এক্সিম ব্যাংকের এমডি-এএমডিকে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ

ন্যাশনাল ব্যাংকের দুই পরিচালকের বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক

বেসরকারি এক্সিম ব্যাংকের এমডি ও এএমডিকে অপহরণের পর গুলি করে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে মামলা হয়েছে ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালক দুই ভাই রন হক সিকদার ও দীপু হক সিকদারের বিরুদ্ধে। গত ৭ মে হত্যা চেষ্টার পর ১৯ মে গুলশান থানায় মামলাটি করেছেন এক্সিম ব্যাংকের পরিচালক অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল সিরাজুল ইসলাম। পুলিশ বলছে, ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হতে তদন্ত শুরু করেছেন তারা।

ঘটনার বর্ণনায় এজাহারে উল্লেখ রয়েছে- রন হক সিকদার গত ৭ মে সকালে ন্যাশনাল ব্যাংকের এমডিসহ গুলশানে এক্সিম ব্যাংকে আসেন। তারা তাদের প্রস্তাবিত ঋণের টাকার বিপরীতে ‘কো-লেটারেল’ হিসেবে সিকদার গ্রুপের রূপগঞ্জ কাঞ্চন প্রস্তাবিত আদি নওয়াব আসকারী জুট মিলটি পরিদর্শনের জন্য নিয়ে যান এক্সিম ব্যাংকের এমডি হায়দার আলী ও অতিরিক্ত এমডি ফিরোজকে। ওই স্থানটি দেখে তার বর্তমান বাজার দরের সঙ্গে গ্রাহকের বন্ধকী মূল্যের বিশাল ব্যবধান হওয়ায় দ্বিমত পোষণ করেন এক্সিম ব্যাংকের এমডি ও অতিরিক্ত এমডি।  এরপর রন হক সিকদার পূর্বাচলে অবস্থিত তাদের অন্য প্রকল্প স্যাটেলাইট সিটিতে আইকন টাওয়ারের জায়গাটি পরিদর্শনের জন্য বলেন। কিন্তু ওই দিন বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে এক্সিম ব্যাংকের জরুরি সভা থাকায় পূর্বাচলে যেতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

অভিযোগ করা হয়েছে, ঢাকার উদ্দেশ্যে ফেরার পথে তিনশ ফিট রাস্তায় উঠার পর রন হক সিকদার ও এনবিএলের এমডিকে দেখতে পেয়ে গাড়ি থামান তারা।  এ সময় এনবিএলের এমডি গাড়ি থেকে নেমে এসে এক্সিম ব্যাংকের এমডি ও এএমডিকে বলেন যে রন হক সিকদারের দেওয়া নির্ধারিত স্থানে আপনারা উপস্থিত হতে ব্যর্থ হওয়ায় অত্যন্ত মনক্ষুন্ন ও ক্ষুব্ধ হয়েছেন। সেখানেই রন হক সিকদার এক্সিম ব্যাংকর দুই নির্বাহীকে তার নিকট মাফ চাইতে বাধ্য করেন।তখন রন হক সিকদার গাড়ির ভিতর থেকে বসা অবস্থায় গ্লাস নামিয়ে তার পিস্তল বের করে হত্যার উদ্দেশ্যে এক্সিম ব্যাংকের এমডিকে লক্ষ্য করে গুলি করেন, যা এমডির বাম কানের পাশ দিয়ে যায়। এসময় এমডি হতভম্ব হয়ে ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে থাকেন। পুনরায় এএমডিকে লক্ষ্য করে গুলি করতে উদ্যত হলে তিনি দৌড় দিয়ে গাড়ির পেছনে আশ্রয় নিয়ে আত্মরক্ষা করেন।

এজাহারে উল্লেখ রয়েছে, এরপর রন হক সিকদার মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে এক্সিম ব্যাংকের এমডি এবং অতিরিক্ত এমডিকে গাড়িতে তুলে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বনানী ১১ নম্বর সড়কের সিকদার হাউজে নিয়ে যান। সেখানে রন ও দীপু জমির দাম কম বলায় এক্সিম ব্যাংকের এএমডি ফিরোজকে মারতে উদ্যত হলে তিনি মাফ চেয়ে প্রাণে বাঁচেন। দীপু সিকদার তৃতীয় তলায় এক্সিম ব্যাংকের এমডিকে মারতে নিচে নামার সময় এমডির পক্ষে এএমডি মাফ চান এবং তাকে না মারার অনুরোধ করেন। এরপর রন হক সিকদার ও দিপু সিকদার এক্সিম ব্যাংকের এমডিকে প্রকল্পের সবকিছু নিয়ম অনুযায়ী আছে ব্যক্ত করে তাদের সাথে থাকা অস্ত্র তাক করে জোরপূর্বক একটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয়। এরপর বিকালে দিপু হক সিকদারের নির্দেশে তাদের বাবা জয়নাল হক সিকদারের কাছে এক্সিম ব্যাংকের দুই কর্মকর্তাকে নিয়ে ফটোসেশন করানো হয় বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।

এদিকে এক্সিম ব্যাংকের করা মামলাটি এরই মধ্যে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।  গুলশান থানার পরিদর্শক (তদন্ত)  মো. আমিনুল ইসলাম বণিক বার্তাকে বলেন, মামলার আসামি দুজন ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালক। তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো তদন্ত করা হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন