আজ সীমিত পরিসরে চালু হচ্ছে গণপরিবহন

বাস ভাড়া বাড়ল ৮০ শতাংশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে দীর্ঘ দুই মাস বন্ধ থাকার পর সারা দেশে বাস চলাচল শুরু হচ্ছে আজ। স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাস ভ্রমণে বাড়তি ভাড়া গুনতে হবে যাত্রীদের। মালিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) বাস ভাড়া ৮০ শতাংশ বাড়ানোর সুপারিশ করেছে। সড়ক পরিবহন সেতু মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পরিপ্রেক্ষিতে এটি কার্যকর হবে।

এতদিন পর্যন্ত আন্তঃজেলা দূরপাল্লার রুটে কিলোমিটারপ্রতি সরকার নির্ধারিত ভাড়া ছিল টাকা ৪২ পয়সা। বিআরটিএর সুপারিশে মন্ত্রণালয় অনুমোদন করলে কাল থেকে আন্তঃজেলা দূরপাল্লায় প্রতি কিলোমিটারে ভাড়া আদায় করা হবে টাকা ৫৬ পয়সা হারে। এক্ষেত্রে ঢাকা চট্টগ্রাম মহানগরের জন্য আগে কিলোমিটারপ্রতি ভাড়া ছিল টাকা ৬০ পয়সা করে। ৮০ শতাংশ বাড়ানোর পর তা উন্নীত হবে কিলোমিটারপ্রতি টাকা ৮৮ পয়সায়। একই হারে ভাড়া আদায় হবে নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, নরসিংদী, গাজীপুর ঢাকা জেলায়ও। এর আগে ২০১৫ সালের মে মাসে সর্বশেষ বাস ভাড়া বাড়ানো হয়েছিল।

তবে ভাড়ার হার কার্যকর করতে হলে বাসগুলোকে অবশ্যই ৫০ শতাংশ আসন ফাঁকা রাখতে হবে। এছাড়া কোনো যাত্রী দাঁড়িয়ে চলাচল করতে পারবে না। গতকাল বিআরটিএর ভাড়া পর্যালোচনা কমিটির এক বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

বিষয়ে জানতে চাইলে বিআরটিএর চেয়ারম্যান ইউসূব আলী মোল্লা বণিক বার্তাকে বলেন, নভেল করোনাভাইরাসের কারণে যাত্রীবাহী বাসের ৫০ শতাংশ আসন ফাঁকা থাকবে। এসব ফাঁকা আসনের ভাড়া যাত্রীদেরই দিতে হবে। কারণে আমরা বিদ্যমান ভাড়া ৮০ শতাংশ বাড়ানোর সুপারিশ করেছি। এরই মধ্যে সুপারিশ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। খুব দ্রুত মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়া হবে।

এর আগে শুক্রবার বাস চালুর বিষয়ে বিআরটিএর কার্যালয়ে একটি জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির নেতারা বাস ভাড়া দ্বিগুণ করার প্রস্তাব দেন। এক্ষেত্রে তারা যুক্তি দেখান, স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাত্রী তুলতে হলে ৫০ শতাংশ আসন ফাঁকা রাখতে হবে। তাই ভাড়া দ্বিগুণের কম বাড়ানো হলে পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা ক্ষতির মুখে পড়বেন।

বাড়তি ভাড়া সরকারের কাছ থেকে ভর্তুকি হিসেবে বা যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত হিসেবে আদায় করা যেতে পারে বলে ওই সময় প্রস্তাবও দেন মালিকরা। বিআরটিএর ভাড়া পর্যালোচনা কমিটির বৈঠকেও বাড়তি ভাড়া যাত্রীদের কাঁধেই চাপানো হয়েছে।

এর আগে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, গণপরিবহন চালুর পর স্বাস্থ্যবিধি, সামাজিক দূরত্ব শারীরিক দূরত্ব কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে। বাস টার্মিনালে কোনোভাবেই ভিড় করা যাবে না। তিন ফুট দূরত্ব বজায় রেখে যাত্রীরা গাড়ির জন্য লাইনে দাঁড়াবেন এবং টিকিট কাটবেন। স্টেশনে পর্যাপ্ত হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রাখতে হবে। পরিবারের সদস্য হলে পাশের সিটে বসানো যাবে, অন্যথায় নয়। যাত্রী, চালক, সহকারী, কাউন্টারের কর্মী, সবার জন্য মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। ট্রিপের শুরুতে এবং শেষে বাধ্যতামূলকভাবে গাড়ির অভ্যন্তরভাগসহ পুরো গাড়িতে জীবাণুনাশক স্প্রে করতে হবে। যাত্রী ওঠানামার সময় শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে হবে। চালক, কন্ডাক্টরদের ডিউটি একটানা দেয়া যাবে না। তাদের নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কোয়ারেন্টিন বা বিশ্রাম দিতে হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন