স্বশিখন উপযোগী করতে হবে। প্রতিটি ক্ষেত্রে উদাহরণ, বিস্তৃত ব্যাখ্যা এবং প্রশ্ন-উত্তর সংযোজন করে কিছুটা ইন্টারেক্টিভ সহজবোধ্য করতে হবে।  মূল লক্ষ্য হলো, শিক্ষার্থীরা যেন একা একা পড়ে তা সহজে বুঝতে পারেন। অপেক্ষাকৃত দুর্বোধ্য অংশগুলো লাইভ অনলাইন লেকচারে আলোচনা করতে হবে। যেহেতু লাইব্রেরি খোলা নেই, সেজন্য শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার জন্য পাঠ্য বিষয় সম্পর্কিত পর্যাপ্ত ইলেকট্রনিক পাঠসামগ্রী দিতে হবে। প্রয়োজনে ওপেন কোর্সওয়্যার বা অন্যান্য -কনটেন্টের লিংক দিতে হবে। বিষয়ে যদি ইন্টারনেটে কোনো ভিডিও থাকে, এর লিংক দিতে হবে। প্রতিটি লাইভ লেকচার মিথস্ক্রিয়ার সেশনগুলো রেকর্ডিং করে ইউটিউবে আপনার নিজস্ব চ্যানেলে আপলোড করে এর লিংক শিক্ষার্থীদের দেয়া যেতে পারে, যেন তারা বারবার শুনে বা দেখে পাঠ্যবিষয় ভালোভাবে আয়ত্ত করতে পারেন। অনলাইন শিখনের একটি বড় চ্যালেঞ্জ হলো ছাত্রছাত্রীদের শিখনের মূল্যায়ন। বিশ্বের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ইলেকট্রনিক অ্যাসেসমেন্ট সিস্টেম রয়েছে। কিন্তু আমাদের অধিকাংশ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে লাইভ পরীক্ষা গ্রহণের কোনো সুযোগ নেই। সেক্ষেত্রে জুম অ্যাপের মাধ্যমে পরীক্ষা নেয়া এবং -মেইলে উত্তরপত্র পাঠানোর ব্যবস্থা করা যেতে পারে। তবে পর্যাপ্ত ইন্টারনেট সুবিধা পরীক্ষাকালীন নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এক্ষেত্রে -মেইলের মাধ্যমে প্রশ্ন দিয়ে ওপেন বুক পরীক্ষা নেয়া যেতে পারে। সেজন্য শিক্ষকদের সৃজনশীল উদ্ভাবনী প্রশ্ন করতে হবে। অনলাইন কুইজ পরীক্ষা, দলগত কাজের মূল্যায়ন, ব্যক্তিগত অ্যাসাইনমেন্ট, মৌখিক পরীক্ষা (মেসেঞ্জার বা জুমের মাধ্যমে) ইত্যাদি নানা সুবিধাজনক বাস্তবভিত্তিক মূল্যায়নের প্রচলন করে শিক্ষার্থীদের শিখন স্তর পরিমাপ করা যেতে পারে।

কভিড-১৯ মহামারী আমাদের ব্যক্তিগত, দাপ্তরিক সামাজিক কর্মকাণ্ডে নাটকীয় পরিবর্তনে বাধ্য করেছে। সুতরাং শিক্ষা ক্ষেত্রে শতাব্দীব্যাপী চলমান এবং সামাজিক প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বিশ্বব্যাপী গৃহীত দূরশিক্ষণের মাধ্যমে উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা এখন সময়ের দাবি। অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থা চালুকরণে এবং দক্ষভাবে তা ব্যবহারের সবচেয়ে বড় বাধা পর্যাপ্ত ইন্টারনেট সুবিধা নিশ্চিতকরণে আমাদের শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় যৌথভাবে কাজ করতে পারে। উচ্চশিক্ষায় নিয়োজিত ছাত্রছাত্রী শিক্ষকদের পর্যাপ্ত ইন্টারনেট সুবিধা নিশ্চিত করতে না পারলে আমরা কীভাবে আগামী বছর জাতীয় রূপকল্প ডিজিটাল বাংলাদেশ অর্জিত হয়েছে, তা সেলিব্রেট করব? শিক্ষা ক্ষেত্রে দক্ষতার সঙ্গে কাঙ্ক্ষিত অনলাইন ব্যবস্থা চালু করে করোনাকালীন উচ্চশিক্ষা নিয়মিত রাখায় সফল হলে মডেল দেশে স্বাস্থ্য এবং অন্যান্য গণযোগাযোগ কর্মসূচিতে ব্যবহার করা যাবে।

 

. তোফাজ্জল ইসলাম: বিজ্ঞান একাডেমির ফেলো এবং পরিচালক

আইবিজিই, বশেমুরকৃবি

[email protected]

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন