চীনের পার্লামেন্টে বিতর্কিত হংকং নিরাপত্তা বিল অনুমোদন

বণিক বার্তা ডেস্ক

হংকংয়ের জন্য প্রবর্তিত বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা আইন অনুমোদন করেছে চীনের পার্লামেন্ট। সমালোচকদের আশঙ্কা অনুমোদন পাওয়া আইনটির কারণে অঞ্চলটির স্বায়ত্তশাসন খর্ব হতে পারে। আইনটির মাধ্যমে বেইজিংয়ের কর্তৃত্বকে প্রশ্ন করা হয় হংকংয়ে এমন কাজ বেআইনি ঘোষণা করা হয়েছে। চীনের শীর্ষ নেতৃত্ব বিলটি অনুমোদনের ফলে হংকংয়ের বিশেষ মর্যাদা ক্ষুণ্ন হতে যাচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে হংকংয়ে চীন তাদের গোয়েন্দা কার্যালয় স্থাপন করে সেখানে নাগরিকদের ওপর নজরদারি বাড়াতে পারে। এর মাধ্যমে মূল ভূখণ্ড চীনের বিরুদ্ধে হংকংয়ের গণতন্ত্রকামীদের বিক্ষোভ বাড়বে। খবর বিবিসি আল জাজিরা।

চীনের পার্লামেন্টে ভোটাভুটির ফল বড় পর্দায় ভেসে ওঠার পর গ্রেট হল অব দ্য পিউপিলে সমবেত আইনপ্রণেতারা উল্লাসে ফেটে পড়েন। বিলটির পক্ষে হাজার ৮৭৮ জন সমর্থন দেন, একজন বিপক্ষে ছয়জন অনুপস্থিত থাকেন।

সম্প্রতি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল হংকংয়ে বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা আইন চালুর উদ্যোগ নেয় চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি। আইনে দেশদ্রোহিতা, বিচ্ছিন্নতা রাষ্ট্রদ্রোহিতা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এর অধীনে হংকংয়ের আইনপ্রণেতাদের বাদ দিয়েই এসব অপরাধে অভিযুক্তদের সাজা দেয়ার সুযোগ পাবে চীনা কর্তৃপক্ষ। এতে স্বায়ত্তশাসন খর্বের আশঙ্কায় বিক্ষোভ শুরু করেছে হংকংয়ের বাসিন্দারা। বুধবার হংকংয়ের পার্লামেন্টে প্রস্তাবিত আইনটি নিয়ে বিতর্ক শুরু হলে হংকংয়ে সংঘর্ষ বেধে যায়। বিক্ষোভে অংশ নেয়ার কারণে কয়েকশ বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার আলোচনা চলার সময়ও শহরজুড়ে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। গতকাল শহরটির আইনসভা থেকে দুজন গণতন্ত্রপন্থী আইনপ্রণেতাকে বের করে দেয়া হয়।

গত বছর হংকংয়ে ব্যাপক বিক্ষোভের জেরে ওই আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া হলেও এর প্রতিবাদে অঞ্চলটিতে বড় ধরনের বিক্ষোভ শুরু হয়। নভেল করোনাভাইরাস মহামারীর আগপর্যন্ত বিক্ষোভে প্রায় অচল হয়ে পড়েছিল বাণিজ্য নগরীটির কার্যক্রম। বিক্ষোভ কভিড-১৯ দুই ধাক্কায় ধসে পড়েছে হংকংয়ের অর্থনীতি।

চীনের পার্লামেন্টে অনুমোদন পাওয়া আইনটির বিস্তারিত এখনো জানা যায়নি। তবে চীনা কর্তৃপক্ষ এবং বেইজিং সমর্থক হংকং সরকার এরই মধ্যে এর পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী ক্যারি লাম বলেছেন, আইনের মাধ্যমে অঞ্চলটির স্বায়ত্তশাসন খর্বের আশঙ্কা নেই। আইন নিয়ে অন্য কোনো দেশের হস্তক্ষেপের কোনো সুযোগ নেই বলেও দাবি করেছেন তিনি।

তবে বুধবার হংকংকে দেয়া বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটনের অভিযোগ, অঞ্চলটি আর বেইজিং থেকে স্বায়ত্তশাসিত নয়। মর্যাদা প্রত্যাহার করে নেয়ায় অঞ্চলটির ওপর ভবিষ্যতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং বাণিজ্য সুবিধা বাতিলের সুযোগ তৈরি হয়েছে।

ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের মুখপাত্র বলছেন, নতুন নিরাপত্তা আইন নিয়ে লন্ডন খুবই উদ্বিগ্ন। এটা এক দেশ, দুই ব্যবস্থাকে হুমকিতে ফেলে দিয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন