জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিক

ব্রাজিলের সয়াবিন রফতানিতে ১৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি

বণিক বার্তা ডেস্ক

নভেল করোনাভাইরাসের মহামারীর মাঝেও ব্রাজিলের সয়াবিন রফতানি খাতে প্রবৃদ্ধি বজায় রয়েছে। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে দেশটি থেকে কৃষিপণ্যটির রফতানি বেড়েছে ১৪ শতাংশ। আর এপ্রিলের প্রথম তিন সপ্তাহে (-২১ এপ্রিল) ব্রাজিল থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে আগের মাসের একই সময়ের তুলনায় ২৮ শতাংশ বেশি সয়াবিন রফতানি হয়েছে। ব্রাজিলের রাষ্ট্রায়ত্ত বৈদেশিক বাণিজ্য বিভাগের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে তথ্য জানানো হয়েছে। খবর এগ্রিমানি বিজনেস রেকর্ডার।

ব্রাজিল বিশ্বের শীর্ষ সয়াবিন উৎপাদক রফতানিকারক দেশ। দেশটির সরকারি তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে ব্রাজিলীয় রফতানিকারকরা সব মিলিয়ে কোটি ৮০ লাখ টন সয়াবিন রফতানি করেছেন। ২০১৯ সালের জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকের তুলনায় সময় দেশটি থেকে কৃষিপণ্যটির রফতানি বেড়েছে ১৪ শতাংশ। চলতি বছরের জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে ব্রাজিল থেকে রফতানি হওয়া সয়াবিনের ৭৪ শতাংশের গন্তব্য ছিল চীন।

একসময় চীন যুক্তরাষ্ট্র থেকে সবচেয়ে বেশি সয়াবিন আমদানি করত। তবে ওয়াশিংটন-বেইজিং বাণিজ্যযুদ্ধ শুরুর পর বাণিজ্য কমতে শুরু করে। বাড়তি শুল্ক আরোপ করায় চীনা আমদানিকারকরা মার্কিন মুলুক থেকে সয়াবিন আমদানি কমিয়ে দেন। বিকল্প আমদানি উৎস হিসেবে সামনে আসে ব্রাজিল। মূলত তখন থেকেই ব্রাজিলের সয়াবিন রফতানি বাজারের সবচেয়ে বড় ক্রেতা চীন।

এদিকে ব্রাজিলের সয়াবিন রফতানি খাতে বছরের প্রথম প্রান্তিকের প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতা বজায় ছিল এপ্রিলেও। দেশটির সরকারি তথ্য অনুযায়ী, -২১ এপ্রিল সময়ে ব্রাজিল থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে সব মিলিয়ে ৯১ লাখ ৬০ হাজার টন সয়াবিন রফতানি হয়েছে, যা আগের মাসের একই সময়ের তুলনায় ২৮ শতাংশ বেশি। যদিও দেশটির সরকারি দপ্তর এখনো এপ্রিলের পূর্ণাঙ্গ তথ্য প্রকাশ করেনি, তবে দেশটির রফতানিকারকদের ধারণা, গত মাসে ব্রাজিল থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে কোটি ২০ লাখ টনের বেশি সয়াবিন রফতানি হয়েছে।

প্রতি বছর সেপ্টেম্বরে ব্রাজিলে সয়াবিনের মৌসুম শুরু হয়। চলে পরের বছরের আগস্ট অবধি। এবারের ২০১৯-২০ মৌসুমে দেশটিতে কোটি ৬৪ লাখ হেক্টর জমিতে সয়াবিন আবাদ হয়েছে, যা আগের মৌসুমের তুলনায় শতাংশ বেশি। আবাদ করা জমির ৯২ শতাংশে সয়াবিনের বাম্পার ফলনের খবর দিয়েছে কৃষিবিষয়ক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এজি রুরাল। পরিস্থিতি ব্রাজিল থেকে কৃষিপণ্যটির রফতানি বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রাখছে বলে জানান খাতসংশ্লিষ্টরা।

এদিকে গত জানুয়ারিতে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধের লাগাম টানতে প্রথম পর্যায়ের চুক্তিতে পৌঁছেছে ওয়াশিংটন বেইজিং। এর পর পরই নভেল করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারী ছড়িয়ে পড়ে। চীন-যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বেশির ভাগ দেশে লকডাউন শুরু হয়। কার্যত স্থবির হয়ে আসে অর্থনৈতিক বাণিজ্যিক কার্যকম। এর জের ধরে চীন-মার্কিন বাণিজ্য বিরোধ নিরসনের উদ্যোগ অনেকটাই স্তিমিত হয়ে আসে। কারণে চীনা আমদানিকারকরা এখনো ব্রাজিল থেকেই বেশি বেশি সয়াবিন আমদানি অব্যাহত রেখেছেন। এর জের ধরে করোনা মহামারীর মধ্যেও বছরের প্রথম প্রান্তিকে ব্রাজিলের সয়াবিন রফতানিতে বড় ধরনের প্রবৃদ্ধির দেখা মিলেছে।

আর ফেব্রুয়ারি-মে সময়টা ব্রাজিলে সয়াবিনের ভরা মৌসুম। কারণে বিগত কয়েক মাসে দেশটি থেকে কৃষিপণ্যটির রফতানি অনেক বেশি চাঙ্গা রয়েছে। এক মাসেই দেশটি এক কোটি টনের বেশি সয়াবিন রফতানি করেছে বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।

এদিকে মার্কিন কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) ফরেন এগ্রিকালচারাল সার্ভিসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছর ব্রাজিলের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সয়াবিন রফতানি হয়েছে। সময় দেশটি থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে সব মিলিয়ে কোটি ৭০ লাখ টন সয়াবিন রফতানি হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় দশমিক ২৩ শতাংশ বেশি। ২০১৮ সালে ব্রাজিল থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে মোট কোটি ৪৫ লাখ ৯৪ হাজার টন সয়াবিন রফতানি হয়েছিল। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে দেশটি থেকে কৃষিপণ্যটির রফতানি বেড়েছে ২৪ লাখ টনের বেশি। চলতি বছরও ব্রাজিলের সয়াবিন রফতানি খাতে প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা দেখছে প্রতিষ্ঠানটি।

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন