দেশের সবচেয়ে বড় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয় কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায়। কিন্তু নভেল করোনাভাইরাসের কারণে এবার এ ঈদগাহে ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হবে না। স্থানীয়রা বলছেন, ঈদ জামাত না হওয়া শোলাকিয়ার ইতিহাসে এই প্রথম।
কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, করোনার সংক্রমণ রোধে এবার খোলা মাঠ ও ঈদগাহে ঈদের জামাত না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। এ সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতেই শোলাকিয়া ঈদগাহেও আসন্ন ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হবে না মর্মে সিদ্ধান্ত নেয় জেলা প্রশাসন। এবারের ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হলে তা হতো শোলাকিয়ার ১৯৩তম জামাত।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন শোলাকিয়া ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী। তিনি বলেন, নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সারা দেশে খোলা মাঠ ও ঈদগাহে ঈদের জামাত অনুষ্ঠানে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। সে অনুযায়ী উপমহাদেশের অন্যতম বৃহৎ ও ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহে জামাত না করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
তিনি আরো জানান, করোনার কারণে বর্তমান পরিস্থিতিতে শোলাকিয়া ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সভা যথাযথভাবে করা সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে জাতীয় পর্যায়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটির সভাপতির ক্ষমতাবলে শোলাকিয়ায় ঈদের জামাত হবে না বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তবে ১৮ মে এ বিষয়ে স্থানীয় কিছু ইমাম ও আলেম-ওলামার সঙ্গে সভা করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বাংলার বিখ্যাত বারো ভূঁঁইয়ার একজন ঈশা খাঁর ১৬তম বংশধর দেওয়ান মান্নান দাঁদ খান ১৯৫০ সালে শোলাকিয়া ঈদগাহ ওয়াকফ করেন। এর ২০০ বছর আগে থেকে শোলাকিয়া মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। ১৮২৮ সালে এ মাঠে ঈদুল ফিতরের বড় জামাত অনুষ্ঠিত হয়। সে জামাতে একসঙ্গে ১ লাখ ২৫ হাজার বা সোয়া লাখ মুসল্লি ঈদের জামাত আদায় করেন। সেই থেকে এ মাঠ সোয়া লাখিয়া নামে পরিচিতি পায়, যা পরবর্তী সময়ে শোলাকিয়ায় রূপ নেয়। এ মাঠে ঈদের জামাত আদায়কারীর সংখ্যা ক্রমান্বয়ে দিন দিন বেড়েছে।
তারা জানান, কিশোরগঞ্জ ছাড়াও দেশ-বিদেশ থেকে মুসল্লিরা এসে এ মাঠে ঈদের জামাত আদায় করেন। এই প্রথম মাঠটিতে ঈদের জামাত হবে না। মাঠে দেখা যাবে না লাখো মানুষ সমাগমের সেই চিরচেনা রূপ।