প্রণোদনার অর্থ দ্রুত ছাড় করার তাগিদ ব্যবসায়ীদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনা পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ে টিকে থাকার লক্ষ্যে প্রণোদনার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। তবে ব্যবসায়ী পর্যায়ে তা পাওয়ার ক্ষেত্রে নানা ধরনের জটিলতা তৈরি হয়েছে। নথি আইনি জটিলতায় অনেক ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা সুবিধার বাইরে থাকছেন। আবার নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে আসা নির্দেশনার ক্ষেত্রে সমন্বয়ের ঘাটতিও দেখা যাচ্ছে। ধরনের নানামুখী সমস্যা সমাধান করে দ্রুত সরকার ঘোষিত প্রণোদনার অর্থ ছাড় করার জন্য ব্যাংকগুলোকে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

গতকাল রাজধানীর মতিঝিলে ফেডারেশন ভবনে সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়ন শীর্ষক সভার আয়োজন করে এফবিসিসিআই। সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম। সভার আলোচনায় বর্তমান সাবেক নেতাদের পাশাপাশি অর্থনীতিবিদরা ডিজিটাল যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে তাদের মতামত তুলে ধরেন। সভায় বক্তব্য রাখেন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ, সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, আবদুল মাতলুব আহমাদ, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক গ্রুপের সাবেক সিনিয়র ইকোনমিস্ট মাশরুর রিয়াজ প্রমুখ।

সভায় ব্যবসায়ীরা বলেন, নভেল করোনাভাইরাসের কারণে আর্থিক ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সরকার সম্প্রতি ৭৩ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। তবে নানা নিয়মকানুনের ফাঁদে পড়ে অনেক উদ্যোক্তাই ওই প্রণোদনার সুবিধা নিতে পারছেন না। এখন বেঁচে থাকাটাই মুনাফা। ব্যবসায়ীরা মরে যাবে, আর ব্যাংকগুলো এখনো মুনাফার চিন্তা করবে এই মনোভাব থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। ব্যাংকের অনেক নির্দেশনা সম্পর্কে শাখাগুলো সময়মতো অবহিত হয় না।

এফবিসিসিআই সহসভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ব্যবসা এবং ব্যবসায়ীরা জীবিত না থাকলে ব্যাংক কীভাবে ব্যবসা করবে।

এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন বলেন, ব্যাংকের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সম্পর্ক অংশীদারিত্বমূলক হলেও দুর্ভাগ্যজনকভাবে তা অসম অংশীদারিত্ব ব্যাংকগুলোকে বিদ্যমান সময় বিবেচনায় নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

সাবেক সহসভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিলেও ব্যাংকের সার্কুলারে সমস্যা রয়েছে। প্রণোদনায় সব রফতানিকারককে হাজার কোটি টাকা থেকে শ্রমিকের বেতনের জন্য ঋণ দেয়ার ঘোষণা হলেও প্রচ্ছন্ন রফতানিকারকদের দেয়া হচ্ছে না। এসএমইর প্যাকেজ থেকে নেয়া যাবে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় আদেশ জারি করেছে। কিন্তু ব্যাংক বিষয়ে কোনো আদেশ করেনি। বলা হচ্ছে চলতি মূলধনের জন্য নেয়া যাবে।

সভায় ব্যাংকগুলোর পক্ষ থেকেও বক্তব্য তুলে ধরা হয়। অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবির) সভাপতি আলী রেজা ইফতেখার বলেন, যেহেতু বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালার মধ্যে চলতে হয়, সেজন্য অসম্পূর্ণ ডকুমেন্টে ঋণ অনুমোদনে সমস্যা হয়। সব ডকুমেন্ট থাকলে সময়মতো ঋণ ছাড়ের বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে। এই ক্রান্তিকালে সবাইকে বেঁচে থাকতে হবে। এখন ব্লক অ্যাকাউন্টে ১৬ হাজার কোটি টাকা রয়েছে। এটা তো জনগণের টাকা।

এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, প্রণোদনার অর্থ পেতে খুব বেশি দেরি হয়ে গেলে এর উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে। অনেক ছোট মাঝারি উদ্যোক্তা প্রণোদনা কীভাবে দ্রুত পেতে পারেন, তা নিশ্চিত করা দরকার। সময় সরকার ঘোষিত ২০ হাজার কোটি টাকার তহবিল থেকে সংবাদপত্রসহ গণমাধ্যম যাতে সহজে ঋণ সুবিধা পেতে পারে, সে উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানান এফবিসিসিআই সভাপতি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন