খালাস করছেন না আমদানিকারকরা

চট্টগ্রাম বন্দরে আদা রসুন-পেঁয়াজ জমেছে ১ হাজার ৩৬০ টন

রাশেদ এইচ চৌধুরী চট্টগ্রাম ব্যুরো

 চট্টগ্রাম বন্দরে জমে থাকা পণ্য দ্রুত ছাড়করণে উদ্যোগী হয়ে উঠেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। পেঁয়াজ-রসুন অন্যান্য মসলাপণ্যসহ আমদানীকৃত অনেক পণ্যই এখন একদিনের মধ্যেই খালাস করা সম্ভব। এর পরও আমদানিকারক খালাস না করায় বন্দরে আমদানীকৃত পেঁয়াজ-আদা রসুন জমেছে হাজার ৩৬০ টন। আমদানির পর এক-দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এখনো এসব পণ্য খালাসের উদ্যোগ নেননি আমদানিকারকরা।

নিত্য ব্যবহূত এসব মসলাপণ্যের বাজার সরবরাহ ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখার উদ্দেশ্যে বর্তমানে বন্দরে চারদিনের বেশি পণ্য ফেলে রাখা আমদানিকারকদের একটি তালিকা তৈরি করেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। বাজার স্বাভাবিক রাখতে দ্রুত এসব পণ্য খালাস করানো প্রয়োজন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, গতকাল পর্যন্ত বন্দরে ৬৮টি কনটেইনারভর্তি আদা-রসুন পেঁয়াজ খালাসের উদ্যোগ নেননি আমদানিকারকরা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কনটেইনার আছে পেঁয়াজের, ৩০টি। রসুনের কনটেইনার আছে ২৮টি। বাকি ১০টি কনটেইনার আদার। প্রতি কনটেইনারে অন্তত ২০ টন পণ্য হিসাব করে বলা যায়, বন্দরে আমদানীকৃত আদা-রসুন-পেঁয়াজ পড়ে রয়েছে কমপক্ষে হাজার ৩৬০ টন।

বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, পেঁয়াজের ৩০ কনটেইনারের মধ্যে ১৪টি কনটেইনার জাহাজ থেকে জেটিতে নামানো হয়েছে গত রোববার। বাকি ১৬ কনটেইনার নামানো হয়েছে এক-দুই সপ্তাহ আগে। রসুনের ২৮ কনটেইনারের মধ্যে আটটি পড়ে রয়েছে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে। বাকিগুলো নামানো হয়েছে গত এক সপ্তাহের মধ্যে। আদার ১০ কনটেইনারের মধ্যে দুটি নামানো হয়েছে চারদিন আগে। বাকি কনটেইনারগুলো বন্দরে জমেছে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় আগে।

বন্দরের তালিকা অনুযায়ী, বন্দরে পড়ে থাকা পেঁয়াজের আমদানিকারকদের মধ্যে রয়েছে ঢাকার এএমআর ট্রেডিং, চট্টগ্রামের মেসার্স মনির এন্টারপ্রাইজ, এফএফ ইন্টারন্যাশনাল বিএসএম সিন্ডিকেট।

রসুনের আমদানিকারকদের মধ্যে রয়েছে ঢাকার আরএস ট্রেড লিঙ্ক, মা বাণিজ্যালয়, ওয়াসিফ ট্রেডিং, রাজ এন্টারপ্রাইজ, হক এন্টারপ্রাইজ, ভাই ভাই ইন্টারন্যাশনাল চট্টগ্রামভিত্তিক মনির এন্টারপ্রাইজ, কেএন ইন্টারন্যাশনাল, সাবরিন এন্টারপ্রাইজ, সুলতানা করপোরেশন, সাইফুল স্টোর, আবরার ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড, মুন্সীগঞ্জের সততা ট্রেডার্স সাতক্ষীরার ফারহা ইন্টারন্যাশনাল।

বন্দরে পণ্য চারদিনের বেশি ফেলে রাখা আদার আমদানিকারকদের মধ্যে রয়েছে ঢাকার মেসার্স তানজিল এন্টারপ্রাইজ, এনএস ইন্টারন্যাশনাল, ওয়াসিফ ট্রেডিং, মিতা এন্টারপ্রাইজ, মাসুম এন্টারপ্রাইজ, চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ ট্রেডিং, ইউসুফ করপোরেশন, সাউদার্ন কমার্শিয়াল করপোরেশন, আবরার ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড কুমিল্লার আনন্দ বাণিজ্যালয়।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এসএম আবুল কালাম আজাদ প্রসঙ্গে বণিক বার্তাকে বলেন, একদিনেই বন্দর থেকে কনটেইনার খালাস করে নেয়া যাচ্ছে, অথচ এখনো নিত্য ভোগ্যপণ্য ধরে রাখা হচ্ছে এক-দুই সপ্তাহ বা তার চেয়ে বেশি সময়। বন্দরে কনটেইনার জট নিরসন, সরকারি রাজস্বের স্বার্থ সংরক্ষণ এবং বাজারে পণ্য ঘাটতি নিরসনে এরই মধ্যে আমরা বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছি, যার সুফলও মিলছে।

বন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে নতুন করে চীন থেকে প্রায় হাজার ২০০ টন আদা হাজার ৬৬৯ টন রসুন আমদানির অনুমতি নিয়েছেন আমদানিকারক ব্যবসায়ীরা। এছাড়া পেঁয়াজ আমদানির জন্য অনুমতি নেয়া হয়েছে হাজার ৫৪২ টনের।

বিষয়ে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপপরিচালক মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বুলবুল বণিক বার্তাকে বলেন, বর্তমানে আদা, রসুন পেঁয়াজ তিনটি পণ্যের আমদানি অব্যাহত আছে। চট্টগ্রাম বন্দরে নিয়মিত এসব পণ্য আমদানির পর তা খালাসের জন্য ছাড়পত্র নিয়ে যাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন