লকডাউনে বিবর্ণ ঈদ

বণিক বার্তা অনলাইন

নভেলকরোনা ভাইরাসে বিবর্ণ হয়ে উঠেছে বিশ্বের মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর। লকডাউনের মধ্যেই আজ রোববার মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ঈদ উদযাপন হচ্ছে। কোন দেশেই প্রতিবছরের মতো উৎসবমুখর পরিবেশে ঈদের নামাজ হয়নি।

সৌদি আরবে রাজকীয় আদেশে কেবল মক্কা ও মদিনার দুটি মসজিদে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে চলমান কারফিউর কারণে তাতে অংশ নিতে পারেনি সর্বসাধারণ। অন্যদিকে সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ কিছু দেশ এবার ঈদের জামাত হবে না বলে আগেই জানিয়ে দিয়েছিল।

করোনাভাইরাসের প্রকোপের কারণে গোটা বিশ্বের মতো মুসলিম দেশগুলোতেও সামাজিক দূরত্ব বজায় ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা হচ্ছে। সে কারণে অনেক দেশেই স্বাভাবিকভাবে রমজানের তারাবিহ নামাজ পড়া যায়নি। ঈদের কেনাকানাটার ক্ষেত্রেও কড়াকড়ি ছিল প্রায় সব দেশে।

দেশের যেসব স্থানে আজ ঈদ পালিত হচ্ছে
প্রতিবছরই সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে দেশের কিছু স্থানে ঈদ উদযাপন করা হয়। এ ধারাবাহিকতায় আজ দেশের দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাতকানিয়া, চন্দনাইশ, পটিয়া, লোহাগাড়া, বাঁশখালী, আনোয়ারা উপজেলার ৬০ গ্রামে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হচ্ছে।

সাতকানিয়া মির্জাখীল দরবার শরীফ ও চন্দনাইশ শাহ-সুফি মমতাজিয়া দরবার শরীফের অনুসারীরা প্রায় আড়াইশো বছর ধরে সৌদি আরবের সময় অনুসরণ করে রোজা, ঈদ ও কোরবান পালন করে আসছেন।

আজ মির্জাখীল দরবার শরীফ প্রাঙ্গণে সকাল ১০টায় প্রধান ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিবছর ঈদের জামাতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে তাদের অনুসারীরা অংশ নিলেও এবার করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে তা হয়নি। তাই সামাজিক দূরত্ব ও সরকারি নির্দেশনা মেনে নিজ নিজ এলাকায় ছোট পরিসরে ঈদের জামাত আয়োজনের নির্দেশনা দিয়েছে দরবার কর্তৃপক্ষ। তাছাড়া করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে এবার দরবার শরীফে বড় ঈদ জামাতের আয়োজন হচ্ছে না। নিজ নিজ এলাকায় ছোট পরিসরে ঈদের জামাত আয়োজনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

দক্ষিণ চট্টগ্রামের যেসব এলাকায় আজ পবিত্র ঈদুল ফিতর পালিত হবে তার মধ্যে  রয়েছে - চন্দনাইশের পশ্চিম এলাহাবাদ, কাঞ্চননগর, খুনিয়ার পাড়া, হাশিমপুর, কেশুয়া, সাতবাড়িয়া, মোহাম্মদপুর, হারালা, চন্দনাইশ পৌরসভার বুলার তালুক, হরিণার পাড়া, ফকির, সর্বল, কাজী বাড়ী, বাঁশখালীর জলদি, কালিপুর, গুনাগড়ি, গণ্ডামার, মিঞ্জিরতলা, ছনুয়া, সাধনপুর, আনোয়ারার তৈলার দ্বীপ, বাথুয়া, বারখাইন, বোয়ালখালীর চরনদ্বীপ, খরনদ্বীপ, লোহাগাড়ার আাামিরাবাদ, চুনতি, পুটিবিলা, উত্তর সুখছড়ি, আধুনগর, মইশামুড়া, খোয়ছপাড়া।

এদিকে চাঁদপুরের ৪০টি গ্রামেও আজ ঈদুল ফিতর উদযাপিত হচ্ছে। এসব গ্রামের সাদ্রা দরবার শরীফের অনুসারীরা আজ ঈদ পালন করছেন। বিগত ৮৯ বছর ধরে আরব দেশসমূহের সঙ্গে সঙ্গতি  রেখে চাঁদপুরের বিভিন্ন গ্রামে ঈদ পালন হয়ে আসছে।

ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু, দৌলতপুর, কুলবাড়িয়া, বৈঠাপাড়া, পায়রাডাঙ্গা, নিতনন্দপুর, পার্বতীপুরসহ বিভিন্ন গ্রামেও  একইভাবে শতাধিক মানুষ ঈদ উদযাপন করে আসছেন।

সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ পালন করে থাকেন মৌলভীবাজার জেলায় শতাধিক পরিবারের মুসল্লিরা। একইভাবে ভোলার পাঁচ উপজেলার ১৪টি গ্রামের প্রায় হাজার দশেক মানুষ সৌদি আরবের অনুসারে ঈদ পালন করে থাকেন। বোরহানউদ্দিন, লালমোহন, চরফ্যাশন ও তজুমদ্দিন উপজেলার ১৪টি গ্রামের সুরেশ্বর দরবারে পীর ও সাতকানিয়া অনুসারীরা আজ ঈদ উদযাপন করছেন।

এছাড়া পটুয়াখালীর অন্তত ২০ গ্রামে একইভাবে ঈদুল ফিতর উদযাপন করেন সেখানকার বাসিন্দারা। জেলার বাউফল, কলাপাড়া, গলাচিপা, দশমিনা ও সদর উপজেলার ২০টি গ্রামে পবিত্র ঈদুল ফিতর পালিত হচ্ছে। সাতক্ষীরা সদর উপজেলা বাউখোলা, সাতানি, ভাদড়া ও তালা উপজেলার ইসলামকাটিসহ ১৫টি গ্রামের মানুষ আজ ঈদুল ফিতর পালন করছেন।

জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায় প্রায় ১৩টি গ্রামে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদুল ফিতরের পালন করা হয়। পাশাপাশি লক্ষ্মীপুরের বেশ কয়েকটি পরিবারও আজ ঈদের পালন করছে। এছাড়াও রাজধানীর মালিবাগ এলাকার বেশ কয়েকটি পরিবার একই রীতি অনুসরণ করে আসছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন