একটি অফিস বিল্ডিং। কয়েকশ কর্মীর পদচারণে মুখর। হঠাৎই জানা গেল পুরো বিল্ডিংজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে একটি ভাইরাস। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক চিন্তাশক্তির লোপ ঘটিয়ে মানুষকে রাগী, হিংস্র ও আক্রমণাত্মক করে তুলছে। আট ঘণ্টার মধ্যে সবাইকে বের করে চিকিৎসা না দিলে অবস্থা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। কিন্তু তার আগেই অবস্থা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছায় যখন হিংস্রতার জেরে একে অন্যকে খুন করা শুরু করে সবাই।
এমনই গল্পকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে অ্যাকশন হরর ঘরানার ছবি ‘মেইহেম’-এর কাহিনী। মেইহেম অর্থ দাঙ্গা, আর নাম থেকেই বোঝা যাচ্ছে কী অপেক্ষা করছে ছবিতে। ছবিটি মূলত অ্যাকশন ঘরানার হলেও অনেকে কমেডি অ্যাকশন ঘরানার বলতেই পছন্দ করেন। কারণ অ্যাকশনের পাশাপাশি হাস্যরসও বেশ ভালোই রয়েছে ছবিটিতে। তবে সব ছাপিয়ে সহিংসতাকে যে রকম স্টাইলিশ উপায়ে উপস্থাপন করা হয়েছে, তা আলাদাভাবে নজর কেড়েছে।
ছবির শুরুতে দেখা যায় একটি বিল্ডিংয়ের ভেন্টিলেশন ব্যবস্থায় হঠাৎই আইডি-৭ বা ‘রেড আই’ ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। নিরাপত্তাকর্মীরা সঙ্গে সঙ্গেই বিল্ডিংটি কোয়ারেন্টিন করে ফেলে। ভেতরে যারা আছে তাদের অনুরোধ করতে থাকে শান্ত থাকার জন্য। কিন্তু ভাইরাসটি সরাসরি মানুষের মস্তিষ্ক ও নার্ভে আঘাত হানছে। প্রথমে চোখগুলো লাল টকটকে হচ্ছে। এরপর আস্তে আস্তে প্রত্যেকেই হিংস্র হয়ে উঠছে। যেন একে অন্যকে ছিঁড়ে খাবে।
অফিসেরই এক কর্মী ডেরেক মাত্রই চাকরি হারিয়েছে। তাকে বিল্ডিং থেকে বের করে দিতে গেলে কোয়ারেন্টিনের কারণে সেটা আর সম্ভব হয় না। অফিসের বেজমেন্টে বন্দি রাখা হয় তাকে। এ সময় তাকে সহায়তা করে মেলানি নামের একজন। এরপর দুজনের হিংস্র আচরণে একে একে খুন হতে থাকে অফিসের অনেকেই। ডেরেক তার চাকরি ফিরে পেতে মারিয়া। আর মেলানি চায় তার লোনের সময়সীমা বাড়ানো হোক।
একে একে অফিসের অন্য কর্মীরাও ভয়ংকর হিংস্র হয়ে উঠেছে। পুরো বিল্ডিংয়েই যেন দাঙ্গা শুরু হয়ে যায়। চারপাশে শুধু রক্ত আর খুন। মানুষের মাথা বিগড়ে গেছে। বাইরের নিরাপত্তাকর্মীরাও কিছু করতে পারছে না, কারণ এতে জীবনের ঝুঁকি আরো বাড়বে। সবাই চাইছে দ্রুত আট ঘণ্টা কাটুক আর সবার মস্তিষ্ক একটু ঠান্ডা হোক। কিন্তু বিল্ডিংয়ের ভেতরের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ উল্টে যায় যখন ডেরেকের মাথার বিপরীতে দাম ঘোষণা করা হয়।
৮৬ মিনিটের এই ছবিটি মুক্তি পায় ২০১৭ সালে। জো লিঞ্চ পরিচালিত এ ছবিতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন স্টিভেন ইউন (ডেরেক), সামারা ওয়েভিং (মেলানি), স্টিভেন ব্র্যান্ড, ক্যারোলিন চিকেজি, কেরি ফক্স ও ডালাস রবার্টস। ছবিটি মুক্তির আগে সাউথ বাই সাউথওয়েস্ট চলচ্চিত্র উৎসবে প্রিমিয়ার অনুষ্ঠিত হয়। মাত্র আড়াই মিলিয়ন ডলারে নির্মিত ছবিটি চলচ্চিত্র সমালোচক ও দর্শকদের কাছ থেকে বেশ ভালো সাড়া পায়।