জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকাণ্ড

মিনোপলিসের বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে একাধিক শহরে

বণিক বার্তা ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটায় পুলিশের হাতে ৪৬ বছর বয়সী কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় উত্তাল হয়ে উঠেছে অঙ্গরাজ্যের বৃহত্তম শহর মিনোপলিস। একই সঙ্গে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে নিউইয়র্ক, ডেনভার, শিকাগো অকল্যান্ডের মতো শহরে। বিক্ষোভকারীরা স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাতে সহিংস হয়ে ওঠেন। সময় মিনোপলিসের একটি থানায় আগুন ধরিয়ে দেয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে লুট, অগ্নিসংযোগ ভাংচুরের ঘটনাও ঘটে। খবর রয়টার্স গার্ডিয়ান।

২৫ মে পুলিশের হেফাজতে নিহত হন জর্জ ফ্লয়েড। সময় পুলিশের একজন কর্মকর্তা হ্যান্ডকাফ পরিহিত অবস্থায় হাঁটু দিয়ে তার গলা চেপে ধরেন। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যান ফ্লয়েড। পুরো ঘটনাটি একজন প্রত্যক্ষদর্শী তার মোবাইল ফোনে ধারণ করেন। এরপর ভিডিও ফুটেজটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, গলা চেপে ধরলে ফ্লয়েড পুলিশকে জানান, তিনি নিঃশ্বাস নিতে পারছেন না। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি। এর পরই ঘটনার নৃশংসতায় বিহ্বল মানুষ প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় বেরিয়ে আসেন।

এদিকে এক টুইট বার্তায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিক্ষোভকারীদের দুর্বৃত্ত বলে উল্লেখ করেন। একই সঙ্গে তিনি বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার কথাও জানান। তার মতে, সহিংস বিক্ষোভকারীরা জর্জ ফ্লয়েডের স্মৃতির অসম্মান করছেন। তারা লুট করছেন, গুলি করছেন। অবস্থা চলতে দেয়া যাবে না। ট্রাম্পের টুইটটি পরে টুইটার কর্তৃপক্ষ তাদের নীতির বিরোধী বলে সরিয়ে ফেলে। তবে এর আগে ট্রাম্পের কাছে যুক্তরাষ্ট্রে কৃষ্ণাঙ্গদের প্রতি বিদ্বেষ সহিংসতা নিয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের হাতে কৃষ্ণাঙ্গ নির্যাতন কিংবা হত্যার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ আর শুধু এক স্থানে আবদ্ধ নেই। ফ্লয়েডের আগে যারা হত্যা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, তাদের জন্য ন্যায়বিচারের দাবি উঠেছে একাধিক স্থানে। এরই মধ্যে কেন্টাকির লুইভিলে অন্তত সাত বিক্ষোভকারী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তারা ব্রেওনা টেলর নামে এক কৃষ্ণাঙ্গ নারীর জন্য ন্যায়বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করছিলেন। ব্রেওনাকে তার বাড়িতেই গুলি করেছিল শ্বেতাঙ্গ পুলিশ।

মিনেসোটায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ন্যাশনাল গার্ডের সহায়তা চেয়েছেন রাজ্যের গভর্নর টিম ওয়ালজ। টুইটারে ন্যাশনাল গার্ড জানিয়েছে, তারা মেট্রো এলাকায় পাঁচ শতাধিক সেনাসদস্য মোতায়েন করেছে। এক্ষেত্রে তাদের প্রধান দায়িত্ব হবে শহরের দমকল বিভাগকে নিরাপত্তা সহায়তা প্রদান করা। এছাড়া তারা লুটতরাজ বন্ধে পুলিশকেও সহায়তা করবে।

জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যু নিয়ে টিম ওয়ালজ জানান, ঘটনা সবাইকে নাড়িয়ে দিয়েছে। এখন সময় সবকিছু নতুন করে তৈরি করার। এক্ষেত্রে বহুবিস্তৃত সংস্কারের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। শহরের পুনর্গঠন করতে হবে। একই সঙ্গে পুনর্গঠন করতে হবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা সাধারণ মানুষের মধ্যে সম্পর্ক। ফ্লয়েডের মৃত্যুর ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে পদ্ধতিগত পরিবর্তন আসবে। তবে নিয়ে আর কোনো ধ্বংস মৃত্যু কাম্য নয়।

এদিকে পুলিশের যে কর্মকর্তা হাঁটু দিয়ে ফ্লয়েডের গলা চেপে ধরেছিলেন তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্ত করা হয়েছে আরো তিনজনকে। উল্লেখ্য, ফ্লয়েড মিনোপলিসের একটি রেস্তোরাঁয় নিরাপত্তাকর্মীর কাজ করতেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন