এশিয়ার চালের বাজারে সর্বশেষ সপ্তাহে মিশ্র প্রবণতা দেখা গেছে। দীর্ঘদিন ধরে ভারতে খাদ্যপণ্যটির রফতানিমূল্য এক বছরের বেশি সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ ছিল। তবে গত সপ্তাহে তা আগের তুলনায় কমে এসেছে। কমতির দিকে ছিল থাইল্যান্ডের চালের রফতানিমূল্যও। তবে এ সময় ভিয়েতনামে খাদ্যপণ্যটির রফতানিমূল্যে চাঙ্গা ভাব দেখা গেছে। খবর ফিন্যান্সিয়াল পোস্ট ও রয়টার্স।
ভারত বিশ্বের শীর্ষ চাল রফতানিকারক দেশ। সর্বশেষ সপ্তাহে দেশটির বাজারে রফতানিযোগ্য ৫ শতাংশ ভাঙা চাল টনপ্রতি ৩৭০-৩৭৫ ডলারে বিক্রি হয়েছে। আগের সপ্তাহেও দেশটির বাজারে খাদ্যপণ্যটি টনপ্রতি ৩৮৫-৩৮৯ ডলারে বিক্রি হয়েছিল। ২০১৯ সালের এপ্রিলের পর এটাই ভারতের বাজারে চালের সর্বোচ্চ রফতানিমূল্য। সেই হিসাবে এক সপ্তাহের ব্যবধানে ভারতের বাজারে রফতানিযোগ্য ৫ শতাংশ ভাঙা চালের দাম টনে সর্বোচ্চ ১৫ ডলার কমেছে।
ভারতীয় ট্রেডাররা জানান, নভেল করোনাভাইরাসের মহামারীর কারণে লকডাউনের শুরুর দিকে চালের রফতানি চাহিদা বাড়তে শুরু করেছিল। তবে ওই সময় সরবরাহ বিঘ্নিত হয়ে খাদ্যপণ্যটির দাম বেড়ে যায়। এখন চাহিদা অপরিবর্তিত থাকলেও সরবরাহ সমস্যা অনেকটাই কেটেছে। ফলে আগের তুলনায় চালের দাম কমে এসেছে। একই সঙ্গে মুদ্রাবাজারে ভারতীয় রুপির দুর্বল অবস্থান খাদ্যপণ্যটির রফতানিমূল্য কমিয়ে দিয়েছে।
চাল রফতানিকারক দেশগুলোর বৈশ্বিক শীর্ষ তালিকায় থাইল্যান্ডের অবস্থান দ্বিতীয়। সর্বশেষ সপ্তাহে দেশটির বাজারে প্রতি টন ৫ শতাংশ ভাঙা চাল সর্বোচ্চ ৪৯০ ডলারে বিক্রি হয়েছে। এর আগের সপ্তাহেও খাদ্যপণ্যটির সর্বোচ্চ দাম ছিল টনপ্রতি ৫০৫ ডলার। অর্থাৎ এক সপ্তাহে থাইল্যান্ডে রফতানিযোগ্য ৫ শতাংশ ভাঙা চালের দাম টনপ্রতি ১৫ ডলার কমেছে।
ব্যাংককভিত্তিক ট্রেডাররা বলছেন, ভারত অত্যন্ত কম দামে চাল রফতানি করছে। নভেল করোনাভাইরাসের মহামারীর ধাক্কা সামলে ভিয়েতনাম চালের রফতানি বাজার পুনরায় চালু করেছে। ফলে অনেক আমদানিকারক থাইল্যান্ডের বদলে ভারত কিংবা ভিয়েতনাম থেকে চাল আমদানি বাড়িয়েছেন। এতে থাইল্যান্ডের বাজারে খাদ্যপণ্যটির রফতানি চাহিদা আগের তুলনায় কমেছে। এর প্রভাব পড়েছে চালের দামে।
তাদের মতে, রফতানিকারকরা চাল নিয়ে বসে আছেন। তবে ক্রেতা আগের তুলনায় কমে গেছে। এ পরিস্থিতি থাইল্যান্ডে চালের দরপতনের পেছনে প্রভাবক হিসেবে কাজ করছে। আগামী দিনগুলোতেও দেশটিতে চালের রফতানিমূল্য কমতির দিকে থাকতে পারে বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।
তবে ভারত ও থাইল্যান্ডে কমলেও সর্বশেষ সপ্তাহে ভিয়েতনামে চালের বাজার তুলনামূলক চাঙ্গা ছিল। এ সময় দেশটিতে রফতানিযোগ্য ৫ শতাংশ ভাঙা চাল টনপ্রতি ৪৫০-৪৬০ ডলারের মধ্যে বিক্রি হয়েছে। আগামী সপ্তাহগুলোয় দেশটিতে চালের রফতানিমূল্য বর্তমানের তুলনায় আরো বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এর পেছনে প্রভাবক হিসেবে কাজ করবে খাদ্যপণ্যটির বাড়তি রফতানি চাহিদা।
