ফোরজি স্পেকট্রাম বিক্রি

৪ লাখ কোটি রুপি আয়ের পরিকল্পনা ভারতের

বণিক বার্তা ডেস্ক

নভেল করোনাভাইরাসের কারণে চাপে পড়েছে বৈশ্বিক অর্থনীতি। মরণঘাতী ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে গিয়ে উৎপাদন, আমদানি, রফতানি স্থবির হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে স্বাস্থ্য খাতে ঢালতে হচ্ছে কাঁড়ি কাঁড়ি অর্থ। অবস্থায় বিশ্বের অনেক দেশের সরকারি কোষাগার তলানিতে এসে ঠেকেছে। যে কারণে নগদ অর্থের সংকটে থাকা এসব দেশ আয় বাড়াতে মরিয়া হয়ে কাজ করছে। ভারত সরকার এদিক থেকে বেশ জোরেশোরেই কাজ করছে। আয় বাড়াতে গত মাসের শুরুর দিকে বিদেশী ইন্টারনেট জায়ান্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর বাড়তি ভ্যাটের ঘোষণা দেয় দেশটি। আর নতুন করে ফোরজি স্পেকট্রাম বিক্রির পরিকল্পনা করছে দেশটির সরকার। অগ্রাধিকার খাত হিসেবে এখান থেকে দেশটি লাখ কোটি রুপি অর্থ আয়ের পরিকল্পনা করছে। সরকারের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এরই মধ্যে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের জন্য বিষয়ে একটি খসড়াও তৈরি করেছে, যা চলতি মাসেই মন্ত্রিপরিষদে অনুমোদনের জন্য উঠতে পারে। খবর ইটি টেলিকম।

সরকারের এমন পরিকল্পনার আগ থেকেই টেলিকম কোম্পানিগুলো ফোরজি স্পেকট্রাম বিক্রির বিষয়ে সরকারকে বোঝানোর চেষ্টা করে আসছিল। এর মধ্যে অন্যতম ছিল দেশটির শীর্ষ দুই টেলিকম অপারেটর প্রতিষ্ঠান ভারতী এয়ারটেল রিলায়েন্স জিও ইনফোকম। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ডাটা ভয়েস সেবার চাহিদা বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে ফোরজি স্পেকট্রাম ক্রয়কে অগ্রাধিকার দিচ্ছিল প্রতিষ্ঠান দুটো। এছাড়া আগামী বছর এয়ারওয়েভসের অনুমোদনের সময় শেষ হওয়ায় আগাম প্রস্তুতি নিচ্ছিল প্রতিষ্ঠানটি। অবস্থার মধ্যেই কভিড-১৯ সৃষ্ট পরিস্থিতিতে সরকারি কোষাগারে টান পড়েছে। ফলে সরকার এখন অর্থ আয় করার জন্য ফোরজি স্পেকট্রামের নিলামের পরিকল্পনা করছে।

সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ফোরজি স্পেকট্রাম নিলামের বিষয়টি নিয়ে তৈরি খসড়া আন্তঃমন্ত্রণালয়ের পরামর্শের জন্য খুব দ্রুত উপস্থাপন করা হবে। এর পরই এটি যাবে মন্ত্রিপরিষদে। সেখানে অনুমোদন পাওয়ার পরই নিলামের তারিখ নির্দিষ্ট করা হবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সরকারের অন্য একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ভারতী এয়ারটেল জিও ইনফোকম দ্রুত এয়ারওয়েভস পেতে এরই মধ্যে অনানুষ্ঠানিকভাবে টেলিযোগাযোগ বিভাগকে তাগাদা দিয়ে আসছে। যদিও টেলিকম প্রতিষ্ঠান দুটো বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

জানা গেছে, টেলিযোগাযোগ বিভাগ এরই মধ্যে স্পেকট্রাম নিলামের বিষয়ে প্রাথমিক প্রস্তুতি নিয়েছে। বছর ফোরজি এয়ারওয়েভস বিক্রির পর আগামী বছরে ফাইভজি ব্যান্ডউইথ বিক্রির পরিকল্পনাও রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির। ফোরজি এয়ারওয়েভসের জন্য প্রাথমিকভাবে ৭০০, ৮০০, ৯০০, হাজার ৮০০, হাজার ১০০, হাজার ৩০০ হাজার ৫০০ মেগাহার্জকে নির্ধারণ করেছে। আর হাজার ৩০০ থেকে হাজার ৬০০ মেগাহার্জ ব্র্যান্ডকে ফাইভজির জন্য নির্দিষ্ট করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

তবে প্রযুক্তি খাতের ইকোসিস্টেম উন্নত হওয়ার পর পরবর্তী জেনারেশনের ফাইভজি প্রযুক্তিতে ৭০০ ৮০০ মেগাহার্জ ব্যবহার করা হতে পারে বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্ট বিশ্লেষকরা।

রেটিং ফার্ম আইসিআরএ বলছে, ফাইভজি ব্যান্ড ব্যতীতই সরকার হাজার ৪৭৫ মেগাহার্জ স্পেকট্রাম নিলামে উঠাতে পারে, যার ভিত্তিমূল্য দাঁড়াতে পারে লাখ ৩৫ হাজার কোটি রুপি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন