ঘূর্ণিঝড় আম্পান

ঝিনাইদহে ফসলের ক্ষতি ৮৯ কোটি টাকা

বণিক বার্তা প্রতিনিধি ঝিনাইদহ

চলতি বছর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট প্রথম ঘূর্ণিঝড় আম্পান ২০ মে স্থলভাগে আছড়ে পড়ে। উপকূলীয় জেলা না হয়েও ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডব থেকে রেহাই পায়নি ঝিনাইদহ। আম্পানের আঘাতে জেলায় ৮৮ কোটি ৮৯ লাখ টাকার ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে তথ্য জানা গেছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের নানাভাবে সহযোগিতা দেয়ার চেষ্টা চলছে।

সূত্র জানায়, ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ঝিনাইদহে প্রায় লাখ ২৭ হাজার কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব কৃষকের দেড় হাজার হেক্টর কলা, হাজার ২৫ হেক্টর শাকসবজি, হাজার ৯৫০ হেক্টর মুগ ডাল, হাজার ২০ হেক্টরের তিল, ৭৫০ হেক্টর মরিচ, ১০০ হেক্টর বোরো ধান, হাজার ৫০০ হেক্টর পান বরজ, হাজার ৮৭৫ হেক্টর আম বাগান ৪১৮ হেক্টর লিচু বাগান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। টাকার অংকে ফসলের ক্ষতির পরিমাণ ৮৮ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণের মধ্যে এমন ক্ষতির মুখে পড়ে অনেক কৃষক পথে বসার উপক্রম। সরকারিভাবে সহযোগিতা না পেলে এরা ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন না।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জানান, উপকূলীয় জেলা না হওয়ায় ঘূর্ণিঝড় ঝিনাইদহে তীব্রভাবে আঘাত হানতে পারে, এমন আশঙ্কা আমাদের মনে ছিল না। তাই ফসল নিয়ে খুব একটা চিন্তিত ছিলাম না। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় চলে যাওয়ার পর মাঠে গিয়ে দেখা যায় সব তছনছ হয়ে গেছে। কারো কলা, কারো পান, আর কারো ধান নষ্ট হয়েছে। করোনার মধ্যে ফসলই ছিল আমাদের একমাত্র অবলম্বন। এখন আমাদের পরিবার নিয়ে খেয়ে না খেয়ে থাকতে হবে। পরবর্তী ফসল তোলার আগ পর্যন্ত ধারদেনা করে চলতে হবে।

হরিণাকুণ্ডু উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের কৃষক রাশেদুল ইসলাম জানান, ঘূর্ণিঝড় আম্পানে আমার দেড় বিঘা জমির পানের বরজ নষ্ট হয়ে গেছে। বরজে প্রায় আড়াই লাখ টাকার পান ছিল। বিধ্বস্ত পান বরজ মেরামত করতে এখন প্রায় লাখ টাকা খরচ হবে।

সদর উপজেলার হলিধানী গ্রামের কলা চাষী কাদের মিয়া বলেন, বছর আড়াই বিঘা জমিতে কলা চাষ করেছিলাম। কলা বিক্রি করে লাখ টাকা আয় হবে বলে আশা করেছিলাম। কিন্তু আম্পান পুরো ক্ষেতই নষ্ট করে দিয়েছে।

মহেশপুর উপজেলার নাটিমা গ্রামের কৃষক শামীম হোসেন বলেন, আম্পানের কারণে আমার মাছের খামার ভেসে গেছে। ১০ বিঘা জমির কলার ক্ষেত নষ্ট হয়েছে। বলতে গেলে এখন পথে বসার উপক্রম।

শৈলকুপা উপজেলার ফুলহরি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জামিনুর রহমান বিপুল বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্পানে শৈলকুপায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফুলহরি ইউনিয়ন। কৃষকদের তালিকা করে সরকারিভাবে সহযোগিতা করা গেলে তারা ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন।

ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃপাংশু শেখর বিশ্বাস বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করা হয়েছে। পান, কলা, আম, লিচুসহ অন্যান্য ফসল যা অবশিষ্ট রয়েছে তা সংরক্ষণ বিপণণের জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এছাড়া মাঠে মাঠে গিয়ে কৃষকদের সহযোগিতার চেষ্টা চলছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন