অ্যাপোক্যালিপ্সের কারণে পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষ জম্বিতে পরিণত হয়েছে। বেঁচে যাওয়া মানুষরা জম্বিদের থেকে বাঁচতে আশ্রয় নিয়েছে বিশাল এক দেয়ালের ভেতরে। এর আট বছর পর ‘আর’ নামে একটি জম্বির সঙ্গে দেখা হয় জুলি নামের এক নারীর। জুলিকে দেখে ‘আর’ আকৃষ্ট হয় এবং জম্বি হওয়ার পর এ প্রথমবার তার হূদয়ে মানবিক অনুভূতি সাড়া দেয়। কিন্তু জম্বিদের তো হূদস্পন্দন থাকে না। তাহলে কি ‘আর’ নামক জম্বিটি আবার মানুষে রূপান্তরিত হচ্ছে! এমনি এক কাহিনী নিয়ে নির্মিত হয়েছে ‘ওয়ার্ম বডিস’। চলচ্চিত্রটিতে একজন মানুষ ও একটি জম্বির মধ্যকার সম্পর্ককে দেখানো হয়েছে। জম্বি চরিত্রগুলোয় মানবিক বৈশিষ্ট্য প্রদর্শন এবং পুরো ছবিটি এক জম্বির দৃষ্টিকোণ থেকে দেখানোর জন্য বেশ সমাদৃত হয়েছিল।
ছবির গল্পে দেখা যায় একটি জম্বি, যার নাম ‘আর’। তার হূদস্পন্দন নেই। সে মানুষের মাংস, বিশেষত মস্তিষ্ক খাওয়ার নেশায় আসক্ত। সে যখন কোনো মানুষের মস্তিষ্ক খায়, তখন সে ভুক্তভোগীর স্মৃতিগুলোর অভিজ্ঞতা অর্জনের মধ্য দিয়ে ‘জীবিতবোধ করতে’
সক্ষম হয়। ‘আর’ ও ‘এম’সহ বেশ কয়েকটি জম্বি বিমানবন্দরে খাবারের খোঁজে ঘুরতে থাকে। তারা নিজেদের মধ্যে বিভিন্ন রকম ছোট ছোট শব্দ এবং গোঙ্গানির মাধ্যমে প্রাথমিক যোগাযোগ করতে শিখে নেয়।
জুলি ও তার কয়েকজন বন্ধু মেডিকেল সরবরাহ পুনরুদ্ধারে বিমানবন্দরে আসে। সেখানে খাবার খুঁজতে থাকা এক দল জম্বির সঙ্গে মুখোমুখি হয় তারা। জম্বির সেই দলে আর ও এমও ছিল। আর জুলিকে দেখে তার প্রতি আকৃষ্ট হয়; তার হূদয় প্রথমবারের জন্য স্পন্দিত হয়। জুলির বয়ফ্রেন্ড পেরি আরের বুকে গুলি করলে সে পেরিকে মেরে ফেলে। জুলি যখন অন্য জম্বিদের থেকে নিজেকে বাঁচাতে ব্যস্ত, তখন আর পেরির মস্তিষ্ক খেয়ে ফেলে। পেরির স্মৃতি জুলির প্রতি আরের আকর্ষণ আরো বাড়িয়ে দেয়। সে জুলির মুখের ওপর কিছু জম্বির রক্ত লাগিয়ে দেয়, যাতে অন্য জম্বিরা জুলির ঘ্রাণ না পায়। এভাবে সে জম্বি দলের হাত থেকে জুলিকে উদ্ধার করে। এবং তাকে সুরক্ষিত রাখতে সে নিজে যে বিমানটিতে বাস করে সেখানে নিয়ে যায়।
বাইরে অন্য জম্বিরা থাকায় জুলিকে কিছুদিন থেকে যেতে বলে আর। জুলি প্রথমে তাকে ভয় পেলেও ধীরে ধীরে বুঝতে পারে সে অন্য জম্বিদের থেকে আলাদা। সময় কাটানোর জন্য জুলি আরের সঙ্গে গান শোনে, গেম খেলে। এতে আরের হূদস্পন্দন বাড়তে থাকে।
জুলি তার ঠিকানায় ফিরে গেলে আর তাকে দেখতে যায়। সেখানে জুলির বাবা আরের কাঁধে গুলি করে। এতে তার শরীর থেকে রক্তপাত শুরু। সবাই বুঝতে পারে আর জম্বি থেকে মানুষে রূপান্তরিত হয়েছে। এ সময় আর তাদের বলে অন্য জম্বিরাও পরিবর্তিত হচ্ছে।
‘ওয়ার্ম বডিস’
ছবিটি রচনা ও পরিচালনা করেছেন জোনাথন লেভাইন। ছবিটি আইজাক মেরিয়ানের ‘ওয়ার্ম বডিস’
উপন্যাস অবলম্বনে একই নামে নির্মিত। ২০১৩ সালে মুক্তি পাওয়া এ ছবিতে নিকোলাস হল্ট, টেরেসা পামার, অ্যালেলি টিপটন ও ডেভ ফ্রাঙ্কোসহ অনেকে অভিনয় করেছেন।