লিবিয়া নিয়ে মস্কো আঙ্কারার দ্বৈরথ

বণিক বার্তা ডেস্ক

লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলে বিদ্রোহী জেনারেল খলিফা হাফতারের সমর্থনে যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে রাশিয়া। এতে ক্ষুব্ধ লিবিয়ার রাজধানীতে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকার গভর্নমেন্ট অব ন্যাশনাল অ্যাকর্ডের (জিএনএ) সমর্থক তুরস্ক। রাশিয়ার এমন পদক্ষেপে রাশিয়া তুরস্কের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। খবর অ্যারাব নিউজ।

মার্কিন সেনাবাহিনীর আফ্রিকা কমান্ড এক বিবৃতিতে জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের আফ্রিকা কমান্ডের হাতে তথ্য এসেছে যে মাঠ পর্যায়ে রাশিয়ার মদদপুষ্ট প্রাইভেট মিলিটারি কন্ট্রাক্টরদের সমর্থনে লিবিয়ায় সামরিক যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে মস্কো। এসব যুদ্ধবিমানের ওপর রঙ করা হয়েছে। ফলে এটা যে রাশিয়ার যুদ্ধবিমান, তা চেনার উপায় নেই।

লিবিয়ায় রাশিয়ার উপস্থিতির বিষয়ে মস্কো অস্বীকৃতি জানালেও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক সামুয়েল রামানি বলেন, রাশিয়ার মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান লিবিয়ায় মোতায়েনের নতুন খবরে তুরস্কের সঙ্গে তাদের উত্তেজনাকে বৃদ্ধি করবে। তার মতে, তুরস্কের সেনাবাহিনীর আক্রমণকে প্রতিহত করার উদ্দেশ্যেই এসব যুদ্ধবিমান মোতায়েন করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে স্থল বিমান বাহিনী। পুরোপুরি যুদ্ধের অবস্থায় আছে তারা। এছাড়া রাশিয়া তুরস্কের মধ্যে আকাশপথে বড় ধরনের সংঘর্ষের মারাত্মক ঝুঁকি রয়েছে।

উল্লেখ্য, সিরিয়ার বিদ্রোহী লিবিয়ার জিএনএ সরকারকে সমর্থন দিচ্ছে তুরস্ক। অন্যদিকে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ লিবিয়ার জিএনএবিরোধী শক্তি জেনারেল হাফতারকে সমর্থন দিচ্ছে রাশিয়া। মধ্যপ্রাচ্য ইস্যুতে তুরস্ক রাশিয়ার অবস্থান পুরোপুরি বিপরীতমুখী।

রামানি বলেছেন, রাশিয়া তুরস্কের মধ্যে দীর্ঘ মেয়াদে এমন অবস্থানের ফলে সম্পর্কে কী দাঁড়াবে তা পরিষ্কার নয়। সম্প্রতি লিবিয়া থেকে ওয়াগনার গ্রুপকে সরিয়ে নিয়েছে রাশিয়া। এর পরিবর্তে সেখানে মোতায়েন করেছে যুদ্ধবিমান। তুরস্কের অগ্রাভিযানের চেয়ে এটা বড় কিছু হবে কিনা তা স্পষ্ট নয়। তবে মস্কো কিন্তু কূটনৈতিক সমাধানের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এক্ষেত্রে তিনি রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ লিবিয়ার হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভের প্রধান আগুইলা সালেহর মধ্যে বৈঠক হয়েছে।

রামানি আরো বলেন, রাশিয়ার যুদ্ধবিমান মোতায়েনের জবাবে লিবিয়াতে যে বড় কোনো পরিবর্তন আনতে পারবে তুরস্ক, তেমনটা মনে হয় না। তবে রাশিয়া যদি আকাশপথে আক্রমণ জোরালো করে, সেক্ষেত্রে অধিক সজাগ থাকতে হবে। এক্ষেত্রে রাশিয়ান এস-৪০০ ডিফেন্স সিস্টেম তার অবস্থানেই থাকবে। রাশিয়ার অবস্থা দুর্বল হবে যদি এতে যুক্তরাষ্ট্র হস্তক্ষেপ করে এবং তাতে সুবিধা পাবে তুরস্ক। তবে বিষয়টি অদূর ভবিষ্যতে হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। কারণ, এখন বিশ্বজুড়ে নভেল করোনাভাইরাস মহামারীর দাপট নিয়ন্ত্রণে আসেনি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন