জিও প্লাটফর্মে ফেসবুকের বিনিয়োগে বিস্মিত নয় ওয়ালমার্ট

বণিক বার্তা ডেস্ক

ভারতীয় ধনকুবের মুকেশ আম্বানির মালিকানাধীন রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের (আরআইএল) অধীনস্থ টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠান জিও ইনফোকমের বড় একটি অংশের মালিকানা কিনেছে সোস্যাল মিডিয়া জায়ান্ট ফেসবুক। গত এপ্রিলের অধিগ্রহণ চুক্তির মূল্য ৫৭০ কোটি ডলার, যা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৪৩ হাজার ৫৭৪ কোটি রুপি। ভারতীয় জায়ান্ট প্রতিষ্ঠানটিতে বিলগ্নীকরণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে এখন পর্যন্ত দশমিক শতাংশ হিস্যা নিয়ে এগিয়ে রয়েছে মার্কিন প্রতিষ্ঠানটি। তবে জিও প্লাটফর্মে ফেসবুকের বিনিয়োগে মোটেই বিস্মিত নন আরেক মার্কিন জায়ান্ট ওয়ালমার্ট। -কমার্স মার্কেটপ্লেস ফ্লিপকার্টের মালিক প্রতিষ্ঠানটি মনে করছে ভারতের মতো বৃহৎ বাজারে ফেসবুকের বিনিয়োগ খুবই স্বাভাবিক একটি ঘটনা। খবর ইটি টেলিকম।

মার্কিন খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানটির প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা (সিএফও) ব্রেট ব্রিগস বলেন, রিলায়েন্স, অ্যামাজনের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো অনলাইন খুচরা বাজার ধরার জন্য প্রতিযোগিতা করছে। ১৩০ কোটি জনসংখ্যার দেশে বিনিয়োগ করা যেকোনো প্রতিষ্ঠানের জন্য আকর্ষণীয়। এছাড়া ভারতের মতো উদীয়মান বাজারে মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলোর বিনিয়োগের পেছনে আরো অনেক কারণ রয়েছে বলেও জানান তিনি। কারণে ফ্লিপকার্টের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ওয়ালমার্ট ফেসবুকের বিনিয়োগ নিয়ে মোটেই বিস্ময়ের কিছু দেখছে না। ভারতের বাজারে অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী জিও ইনফোকমে ফেসবুকের বিনিয়োগ ওয়ালমার্টের বাজার ব্যবস্থাপনায় কোনো পরিবর্তন আনবে কিনা, এমন প্রশ্নের উত্তরে এমনটি জানান কর্মকর্তা। বার্নস্টেইনে বার্ষিক সম্মেলনে এমনটি জানান তিনি।

এমন একটি সময়ে ভারতের জায়ান্ট প্রতিষ্ঠানটিতে ফেসবুকসহ মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলো হুমড়ি খেয়ে বিনিয়োগে নেমেছে, যখন দেশটির বাজারে খারাপ সময় পার করছে ফ্লিপকার্ট। গেল মার্চ এপ্রিলে দেশটির বাজারে ফ্লিপকার্টের অনলাইন অফলাইন দুটো প্লাটফর্মেই বিক্রি উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। যদিও এর পেছনে অন্যতম কারণ চলমান মহামারী। নভেল করোনাভাইরাসের (কভিড-১৯) বিস্তার ঠেকাতে ভারতের জারি করা লকডাউনের কারণে বিক্রিতে বড় প্রভাব পড়েছে খুচরা এসব বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানের।

কভিড-১৯-এর ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ভারতের বাজারে অনলাইন প্লাটফর্মগুলোর ধরাবাধা নিয়ম আরোপ করে দেশটির সরকার। বিধিনিষেধের আওতায় খাদ্য মুদিপণ্য ব্যতীত অনলাইন প্লাটফর্মগুলোকে অন্যান্য পণ্য বিক্রি বন্ধ করে দেয়। যদিও ধরনের পণ্য খুবই কম বিক্রি করে থাকে ফ্লিপকার্ট। আর কারণে ভারতের বাজারে এখন কিছুটা মন্দ সময় পার করছে মার্কিন প্রতিষ্ঠানটি। তবে খুব দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে আশা করছে তারা।

ব্রিগস বলেন, আমরা ভারতের কিছুটা কার্যক্রম শুরু করছি। আমি মনে করি অন্যান্য দেশের মতো ভারতও লকডাউন শিথিলের পথে হাঁটবে। ভারত কিছুটা আগাম লকডাউন কার্যকর করেছে। তবে দেশটি আমাদের জন্য একটি বড় বাজার। যেখানে আমরা দীর্ঘদিন ধরে কার্যক্রম পরিচালনা করতে চাই।

উল্লেখ্য, ঋণের বোঝা কমাতে একের পর এক ব্যবসায় বিলগ্নীকরণের দিকে ঝুঁকছে মুকেশ আম্বানির মালিকানাধীন আরআইএল। এরই অংশ হিসেবে জিও ইনফোকমের একটা অংশের মালিকানা ফেসবুকসহ বেশ কয়েকটি মার্কিন প্রতিষ্ঠানের বিক্রি করেছে ভারতীয় জায়ান্ট প্রতিষ্ঠানটি। এখন পর্যন্ত টেলিকম প্রতিষ্ঠানটি তার মালিকানার ১৭ শতাংশ বিক্রি করেছে। জিও প্লাটফর্মে বিনিয়োগকারীর প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ফেসবুক ছাড়া আরো রয়েছে সিলভার লেক, ভিস্তা ইকুইটি পার্টনার, গ্লোবাল গ্রোথ ইকুইটি ফার্ম জেনারেল আটলান্টিক মতো মার্কিন প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ করেছে ফেসবুক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম জায়ান্টটি জিও প্লাটফর্মের প্রায় ১০ শতাংশ মালিকানা কিনেছে। গত এপ্রিলের অধিগ্রহণ চুক্তির মূল্য ৫৭০ কোটি ডলার, যা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৪৩ হাজার ৫৭৪ কোটি রুপি। ফেসবুকের পরই মালিকানা কেনে আরেক মার্কিন প্রাইভেট ইকুইটি প্রতিষ্ঠান সিলভার লেক। জিও প্লাটফর্মের দশমিক ১৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ পেতে হাজার ৬৫৫ কোটি রুপি বিনিয়োগ করছে প্রতিষ্ঠানটি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন